বিরল ‘বাঁশফুল’ ফুটেছে লালমনিরহাটে

বাঁশ গাছে ফুল ফুটেছে, ফুলের নাম ‘বাঁশফুল’। অনেকেই হয়তো ‘বাঁশফুল’ নাম শুনেছেন। কিন্তু এ ফুল দেখেছেন খুব কম সংখ্যক মানুষই। কারণ ‘বাঁশফুল’ সাধারণত কয়েক যুগ পর ফুটে থাকে। বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র বলছে, কয়েক যুগ পর বাঁশগাছ যখন তার উৎপাদন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখন একবারের জন্য বাঁশগাছ ফুল দেয়।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নে ফোঁটা বিরল বাঁশফুল। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

বাঁশ গাছে ফুল ফুটেছে, ফুলের নাম 'বাঁশফুল'। অনেকেই হয়তো 'বাঁশফুল' নাম শুনেছেন। কিন্তু এ ফুল দেখেছেন খুব কম সংখ্যক মানুষই। কারণ 'বাঁশফুল' সাধারণত কয়েক যুগ পর ফুটে থাকে। বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র বলছে, কয়েক যুগ পর বাঁশগাছ যখন তার উৎপাদন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, তখন একবারের জন্য বাঁশগাছ ফুল দেয়।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ী ইউনিয়নের সাদেকনগর এলাকায় রংপুর-কুড়িগ্রাম সড়কের পাশে জাহাঙ্গীর আলমের লাগানো 'মাকলা' প্রজাতির একটি বাঁশগাছে সম্প্রতি 'বাঁশফুল' ফুটেছে।

২ বছর আগে তিনি তার লাগানো বাঁশঝাড় কেটে ফেলেন। কিন্তু সেখানে একটি বাঁশ ছিলো। সে বাঁশটির আগাও কেটে ফেলা হয়। আগা কেটে ফেলা বাঁশে এ বছর ফুল এসেছে। তবে আশপাশের আর কোনো বাঁশগাছে ফুল দেখা যায়নি।

জাহাঙ্গীর আলম (৫০) দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার দাদার কাছে বাঁশফুল ফোটার গল্প শুনেছিলাম। নিজের চোখে বিরল এই বাঁশফুল এই প্রথম দেখছি। শুনেছি বাঁশগাছে ফুল আসলে নাকি দুর্ভিক্ষ হয়।'

সাদেকনগর গ্রামে নিজের বাঁশঝাড়ে জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: দিলীপ রায়/স্টার

বাঁশগাছে 'বাঁশফুল' ফোটার গল্প এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা অনেকে এ ফুল দেখতে ভিড় করছেন সেখানে।

স্থানীয় কয়েকজন বৃদ্ধ জানান, তারা জীবনে দুয়েকবার বাঁশফুল দেখেছেন।

সাদেকনগর গ্রামের ৭০ বছর বয়সী কৃষক আজাহার মিয়া ডেইলি স্টারকে জানান, তার বয়স যখন ১৫-১৬ বছর ছিলো, তখন তিনি একবার বাঁশগাছে ফুল দেখেছিলেন।

'বাঁশগাছে ফুল ফোটার এ বিরল দৃশ্য বহু বছর পর দেখা যায়। ফুল ফোটার কিছুদিন পর বাঁশগুলো মারা যায়,' তিনি বলেন। 

বাঁশফুল নিয়ে গ্রামে কুসংস্কার প্রচলিত আছে। অনেকে মনে করেন, যে বছর বাঁশগাছে ফুল দেখা যায়, সে বছর দুর্ভিক্ষ হয়।

যোগাযোগ করা হলে ডোমার আঞ্চলিক বাঁশ গবেষণা ও ট্রেনিং সেন্টারের (আরবিআরটিসি) বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বাঁশগাছে ফুল ফোটা একটি বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা।

তিনি বলেন, 'বেশ কয়েকযুগ পর কোনো প্রজাতির বাঁশ উৎপাদন সক্ষমতা হারালে তাতে ফুল ফোটে। একই প্রজাতির বাঁশ যেখানে থাক তাতে ফুল আসবে। ফুল আসার কিছুদিন পর বাঁশগুলো মরে যাবে।'

তবে বাঁশগাছে ফুল ফোঁটার সঙ্গে দুর্ভিক্ষ হওয়া ও ইঁদুরের উৎপাত বেড়ে যাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশে ৩৩ প্রজাতির বাঁশ আছে। তবে সারা পৃথিবীতে আছে ৭৫০ প্রজাতির বাঁশ। 

কিছু প্রজাতির বাঁশে ৩৫-৪০ বছর, কিছু প্রজাতির গাছে ৬০-৭০ এবং কিছু প্রজাতির বাঁশ গাছে ১২০-১৩০ বছর পরপর ফুল দেখা যায় বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English
quota reform movement,

Govt publishes preliminary list of those killed in July-August protests

The interim government today published a preliminary list of 726 people who died during the student-led mass protests in July and August.

1h ago