অনিরাপদ পোশাক কারখানা নিরাপদ হবে কবে?

প্রতীকী ছবি

অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ২০২০ সালের মে মাসে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে। এরপর থেকে দেশের ১ হাজারের বেশি তৈরি পোশাক কারখানার 'পুরোপুরি নিরাপদ' হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই। বিষয়টি নিয়ে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।

অ্যাকর্ড দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর কারখানাগুলোর অবকাঠামো নিরাপদ ও আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় আরএমজি সাসটেইনেবিলিটি কাউন্সিলের (আরএসসি) কাছে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে আরএসসির সম্ভবত কারখানা পরিদর্শন এবং অন্যান্য নিরাপত্তার বিষয়ে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য অর্জন নেই।

আরএসসির ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, অ্যাকর্ড ও আরএসসির তালিকার ৭০টির বেশি কারখানা এখনো অ্যাকর্ড প্রস্তাবিত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার অর্ধেকও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আরএসসি দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রাথমিকভাবে কেবল কিছু কারখানা পরিদর্শন করেছে। অথচ অ্যাকর্ড যখন চলে যায়, তখন তাদের তালিকার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ কারখানা সুপারিশকৃত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার ৯০ শতাংশেরও বেশি বাস্তবায়ন করেছিল।

প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাগুলো এমন যে ছোট কোনো সুপারিশ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না করলে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। চলতি বছরের জানুয়ারির শেষে জাহিন নিটওয়্যার লিমিটেডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এটি আরও স্পষ্ট হয়েছে।

আরএসসি জানিয়েছে, করোনা মহামারির কারণে তারা নিরাপত্তা বিষয়ক পরিদর্শন এবং অন্যান্য দায়িত্ব পালনে সমস্যায় পড়েছিল। প্রকৃতপক্ষে এগুলো এমন দায়িত্ব যা এড়িয়ে গেলে মানুষকে জীবন দিয়ে তার মূল্য দিতে হয়। অতীতের বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনাতে তারই প্রমাণ মিলেছে। রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর যে বিপর্যস্ত অবস্থা ছিল সেখান থেকে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে বিদেশি ব্র্যান্ডসহ অন্যান্য ক্রেতাদের কাছে অনেকখানি সুনাম ফিরিয়ে আনতে পেরেছে।

কিন্তু এখন যদি অ্যাকর্ডের অনুপস্থিতিতে দেশের পোশাক কারখানাগুলো নিরাপত্তার মান বজায় রাখতে না পারে, তবে সেই সুনামটুকুও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। দীর্ঘ মেয়াদে এটি দেশের অর্থনীতিতে ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে, যেহেতু তা অনেকাংশে তৈরি পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভর করে।

নিরাপদ মানে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে যেসব কারখানার অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না, সেগুলো থেকে পণ্য না কিনতে আরএসসি ব্র্যান্ডগুলোকে বাধ্য করতে পারে না। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী অ্যাকর্ডের এই ক্ষমতা ছিল। এই বাধ্যবাধকতাটুকু না থাকায় কারখানাগুলো নিরাপদ করার প্রক্রিয়া এত ধীর হয়ে গেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

যেসব কারখানা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে না, তাদের কোনো না কোনোভাবে জবাবদিহির আওতায় আনতেই হবে। তারা যদি জবাবদিহিতা না করেও ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে, তবে কেন তারা এর জন্য পয়সা খরচ করবে? আমরা বিশ্বাস করি, শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে আরএসসিকে একটি স্বাধীন ও পর্যাপ্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে দেওয়ার সময় এসে গেছে।

Comments

The Daily Star  | English

India pushes 123 individuals into Bangladesh

Border Guard Bangladesh (BGB) yesterday detained at least 123 individuals, including Rohingyas and Bangla-speaking individuals, after India pushed them into Bangladesh through Kurigram and Khagrachhari border points.

5h ago