ট্রেন বন্ধ, জনভোগান্তি

কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন শত শত যাত্রী। ছবি: শেখ এনাম/স্টার

পেনশন থেকে মাইলেজ ভাতা বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন রানিং স্টাফরা (ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিকিট পরিদর্শক- টিটি)।

আজ বুধবার ভোর থেকে সারাদেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রেখেছেন চালকরা। ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সারাদেশে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ভোর থেকে শত শত মানুষ অপেক্ষা করছেন। হঠাৎ ট্রেন চলাচল বন্ধে বিপাকে সাধারণ মানুষ ও অফিসগামী যাত্রীরা।

টিকিটের টাকা ফেরত নিতেও যাত্রীরা আরেক দফা ভোগান্তিতে পড়েছেন। দ্য ডেইলি স্টারের কাছে সেসব কথা জানিয়েছেন তারা।

ছবি: শেখ এনাম/স্টার

মো. রাসেল একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। আজ একতা এক্সপ্রেসে তার দিনাজপুরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু যেতে পারেননি।

তিনি বলেন, 'পারিবারিক প্রয়োজনে বাড়িতে যেতে চেয়েছিলাম। ৩ দিনের ছুটিতে জমি সংক্রান্ত একটি বিষয়ে মীমাংসা করতে। এ কারণে আত্মীয়দের অনেকে বিদেশ থেকেও চলে এসেছেন। কিন্তু আমি ঢাকা থেকে যেতে পারিনি। এখন মনে হচ্ছে যে, ৩ মাস পিছিয়ে গেলাম।'

জরিনা বেগম ছুটিতে পাবনায় গ্রামের বাড়িতে যেতে চেয়েছিলেন। তিনি বাসে চড়তে পারেন না, বমি হয়। ভোর ৬টায় ধূমকেতু এক্সপ্রেসে তার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সাড়ে ১০টায় যখন তার সঙ্গে কথা হয়, তখনো তিনি টিকিটের টাকা ফেরত নেওয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

ছবি: শেখ এনাম/স্টার

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক গৃহবধূ জানান, গত রোববার ঢাকায় এসেছিলেন শাশুড়ির চিকিৎসা করাতে। ভোর সাড়ে ৪টায় খুলনায় ফিরে যাওয়ার জন্য কমলাপুরে এসেছেন। অসুস্থ শাশুড়িকে পাশে রেখেই তিনি লাইনে দাঁড়িয়েছেন।

একই লাইনে চিকিৎসার কাগজপত্র হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঈশ্বরদী থেকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য আসা এক রোগী।

নাম না জানানোর শর্তে তিনি বলেন, 'আমার হার্ট দুর্বল ও হাই-প্রেশারের সমস্যা আছে। আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছিলাম। ট্রেন ছিল ভোর সাড়ে ৬টায়। ৭টার সময় আমাকে জানাল যে, ট্রেন যাবে না। তখন থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।'

ছবি: শেখ এনাম/স্টার

চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে ঢাকায় কোচিং করছিলেন প্রিয়াঙ্কা। ছুটিতে গ্রামের বাড়ি বগুড়ার শান্তাহারে যেতে চেয়েছিলেন। ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে ট্রেন ছিল। সে কারণে যাত্রাবাড়ী থেকে ৫টায় কমলাপুরে এসেছেন। পরে ট্রেন না চলার খবর পেয়ে টিকিটের টাকা ফেরতের লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সে লাইনও বেশ লম্বা। অবশেষে সোয়া ১০টার দিকে তিনি টাকা ফেরত পেয়েছেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'স্টাফদের ধর্মঘটের বিষয়টি আমরা সেহেরির সময় জানতে পেরেছি। এর আগে এ সংক্রান্ত কোনো আল্টিমেটামও শুনিনি। যে কারণে আমরা আগেভাগে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।'

তিনি জানান, ঢাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৬৫টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায় এবং ৬৫টি ট্রেন ঢাকায় এসে যোগ দেয়। ধর্মঘটের কারণে এর সবগুলোর চলাচলই আপাতত বন্ধ আছে।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago