বাসচালককে পিটিয়ে হত্যাকারী ‘ডিবি’ সদস্যরা কোথায়?

একদল মানুষ হাইওয়েতে একটি বাস আটকে চালককে পিটিয়ে হত্যা করে চলে গেল। অদ্ভুতভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কিছুই করতে পারছে না।
মিরপুরে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে ২ শ্রমিকের মৃত্যু
প্রতীকী ছবি। স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

একদল মানুষ হাইওয়েতে একটি বাস আটকে চালককে পিটিয়ে হত্যা করে চলে গেল। অদ্ভুতভাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কিছুই করতে পারছে না।

২০১৯ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রামের শিকলবাহা এলাকায় শ্যামলী পরিবহনের এক বাস চালককে এভাবেই হত্যা করা হয়। সাদা পোশাকে থাকা হত্যাকারীরা নিজেদের গোয়েন্দা পুলিশ দাবি করেন এবং যাত্রী ও বাসের হেলপারের সামনেই চালককে পিটিয়ে হত্যা করেন।

তারা বাসটিতে ইয়াবা আছে বলে দাবি করলেও পুরো গাড়ি তল্লাশি করে কিছুই পাননি।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তারা ইয়াবা খুঁজে না পাওয়ার রাগ চালকের ওপর দেখিয়েছেন, যেন বাসটিতে ইয়াবা না থাকা তার দোষ।

এটা খুব বেশি অবাক করার মতো বিষয় নয় যে, গত ৩ বছরেও এই মামলায় কোনো অগ্রগতি নেই। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের কখনো শনাক্ত করা হবে কি না এবং বিচারের মুখোমুখি করা যাবে কি না সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

হত্যাকারীদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে হাতকড়া, ওয়াকিটকি ও পিস্তল ছিল, তারা নিজেরাই নিজেদেরকে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।

সবচেয়ে অগ্রহণযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ২০১৯ সালের ২২ এপ্রিল এই ঘটনায় কারা জড়িত ছিলেন তাদের খুঁজে বের করতে এত দীর্ঘ সময় লাগা। ওই রাতে কোনো অপারেশনে পুলিশ বাইরে ছিল না—এই দাবির স্বপক্ষে নথি ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখাচ্ছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

নিঃসন্দেহে এসব নথির তথ্য জড়িতদের খুঁজে বের করতে সহায়ক হওয়ার কথা। যদিও, তার জন্য এই নথিগুলোকে হতে হবে কারচুপিহীন।

আমরা যদি সিএমপির বক্তব্যটি সত্য হিসেবে গ্রহণ করি, তাহলে তা বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জন্ম দেয়। প্রথমত, 'অপর একটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মাইক্রোবাস, একটি এসইউভি ও অন্য একটি গাড়ি শাহ আমানত সেতুর কর্ণফুলী প্রান্তের টোল প্লাজা অতিক্রম করে এবং ঘটনার পর শহরের দিকে ফিরে আসে'—এই তথ্য জানতে ৩ বছর লেগেছে, যেখানে সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে?

দ্বিতীয়ত, সেদিনের ঘটনায় যদি কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জড়িত না থাকে, তাহলে আমরা কি ধরে নেব যে কিছু মানুষ নির্দ্বিধায় ডিবির ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে? যদি তাই হয় তাহলে নিঃসন্দেহে এটা একটা ভয়ংকর বিষয়।

আমরা বিশ্বাস করি, বিষয়টিকে আড়াল ও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অপরাধীদের শনাক্ত করা পুলিশের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব আরও বেড়েছে কারণ অভিযোগের আঙুল তাদের দিকেই।

ঘটনা খুবই স্পষ্ট, ন্যায়বিচার ও পুলিশের ভাবমূর্তির জন্য প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। হত্যা একটি জঘন্য অপরাধ, একইভাবে হত্যায় প্ররোচনা দেওয়াও অপরাধ।

Comments

The Daily Star  | English

Three difficult choices to heal economy

Bangladesh yesterday made three major decisions to cushion the economy against critical risks such as stubborn inflation and depletion of foreign currency reserves.

2h ago