বাফুফের বিনিয়োগ আর কঠোর পরিশ্রমে এই অর্জন: সাবিনা

Sabina Khatun
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

বাংলাদেশের মেয়েদের দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে সেরা হওয়ার সাফল্য হুট করে আসেনি। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, লম্বা সময় ধরে চালানো ক্যাম্প। আর মেয়েদের একাগ্রতা ও নিবেদনের ফল মিলেছে খেলার মাঠে। এমনটাই বললেন শিরোপা জয়ী অধিনায়ক সাবিনা খাতুন ও কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটন। দুজনেই কৃতজ্ঞতা জানালেন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনকে।

নারীদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। বুধবার ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরার পর ছাদখোলা বাসে করে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় তারা কাড়েন আলো। বিপুল মানুষের স্রোত পেরিয়ে বিমানবন্দর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টায় পৌঁছান বাফুফে ভবনে।

বিপুল গণমাধ্যম, উৎসুক জনতার ভিড় ঠেলে অগোছালোভাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ক্লান্তি ভুলে সাবিনা প্রথমে কৃতজ্ঞতা জানান সংগঠকদের,   'আমি প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাই বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে। তাদের সমর্থন ছিল। অবশ্যই আমি কৃতজ্ঞতা জানাই সভাপতি স্যার ও কিরন আপা উইমেন উইংসের চেয়ারম্যানকে। আমাদের সবার প্রিয় গোলাম রাব্বানি স্যার ও টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলিকে।'

বাফুফে ভবনেই গত পাঁচ বছর ধরে ছিলেন নারী ফুটবলাররা। সেখানেই চলেছে টানা ক্যাম্প। ফিটনেস থেকে শুরু করে স্কিল সবকিছুই দেখভাল করা হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থাপনায়। সাবিনা এই ক্যাম্পের গুরুত্ব দেখছেন আলাদা করে,  'আসলে আপনারা দেখেছেন আমরা চার-পাঁচ বছর একটা জায়গাতে আছি, ক্যাম্পে আছি। প্রেসিডেন্ট স্যার একটু আগেই বলছিলেন সানজিদা বলছিল যে, "স্যার (সালাউদ্দিন) ফুটবল খেলা অনেক কষ্ট।" স্যার বলেছিলেন যে কষ্টই করে যাও একসময় গিয়ে এটার ফল পাবে। আমার মনে হয় পরিশ্রম, সবার সাপোর্ট এবং মেয়েদের জন্য যে বিনিয়োগ করেছেন সেটা সফলতায় গিয়েছে এটা আমাদের বড় সাফল্য। আমাদের লক্ষ্য থাকবে মানুষকে হাসিখুশি রাখার।'

'এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না বাংলাদেশের মানুষ ফুটবলের প্রতি কতটা আসক্ত, কতটা ফুটবল ভালোবাসে। আপনারা সব সময় পাশে ছিলেন। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।'

Golam Rabbani Choton
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন কোচ গোলাম রাব্বানি ছোটন। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

গোলাম রাব্বানী ছোটন

সাবিনার কথা বলার পর একই চেয়ারে এসে কোচ ছোটন তুলে ধরেন তাদের শুরু সময় থেকে পথচলার ধাপগুলোর কথা,  'আমাদের পরিবর্তনটা শুরু ২০১২ থেকে। তখন থেকে আমরা মেয়েদের ফুটবল নিয়ে গুরুত্ব দেই। স্যার (কাজি সালাউদ্দিন) আসার পর মহিলা কমিটি তৈরি হয়। আজকে যারা সানজিদা, আজকে যারা কৃষ্ণা, মাসুরা তারা কিন্তু পরিকল্পনায় উঠে এসেছে।'

'সেখান থেকেই অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাই খেলি। ফাইনালে আমরা জর্ডানের সঙ্গেও জিতি। ২০১৬ সালে আমরা কোয়ালিফাই করলাম। সেখানে আমাদের গ্রুপে পড়ল নর্থ কোরিয়া, সাউথ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়া। স্যার আমাদের বললেন তোমাদের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা ছাড়া বিকল্প নাই। ২০১৬ সালে আমাদের ক্যাম্প শুরু হয়। এই পথচলা। আমাদের ক্যাম্পে এখন ৭০ জন মেয়ে আছে।'

'২০১৬ থেকে শুরু হওয়ার পর অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ হয় ঢাকায়। আমরা চ্যাম্পিয়ন হই। ২০১৮ সালে ভুটানে অনূর্ধ্ব-১৮ প্রথম সাফ হয় সেখানেও আমরা চ্যাম্পিয়ন হই। ২০২১ সালে ঢাকায় প্রথম অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ হয় সেটাও আমরা চ্যাম্পিয়ন হই।'

'এখানে বিষয় ছিল বয়সভিত্তিক ভাল করছি, সিনিয়র লেভেলে ভাল করছি না কেন? আমরা খেয়াল করলাম আমাদের মেয়েরা যখন একটু বড় হবে, উনিশ-বিশ বয়স হবে তখন ভাল কিছু করব। এই বিশ্বাস নিয়ে এবার গিয়েছিলাম।'

Comments

The Daily Star  | English

No price too high for mass deportations

US President-elect Donald Trump has doubled down on his campaign promise of the mass deportation of illegal immigrants, saying the cost of doing so will not be a deterrent.

7h ago