রোগ

স্বাস্থ্য বিভাগকে আমরা বিকেন্দ্রীকরণ করছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে বিকেন্দ্রীকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহাখালীতে ক্যানসার হাসপাতাল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
জাহিদ মালেক। ফাইল ছবি

স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে স্বাস্থ্য বিভাগকে বিকেন্দ্রীকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশ্ব ক্যানসার দিবস উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহাখালীতে ক্যানসার হাসপাতাল অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগকে আমরা বিকেন্দ্রীকরণ করছি। প্রতিটি বিভাগে আমরা হাসপাতাল নিয়ে যাচ্ছি। জাপানের অর্থায়নে ৮টি বিভাগে ৮টি ইমেজিং সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। যেখানে এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই থাকবে। ৮টি বিভাগে ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ব্রাঞ্চ আমরা তৈরি করেছি। আরও হাসপাতাল আমরা করবো। যাতে স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। যেভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছে। ঢাকায় আসার দরকার নেই। ঢাকায় এলে ব্যয় হয়। তাদের অনেক কষ্ট হয়। ঢাকার হাসপাতালগুলোর ওপর চাপ অনেক বেশি পড়ে।

ডায়রিয়া-কলেরার মতো রোগ এখন আর নেই উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে সংক্রামক ব্যাধিটি অনেক বেশি ছিল। এমনও সময় ছিল, কলেরা-ডায়রিয়া হলে গ্রামকে গ্রাম উজার হয়ে যেত। ভালো চিকিৎসা ছিল না। আরও অন্যান্য রোগ ছিল। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নয়নের মধ্য দিয়ে এসব সংক্রামক ব্যাধিগুলো নিয়ন্ত্রণে আছে। বাংলাদেশে এখন কলেরা-ডায়রিয়া বা অন্যান্য সংক্রামক রোগ এখন আর নেই। অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসছে। তারপরও পুরোপুরি যায়নি এ পৃথিবী থেকে। করোনা এমন একটি ব্যাধি যে পুরো পৃথিবীকে সংক্রমিত করেছে। কোটি কোটি লোক আক্রান্ত হয়েছে, লক্ষ লক্ষ লোক মৃত্যুবরণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, অসংক্রামক রোগ সারা পৃথিবীতে, আমাদের দেশেও বাড়ছে। জীবনযাত্রা উন্নয়নের পাশাপাশি এসব রোগও বৃদ্ধি পাচ্ছে। যার মধ্যে ক্যানসার অন্যতম। বাংলাদেশে ৬৭ শতাংশ মানুষ ননকমিউনিকেবল ডিজিজে মারা যায়। আমাদের দেশে ২০ লাখ ক্যানসারে আক্রান্ত রোগী আছেন। প্রতি বছর আরও প্রায় এক-দেড় লাখ মানুষ যোগ হয়। মৃত্যুও হয় প্রায় লাখের কাছে। অর্থাৎ ১ লাখ লোক যদি মৃত্যুবরণ করে বছরে, তাহলে রোজ মারা যায় ২৭৩ জন। সে খবর আমাদের নেই। অথচ করোনার মৃত্যুটাকে আমরা সবাই দেখে থাকি। রোজ জানানো হচ্ছে বলে আমরা এটা জানতে পারি। ক্যানসারে কত লোক মারা যায় সেই হিসাবটা খুব একটা লোকে রাখে না।

সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেখতে হবে ক্যানসারের কারণটা কী। আমরা কীভাবে প্রতিরোধ করতে পারি। ঢাকার বাতাস অন্যান্য দেশের তুলনায় অত ভালো না। যার ফলে আমাদের লাঙ ক্যানসার হয়, গলায় ক্যানসার হয়। বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার এই দূষিত বাতাসের কারণে হয়। নদী-নালায় শিল্পের বর্জ্য ফেলা হয়। বুড়িগঙ্গার অবস্থা কী রকম। এ সমস্ত নদীর পানি যদি ব্যবহার করা হয়, তাহলে অবশ্যই বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার হতে পারে। আমরা খাবার যেটা খাই, সেখানেই যদি ভেজাল থাকে; রঙ, ফরমালিন মেশানো হয়। যার কারণে ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাকস্থলীর ক্যানসারও বাংলাদেশে অনেক হয়ে থাকে। আমাদের দেশে খাদ্য উৎপাদনের সময় কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। সেটার কারণেও অনেক লোক ক্যানসারে আক্রান্ত হয়।

আমাদের দেশে আয়ু বাড়ছে। এখন লোকে ৭০-৮০ বছর বাঁচে, সে কারণেও কিন্তু তারা ক্যানসারের ঝুঁকিতে পড়ে। প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে চিকিৎসা দেওয়া যায়। অনেক ক্যানসার আছে ভালো চিকিৎসা দিলে ভালো হয়ে যায়। সবার জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা দরকার। শুধু ঢাকার লোক বা ধন্যাঢ ব্যক্তি ক্যানসার চিকিৎসা ভালো পাবে, অন্যরা পাবে না—এই অবস্থা আমরা চলতে দিতে পারি না। তাই আমরা ক্যানসার চিকিৎসার ব্যাপ্তি বাড়ানোর চেষ্টা করেছি, বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিক্রমে ৮টি বিভাগে ৮টি ক্যানসার হাসপাতাল স্থাপনে কার্যক্রম আমরা শুরু করে দিয়েছি। এগুলো চালু হলে ঢাকায় আসতে হবে না। তাদের আর্থিক সাশ্রয় হবে। যার মাধ্যমে অনেকের জীবন বেঁচে যাবে। আমরা চাই আমাদের দেশের মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত না হোক, কম হোক।

Comments

The Daily Star  | English

A different Eid for residents of St Martin's Island

Number of animals sacrificed half than usual, price of essentials high

31m ago