ঘটনাবহুল লড়াইয়ে ড্র করে সেমিফাইনালে ম্যান সিটি
বিরতির আগে খোলসে বন্দি অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ তেতে উঠল দ্বিতীয়ার্ধে। কিন্তু প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক এদারসনের কারণে কাঙ্ক্ষিত গোল পাওয়া হলো না তাদের। প্রথমার্ধে পোস্টের কারণে হতাশ হওয়া ইল্কাই গুন্দোয়ান শেষ মুহূর্তেও হারালেন সুবর্ণ সুযোগ। ফলে নিয়ন্ত্রিত পারফরম্যান্স দেখানো ম্যানচেস্টার সিটিও ব্যর্থ হলো নিশানা ভেদ করতে। তবে আগের লেগে জেতার সুবাদে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের টিকিট পেল তারা।
বুধবার রাতে ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোতে কোয়ার্টার ফাইনালের ফিরতি লেগে গোলশূন্য ড্র করেছে অ্যাতলেতিকো ও ম্যান সিটি। প্রথম লেগে ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে জিতেছিল পেপ গার্দিওলার দল। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ অগ্রগামিতায় আসরের শেষ চারে উঠেছে তারা।
ঘটনাবহুল লড়াইয়ের শেষদিকে ছড়ায় ব্যাপক উত্তেজনা। ১১ জন নিয়ে খেলা শেষ করতে পারেনি স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাতলেতিকো। ৯০তম মিনিটে ফিল ফোডেনকে ফাউল করায় ফেলিপে মাঠ ছাড়েন লাল কার্ড দেখে। একই ভাগ্য বরণ করতে পারতেন স্তেফান স্যাভিচও। তবে মাটিতে পড়ে কাতরাতে থাকা ফোডেনকে অযাচিতভাবে টেনে ওঠানোর চেষ্টা করেও লাল কার্ড পাওয়া থেকে বেঁচে যান তিনি। এসব কাণ্ডে অনেক সময় নষ্ট হওয়ায় অতিরিক্ত নয় মিনিট যোগ করেন রেফারি। সেটা গিয়ে ঠেকে ১২ মিনিটে। এর মাঝে মাঠে ঢুকে পড়ায় হলুদ কার্ড দেখেন স্বাগতিকদের কোচ দিয়েগো সিমিওনে।
ম্যাচের মাত্র ৩৯ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখা অ্যাতলেতিকোর গোলমুখে নেওয়া ১৪টি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল তিনটি। অন্যদিকে, ম্যান সিটি দশটি নিয়ে কেবল একটি রাখতে পারে লক্ষ্যে।
ম্যাচের অষ্টম মিনিটে গোলমুখে প্রথম আক্রমণ শানায় ইংলিশ পরাশক্তি ম্যান সিটি। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া গুন্দোয়ানের শট প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দুই মিনিট পর তার কর্নারে জন স্টোনসের জোরালো হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়।
ভাগ্যের বিড়ম্বনায় ৩০তম মিনিটে আক্ষেপে পুড়তে হয় সফরকারীদের। কাইল ওয়াকারের কাট-ব্যাক পেয়ে ডি-বক্সে বল ফেলেন ফোডেন। সেখান থেকে নেওয়া গুন্দোয়ানের নিচু শট বাধা পায় গোলপোস্টে। পাঁচ মিনিট পর আক্রমণে ওঠে অ্যাতলেতিকো। তবে জিওফ্রি কন্দোগবিয়ার দূরপাল্লার শট অনায়াসে লুফে নেন এদারসন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে কৌশল পাল্টে মরিয়া হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। ৫৫তম মিনিটে মার্কোস ইয়োরেন্তের ক্রসে জোয়াও ফেলিক্সের হেড ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে যায়। দুই মিনিট পর তার পাসে আঁতোয়ান গ্রিজমানের ভলি খুঁজে পায়নি নিশানা। ফলে দারুণ এক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় অ্যাতলেতিকোর।
চাপে পড়ে কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে সফরকারীরা। সেই সুযোগে আক্রমণের ধার আরও বাড়াতে থাকে সিমিওনের দল। ৬৯তম মিনিটে বদলি নামার কিছুক্ষণের মধ্যে হতাশ করেন রদ্রিগো দে পল। ইয়োরেন্তের কাছ থেকে বল পেলেও শট লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি। সাত মিনিট পর তার আরেকটি শট ব্যর্থ হয় অচলাবস্থা ভাঙতে।
৮৬তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল অ্যাতলেতিকো। আরেক বদলি মাথেউস কুনহার শট ছয় গজের বক্সের ভেতর থেকে অসাধারণ কায়দায় প্রতিহত করেন স্টোনস। এরপর ঘটে অখেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা প্রদর্শনের ওই ঘটনা। দুই দলের ফুটবলাররা জড়িয়ে পড়েন ধাক্কাধাক্কিতে। সেসময় স্যাভিচের পাশাপাশি হলুদ কার্ড দেখেন ম্যান সিটির নাথান অ্যাকে।
দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে রহিম স্টার্লিংয়ের কাছ থেকে ফাঁকায় বল পান গুন্দোয়ান। কিন্তু অ্যাতলেতিকোর গোলরক্ষক ইয়ান ওবলাক ফিরিয়ে দেন তার শট। শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে সিটিজেনদের রক্ষাকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন এদারসন। আনহেল কোরেয়ার শট তিনি ঝাঁপিয়ে ঠেকানোর পর বিপদমুক্ত করেন তার সতীর্থরা।
ফাইনালে ওঠার মঞ্চে ম্যান সিটির প্রতিপক্ষ স্পেনের আরেক ক্লাব ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল রিয়াল মাদ্রিদ। তারা শেষ ষোলোতে পিএসজি ও শেষ আটে চেলসিকে বিদায় করে সেমিতে জায়গা করে নিয়েছে।
Comments