র‍্যাব হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা অবশ্যই তদন্ত করতে হবে

র‍্যাবের হেফাজতে আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, হত্যা মামলায় চট্টগ্রামে ৬০ বছর বয়সী একজনকে গত ৯ মার্চ গ্রেপ্তার করেছিল র‍্যাব। তিনি একসময় রাঙ্গুনিয়ায় বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। এর কয়েক ঘণ্টা পরই বুকের ব্যথায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তিনি মারা যান।

ওই ব্যক্তি আগে থেকেই হৃদরোগ ও বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন বলে র‍্যাব দাবি করলেও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, তিনি র‍্যাবের হেফাজতে মারা গেছেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর এমন রহস্যজনকভাবে মারা যাওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। আমরা আশা করি যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে নজরুলের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করা হবে।

র‍্যাবের ভাষ্য, ২০১২ সালের একটি হত্যার ঘটনায় পলাতক আসামি ছিলেন নজরুল। তার বিরুদ্ধে আদালতের পরোয়ানা আছে। এসব অভিযোগে গ্রেপ্তার করা গেলেও কোনো ভাবেই কাউকে রিমান্ডের নামে নির্যাতন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নজরুলের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগের কথা বলা হচ্ছে তাতে কি তিনি বিচার পাওয়ার যোগ্যতা রাখেন না?

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন এখন যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সরকারের সমালোচনাকারী রাজনৈতিক নেতাদের ছাড়াও ছোটখাটো অভিযোগে সাধারণ মানুষকেও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। গত মাসে গরু চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার ওয়াজির মিয়া নামের একজন সুনামগঞ্জ থানায় নির্যাতনের পর মারা যান। তার সঙ্গে গ্রেপ্তার অন্য ২ জন নির্যাতনের যে বর্ণনা দ্য ডেইলি স্টারকে দিয়েছেন, তা এক কথায় ভয়াবহ। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের প্রথম ২ মাসেই কারা হেফাজতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই পরিসংখ্যান থেকে পরিস্থিতির ভয়াবহতা টের পাওয়া যায়।

হেফাজতে নির্যাতন নিবারণে আইন থাকার পরও এসব ঘটনা ঠেকানো যাচ্ছে না। সুনির্দিষ্টভাবে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ করতে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে পরিস্থিতির সামান্যও হেরফের হয়নি। নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি পরবর্তীতে বিচার পাওয়ার চেষ্টা করেন না। এর অন্যতম কারণ হলো, পুলিশই এই অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পায়। এ সংক্রান্ত যে সামান্য সংখ্যক মামলা হয়েছে, তাতে খুব অল্পক্ষেত্রেই অপরাধীরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। তাই সরকারের প্রতি আমাদের আহ্বান, কেন এই অপরাধ ঘটেই চলেছে, তা খুঁজে বের করতে হবে। যেকোনো মূল্যে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন চলতে দেওয়া যায় না।

Comments

The Daily Star  | English

India pushes 123 individuals into Bangladesh

Border Guard Bangladesh (BGB) yesterday detained at least 123 individuals, including Rohingyas and Bangla-speaking individuals, after India pushed them into Bangladesh through Kurigram and Khagrachhari border points.

5h ago