ব্যালন ডি'অর জিতলেন রিয়াল মাদ্রিদের বেনজেমা
মঞ্চটা সাজানো ছিল করিম বেনজেমার জন্যই। গত মৌসুমে যে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স করেছিলেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড, তাতে তার ধারেকাছে ছিলেন না কেউই। তাছাড়া, কদিন আগে ফাঁস হওয়া তালিকাতেও জানা গিয়েছিল, এবারের ব্যালন ডি'অর উঠতে যাচ্ছে তার হাতে। প্রত্যাশিতভাবে হয়েছেও সেটাই। ফুটবলে ব্যক্তিগত সাফল্যের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারটি জিতে নিলেন এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা।
প্যারিসের শ্যাতলে থিয়েটারে সোমবার রাতে জমকালো এক অনুষ্ঠানে ২০২২ সালের ব্যালন ডি'অর জয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর দেওয়া এই সম্মাননা প্রথমবারের মতো জিতলেন ৩৪ বছর বয়সী বেনজেমা। গত মৌসুমে রিয়ালের আক্রমণভাগের মূল অস্ত্র ছিলেন তিনি। স্প্যানিশ ক্লাবটিকে এনে দেন উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগার শিরোপা। তার অর্জনে শেষ হলো ফরাসিদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পালা। সবশেষ ১৯৯৮ সালে জিনেদিন জিদান দেশটির হয়ে উঁচিয়ে ধরেছিলেন ব্যালন ডি'অর। তিনিই বেনজেমার হাতে ট্রফিটি তুলে দেন।
গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলে মোট ৪৬ ম্যাচ খেলে বেনজেমা গোল করেন ৪৪টি। যার মধ্যে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগেই জালের ঠিকানা খুঁজে নেন ১৫ বার। নকআউট পর্বে তার ছিল অসাধারণ দুটি হ্যাটট্রিকও। শেষ ষোলোয় পিএসজির বিপক্ষে ১৭ মিনিটের মধ্যে করা হ্যাটট্রিকটিকে বলা চলে রিয়ালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে তার আরেকটি হ্যাটট্রিকে বিধ্বস্ত হয় চেলসি। সেমিফাইনালেও ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে দ্যুতি ছড়ান বেনজেমা। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রথম লেগে দুটি ও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ফিরতি লেগে একটি গোল করেন।
২০২১ সালে এই মঞ্চেই রেকর্ড সপ্তম ব্যালন ডি'অর জিতেছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড লিওনেল মেসি। বার্সেলোনার সঙ্গে দীর্ঘ ২১ বছরের সম্পর্ক ছেদ করে গত মৌসুমে পিএসজিতে যোগ দিয়ে চেনা ছন্দ দেখাতে ব্যর্থ হন তিনি। ফলে এবার পুরস্কারটি জয়ের লড়াইয়ে মনোনয়ন পাওয়া ৩০ জনের সংক্ষিপ্ত তালিকাতে ছিলেন না মেসি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার ব্যালন ডি'অর জেতা পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো পান ২০তম স্থান।
১৯৫৬ সালে ব্যালন ডি'অর পুরস্কার চালু হওয়ার পর শুরুতে দেওয়া হতো কেবল ইউরোপের সেরা ফুটবলারকে। ১৯৯৫ সাল থেকে এই মহাদেশটিতে খেলা বিশ্বের যে কোনো জায়গার খেলোয়াড় জন্য পুরস্কারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবে ২০০৭ সাল থেকে ইউরোপের গণ্ডি ছাড়িয়ে পুরো বিশ্বের ফুটবলাররা এই সম্মাননার জন্য উপযুক্ত বিবেচিত হয়ে থাকেন।
গত বছর পর্যন্ত 'ক্যালেন্ডার ইয়ার' অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সেরা পারফরম্যান্স উপহার দেওয়া খেলোয়াড়কে দেওয়া হতো ব্যালন ডি'অর। তাতে ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুটি মৌসুমের অর্ধেক পড়ত। তবে এই নিয়মে পরিবর্তন আনা হয় গত মার্চে। এবার থেকে অন্যান্য পুরস্কারগুলোর মতো মৌসুম অনুসারে অর্থাৎ অগাস্ট থেকে জুলাই পর্যন্ত পারফরম্যান্সকে বিবেচনা করা হচ্ছে।
Comments