রাজনীতি

যে আইনগুলো হচ্ছে তা গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট: ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সচেতন-সুপরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সবার আগে তারা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি মনে করেছে।
fakhrul.jpg

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সচেতন-সুপরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সবার আগে তারা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি মনে করেছে।

আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত 'গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ' শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যের ফখরুল বলেন, আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি পালন করছি, তখন অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, আমাদের গণমাধ্যমকে পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এর নিয়ন্ত্রণ এমন এক পর্যায়ে গেছে, যারা স্বাধীনভাবে লিখতে চান, যারা স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে চান তারা সেটা করতেই পারছেন না, বরং তাদের ওপর বিভিন্ন রকম নির্যাতন এবং তাদের স্বাভাবিক পেশাগত যে দায়িত্ব সেই দায়িত্ব পালনে তারা বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন।

তিনি বলেন, এ বিষয়টা ক্রমান্বয়ে ঘটেছে বাংলাদেশে। এই নয় যে শুধুমাত্র কিছু দিন থেকে হচ্ছে। আমরা লক্ষ করেছি, বিশেষ করে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সচেতন-সুপরিকল্পিতভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে সবার আগে তারা যে মাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি মনে করেছে, সেটা হলো গণমাধ্যম। আমি জানি, গণমাধ্যমের যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, এখন সোশ্যাল মিডিয়াও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। পর্যবেক্ষণ এমন জায়গায় পৌঁছেছে, কোন জায়গায় কোন সাংবাদিক গেলেন, কার সঙ্গে দেখা করলেন, কোন সম্পাদকের সঙ্গে কারা দেখা করলেন সেটা পর্যন্ত তারা পর্যবেক্ষণে নিয়ে নিচ্ছে। প্রয়োজন অনুসারে সেটা তারা প্রকাশ করছে। যে আইনগুলো তৈরি করা হচ্ছে, এই আইনগুলো যথেষ্ট এ দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। 

ফখরুল বলেন, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল গঠন করার পরে সব সংবাদ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালে দায়িত্বে আসার পরে তার নেতৃত্বে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এখনো আছি। অনেক বাধা-বিপত্তি, নির্যাতনের মধ্যে আমরা কথা বলার চেষ্টা করছি। বিএনপি সব সময় চেষ্টা করেছে গণমাধ্যমের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করতে। বিএনপি বিশ্বাস করে, স্বাধীন গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া সম্ভব না। সেই বিশ্বাস থেকেই বিএনপি কাজ করে এসেছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম সরকারের প্রথম দিকেই বিবিসি-সিএনএনসহ বিদেশি সংবাদমাধ্যমগুলোর সংবাদ দেশে প্রচারের ব্যবস্থা করেছিলেন। পরবর্তীতে ইলেকট্রনিক চ্যানেল, নতুন পত্রিকা, এগুলো তখনই শুরু হয়েছিল। আমি শুধু এটুকু বলতে চাই, আমরা দল হিসেবে বিশ্বাস করি একটা মুক্ত গণমাধ্যম ছাড়া একটা রাষ্ট্র কখনো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে না।

এ সময় গণমাধ্যম নিয়ে বিএনপির পরিকল্পনা তুলে ধরেন ফখরুল। তিনি আরও বলেন, আমরা গত প্রায় ১৫ বছর পুরোপুরিভাবে একটি স্বৈরশাসকের অধীনে আছি। স্বৈরশাসক বললে ভুল বলা হবে, ফ্যাসিস্টদের অধীনে আছি।

প্রশ্নটা শুধু সাংবাদিক নয়, রাজনীতিক নয় আজ পুরো জাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্র এবং জাতিকে উদ্ধার করতে হলে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য যদি আমরা গড়ে তুলতে না পারি তাহলে এখান থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো পথ নেই। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। কারণ বাংলাদেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয়নি। টানেলের পেছনে আলো দেখছি বলেই যে আমরা উৎসাহিত হচ্ছি, উৎফুল্ল হচ্ছি তা নয়। আমরা সব সময় গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছি, কাজ করে যাচ্ছি। সরকারে থেকে করেছি, এখন সরকারে নেই—ফ্যাসিবাদকে মোকাবিলা করছি। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের বিজয় অবশ্যই অর্জিত হবে বলে মন্তব্য করেন ফখরুল।

Comments

The Daily Star  | English

Will there be any respite from inflation?

To many, especially salaried and fixed-income individuals, this means they will have no option but to find ways to cut expenditures to bear increased electricity bills.

6h ago