‘আমি চাই পুকুর বোজালে আকাশ ভাসবে চোখের জলে’

৩ দশক আগে প্রকাশিত 'গানওলা' নামের একটি অ্যালবামে শিল্পী কবীর সুমন গেয়েছিলেন, 'আমি চাই পুকুর বোজালে আকাশ ভাসবে চোখের জলে/আমি চাই সব্বাই যেন দিনবদলের পদ্য বলে।'
ধুলা-দূষণে ধূসর এই ঢাকা মহানগর থেকে সবুজের স্নিগ্ধতা ঘুচে গিয়েছে আগেই। ২০১০ সালে যখন ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) করা হয়েছিল, তখন ঢাকার চারপাশের জলাভূমিগুলোর সুরক্ষার ব্যাপারে অনেকে আশান্বিত হয়েছিলেন।
শুধু পরিবেশ নয়, দেড় কোটি জন-অধ্যুষিত এই মহানগরকে বাঁচানোর জন্যও চারপাশের জলাভূমি ও জলাশয় থাকা জরুরি ছিল। কিন্তু গত ১ দশকেও ভূমিদস্যুদের দৌরাত্ম্য যে তিল পরিমাণে কমেনি, তার প্রমাণ উপরের ছবিটি।
আইনে জলাশয়ের শ্রেণি পরিবর্তন দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও ঢাকার খিলগাঁওয়ের নাগদারপাড় এলাকায় এই বিরাটাকার জলাভূমিতে অবিরাম বালু ভরাট চলছে। ভরাট করা জায়গায় বিভিন্ন আবাসন কোম্পানি তাদের সাইনবোর্ড বসানোর পাশাপাশি গড়ে তুলছে নানা স্থাপনা। দিনের পর দিন ধরে জলাধার ভরাটের এমন প্রবণতা এই শহরের জলাবদ্ধতার সমস্যার এক প্রকার স্থায়ী রূপ দিয়ে ফেলেছে।
জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, কেউ আইনের বিধান লঙ্ঘন করলে অনধিক ৫ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা যাবে। শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি আইন অমান্যকারীর নিজ খরচে সেটা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার বিধানও রয়েছে।
অথচ ২০১৯ সালের একটি গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) আওতাধীন ও ঢাকা মহানগর উন্নয়ন প্রকল্প (ডিএমডিপি) এলাকা থেকে প্রতিবছর আড়াই হাজার একর জলাধার হারিয়ে যাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার নাগদারপাড় এলাকা থেকে ছবিটি তুলেছেন দ্য ডেইলি স্টারের আলোকচিত্রী আনিসুর রহমান।
Comments