সার্চ কমিটির সামনে এখন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব

পরবর্তী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য সার্চ কমিটির কাছে পাঠানো নাম প্রকাশে আমরা সাধুবাদ জানাই।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে ৩২২ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। যদিও নামগুলো কারা প্রস্তাব করেছেন তাদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। কয়েকটি প্রধান রাজনৈতিক দল নাম প্রস্তাব করা থেকে বিরত ছিল। তা সত্ত্বেও, নাম প্রকাশ না করার চর্চা থেকে বেরিয়ে আসার এই ঘটনাকে স্বীকার করে নিয়ে আমাদের বলতেই হবে, এটা হলো ইসি গঠনে যোগ্য ব্যক্তিদের বাছাই করতে একটি ফলপ্রসূ প্রচেষ্টার প্রথম ধাপ।

কমিটির কাজ এখন প্রস্তাবিত নামগুলো যাচাই করা। যোগ্য ব্যক্তিদের নাম এসেছে কি না তা মূল্যায়ন করা। এরমধ্য থেকে তারা রাষ্ট্রপতির কাছে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। সেই প্রস্তাবিত নাম থেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ৫ জনকে চূড়ান্ত করবেন। আমরা আশা করি, ১০ জনের পরিচয়সহ নাম প্রস্তাবের যৌক্তিকতা প্রকাশ করবে সার্চ কমিটি।

যাই হোক বাছাইকৃতদের মধ্যে যতটা সম্ভব সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি থাকা উচিত। মনোনয়ন প্রক্রিয়াকে সফল ও গ্রহণযোগ্য করতে এটা সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পদ্ধতি। কয়েকটি বিরোধী দলের ইসি গঠনের প্রক্রিয়া বর্জন করা উদ্বেগজনক। যদি ভবিষ্যৎ পরিস্থিতিও এমন হয় তাহলে আমাদের গত দুই সংসদ নির্বাচনের মতো বিতর্কিত ও ভয়াবহ অবস্থার পুনরাবৃত্তি দেখতে হবে।

এ অবস্থায় সার্চ কমিটিকে অতিমাত্রায় ক্ষমতাধর বিবেচনা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। নির্বাচন কমিশন কিংবা নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে সব রাজনৈতিক দল একমত হবে কি না, এর ওপরে কমিটির কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু, এ প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপগুলোতে যেন সবাই আস্থা পায়, সেজন্য কমিটিকে প্রথম উদ্যোগগুলোতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হয়। এই কমিটিকেই নিশ্চিত করতে হবে, ইসি গঠন প্রক্রিয়া যারা বর্জন করেছে তাদের উত্থাপন করা অভিযোগগুলো যথাযথভাবে সমাধান করা হয়েছে।

প্রকাশিত নামের তালিকা প্রাথমিকভাবে বিশ্লেষণে দেখা যায়, তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশই সাবেক আমলা। এ ছাড়াও, আছেন সাবেক বিচারক, সামরিক কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী এবং অন্যান্য পেশার প্রতিনিধি। তাদের যোগ্যতা মূল্যায়ন করার সময় সততা ও নিরপেক্ষতা যাচাই করতে কমিটি কী পদ্ধতি অবলম্বন করছে, তা আমাদের জানানো উচিত। চূড়ান্ত তালিকায় কেন রাখা হবে এবং কেন বাদ দেওয়া হবে, সেই শর্তগুলো স্পষ্ট করা উচিত এবং প্রকাশ করা উচিত। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক আনুগত্যের অতীত ইতিহাস আছে বা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে লাভবান হয়েছেন, কিংবা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ থাকলে বাদ পড়বেন এমন একটি শর্ত অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। সব রাজনৈতিক দলের সমর্থনের বিষয়েও কমিটির পরিষ্কার থাকা উচিত, যেন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীতদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করা যায়। সর্বোপরি, কমিটির উচিত স্বচ্ছ, আস্থাভাজন ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা।

ইসি সদস্য মনোনয়ন প্রক্রিয়া সফল করতে এবং গ্রহণযোগ্যতা সংকট এড়াতে সার্চ কমিটির জন্য এসব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Comments

The Daily Star  | English

Finance adviser sees no impact on tax collection from NBR dissolution

His remarks came a day after the interim government issued an ordinance abolishing the NBR and creating two separate divisions under the finance ministry

2h ago