ঘুরে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য রান তাড়ায় স্কটিশদের হারাল আয়ারল্যান্ড
ওপেনার মাইকেল জোনসের বিধ্বংসী ইনিংসে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেল স্কটল্যান্ড। রান তাড়ায় নেমে ব্র্যাড হোয়েল, সাফিয়ান শরিফ, মার্ক ওয়াটদের তোপে শুরুতে হাবুডুবু খেতে থাকল আয়ারল্যান্ড। এরপর জর্জ ডকরেলকে সঙ্গে নিয়ে পাল্টা জবাব দিয়ে বিস্ফোরক ব্যাটিং করলেন কার্টিস ক্যাম্পার। তাতে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিল আইরিশরা।
বুধবার হোবার্টে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে 'বি' গ্রুপের ম্যাচটি হয়েছে জমজমাট। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, লক্ষ্যের ধারকাছেও পৌঁছাতে পারবে না আয়ারল্যান্ড। রোমাঞ্চকর লক্ষ্য তাড়ায় তারা শেষ পর্যন্ত ৬ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে হারিয়েছে স্কটল্যান্ডকে। এবারের আসরে এটি তাদের প্রথম জয়।
আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৭৬ রানের শক্ত পুঁজি পায় স্কটিশরা। জবাবে আইরিশরা ৪ উইকেটে ১৮০ রান তুলে জয় নিশ্চিত করে।
প্রথমে বল হাতে দারুণ অবদান রাখেন অলরাউন্ডার ক্যাম্পার। ডানহাতি মিডিয়াম পেসে ২ ওভারে মাত্র ৯ রানে পান ২ উইকেট। এরপর ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ২২৫ স্ট্রাইক রেটে ৩২ বলে ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন। প্রতিপক্ষের বোলারদের গুঁড়িয়ে ক্যাম্পার মারেন ৭ চার ও ২ ছক্কা। ডকরেল খেলেন ২৭ বলে ৩৯ রানের ভীষণ কার্যকর ইনিংস। পঞ্চম উইকেটে ৫৭ বলে ১১৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন তারা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে আগের ম্যাচের হিরো জর্জ মানসিকে শুরুতেই হারিয়ে ফেলে স্কটল্যান্ড। কিন্তু এরপরই ম্যাথু ক্রসকে নিয়ে দলকে উড়ন্ত শুরু পাইয়ে দেন জোনস।
৫৯ রানের জুটির পর ক্যাম্পারের বলে বিদায় নেন ২১ বলে ২৮ রান করা ক্রস। তৃতীয় উইকেটে জমে যায় আরেক জুটি। অধিনায়ক রিচি বেরিংটন দেখান ইতিবাচক অ্যাপ্রোচ। জোনসও ব্যাট চালাতে থাকেন সাবলীলভাবে।
মাঝের ওভারে এই দুজন নিয়ে নেন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। ৪৮ বলে জুটিতে ৭৭ রান আনেন তারা। ৩৮ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন জোনস। বেরিংটনও এগুচ্ছিলেন সেদিকে। কিন্তু তিনিও থামেন ক্যাম্পারের বলে। ২৭ বলে ৩৭ করা স্কটিশ অধিনায়ক ধরা দেন বাউন্ডারি লাইনে।
শুরুর মতো ইনিংসের শেষটাতেও দাপট জোন্সের। ১৯তম ওভারে আউট হওয়া জোনস করে যান ৮৬। ৫৫ বলের ইনিংসে এই ডানহাটি মারেন ৬ চার আর ৪ ছক্কা।
তার সঙ্গে মিলে রান বাড়ানোর কাজ সারেন মাইকেল লিস্ক। ১৩ বলে ২ চারে তিনি অপরাজিত থাকেন ১৭ রানে। চতুর্থ উইকেটেও যোগ হয় ১৭ বলে আরও ৩৩ রান। শেষ ওভারে পর্যাপ্ত রান না এলেও ঠিকই ভালো পুঁজি পেয়ে যায় স্কটিশরা।
জবাব দিতে নেমে ৬১ রানে ৪ উইকেট খোয়ায় আইরিশরা। অ্যান্ডি ব্যালবার্নিকে ডানা মেলতে দেননি হোয়েল। আরেক ওপেনার পল স্টার্লিং হন শরিফের শিকার। উইকেটের পেছনে ক্রসের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। ব্যালবার্নির মতো লোরকান টাকার ও হ্যারি টেক্টর ফেরেন থিতু হয়ে।
১১ ওভার শেষে আইরিশদের সংগ্রহ ছিল ৭১। জয়ের জন্য ৫৪ বলে চাহিদা ছিল ১০৬ রান। অর্থাৎ প্রতি বলে প্রায় ২ রান করে লাগত। সেই অবস্থায় তাদের পক্ষে বাজি ধরার লোক খুঁজে পাওয়া হয়তো দায় হতো। তবে এরপর ক্যাম্পার ও ডকরেলের কল্যাণে কঠিন সমীকরণ যেন অনায়াসেই মিলিয়ে ফেলে আয়ারল্যান্ড!
১২ থেকে ১৯, এই ৮ ওভারের প্রতিটিতে অন্তত ১১ রান করে আসে। ম্যাচসেরা ক্যাম্পার ফিফটি স্পর্শ করেন ২৫ বলে। এরপর ব্যাট আরও চওড়া হয় তার। স্ট্রাইক রেট বাড়তে থাকে লাফিয়ে লাফিয়ে। অন্যপ্রান্তে ডকরেল মারেন ৪ চার ও ১ ছক্কা।
Comments