বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্তে যানজট বেড়ে ২৩ কিমি

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পৌলী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। ছবিটি আজ সকাল ১১টায় তোলা। ছবি: স্টার

টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু সড়কে ২৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম সূত্র দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট ছিল।

সকাল সাড়ে ১১টায় টাঙ্গাইলের ট্রাফিক পরিদর্শক দেলোয়ার হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঢাকা থেকে ফেরত আসা গরুবাহী আনফিট ট্রাকগুলো পথে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই যানজট সৃষ্টি হয়েছে।'

'আশা করছি, ২ ঘণ্টার মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হবে,' যোগ করেন তিনি।

সেতুর ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম সূত্র জানিয়েছে, সেতুর দুই প্রান্তে রাত থেকেই যানবাহনের প্রচন্ড চাপ থাকলেও সেতুর ওপর কোনো যানজট নেই। সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত সড়কের উত্তরমুখী লেনে গাড়ির দীর্ঘ সাড়ি রয়েছে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে মাঝেমাঝে টোল আদায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

ঈদুল আজহা‌কে কেন্দ্র ক‌রে টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়‌কে পারাপারের প‌রিবহ‌নের সংখ‌্যা বেড়েছে। গতকাল রাত থেকেই মহাসড়‌কের উত্তরমুখী লেনে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে টাঙ্গাইলের রাবনা বাইপাস পর্যন্ত সড়‌কে যানজ‌ট রয়েছে। এতে ভোগা‌ন্তিতে প‌ড়ে‌ছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঢাকামুখী যানবাহনগুলোকে ভূঞাপুর দিয়ে বাইপাস করে দেওয়া হলেও সরু রাস্তা ও গোবিন্দাসী এলাকায় গরুর বড় হাট থাকায় এই রাস্তায় থেমে থেমে চলছে যানবাহন। তবে গরুবোঝাই ট্রাকগুলো পূর্ব প্রান্তের সংযোগ সড়ক ব্যবহার করতে পারছে।

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার পৌলী এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। ছবিটি আজ সকাল ১১টায় তোলা। ছবি: স্টার

এলেঙ্গা হাইও‌য়ে পু‌লিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আতাউর রহমান ডেইলি স্টারকে জা‌নান, ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষ এবং মহাসড়‌কে ফিটনেস-বিহীন বেশ কয়েকটি যানবাহন বিকল হওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিরসনে পুলিশ এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১৩ কি‌লো‌মিটার দুই লেনের সড়ক একমুখী করেছে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন এলেঙ্গা থেকে সেতুর দিকে যাচ্ছে। অপরদিকে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকামুখী যানবাহন সেতু পার হয়ে ভূঞাপুর সড়ক হয়ে এলেঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাচ্ছে। তবে উত্তরবঙ্গ থেকে গরুবাহী ট্রাক একমুখী সড়কের আওতার বাইরে রয়েছে।

ঢাকা থেকে পাবনাগামী একটি বাসের চালক বাবলু মিয়া জানান, সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তার গাড়ি এলেঙ্গার আগে পরে যানজটে আটকা ছিল। প্রচণ্ড গরমে যাত্রীরা তীব্র ভোগান্তির শিকার হয়েছেন।

একটি গাড়ির যাত্রী ইফতেখার মাহমুদ বলেন, 'প্রতি ঈদেই এই রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। কর্তৃপক্ষ আমাদের অশ্বাস দিয়েছিলেন যে এবার কোনো যানজট হবে না। কিন্তু, এই ভোগান্তি থেকে কোনো মুক্তি নেই। আগে জানলে বাড়িই যেতাম না।'

দিনাজপুর থেকে আসা গরুবাহী ট্রাকচালক বাবু মিয়া বলেন, 'সিরাজগঞ্জের নলকার আগে থেকে রাত ৮টায় যানজটে পড়েছি। সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার জোকার চর পর্যন্ত এসেছি। গরমে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।'

গরু ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেন, 'সিরাজগঞ্জ থেকে টাঙ্গাইল পর্যন্ত প্রচুর যানজট। গরুগুলো গাড়িতে শুয়ে পড়েছে। সঠিক সময় ঢাকা পৌঁছাতে না পারলে ক্ষতি হয়ে যাবে।'

বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফিটনেস-বিহীন বিকল হওয়া কয়েকটি যানবাহন রেকার করে সরাতে সময় লেগেছে। এ ছাড়াও, অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ রয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

US and China reach deal to slash tariffs

The two sides had reached a deal for a 90-day pause on measures and that reciprocal tariffs would come down by 115%.

17m ago