স্টয়নিসের তাণ্ডবে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

ছবি: টুইটার

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বড় হারের পর বেশ ব্যাকফুটে ছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই স্বরূপে ফিরল ক্যাঙ্গারুরা। মার্কাস স্টয়নিসের ঝড়ে তারা উড়িয়ে দিল শ্রীলঙ্কাকে। জমতে থাকা চাপ বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে চাপ এক নিমিষে দূর করে দেন এই অলরাউন্ডার।

মঙ্গলবার পার্থে সুপার টুয়েলভের এক নম্বর গ্রুপের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। লঙ্কানদের দেওয়া ১৫৮ রানের লক্ষ্যে ২১ বল হাতে রেখেই পৌঁছে যায় অ্যারন ফিঞ্চের দল। মাত্র ১৮ বলে অপরাজিত ৫৯ রান করে জয়ে নেতৃত্ব দেন স্টয়নিস।

জবাব দিতে নেমে শুরুটা মনমতো হয়নি অস্ট্রেলিয়ার, দলীয় ২৬ রানে শানাকার হাতে ক্যাচ দিয়ে মাহেশ থিকসানার শিকারে পরিণত হন ডেভিড ওয়ার্নার। ১০ বল থেকে ১১ রান করে ফিরে যান বিধ্বংসী অজি ওপেনার।

শুরু থেকেই ধীরগতিতে উইলো চালিয়ে পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ছয় ওভারে কেবল ৩৩ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা। দ্বিতীয় উইকেটে মিচেল মার্শ ও ফিঞ্চ মিলে ২৬ বলে গড়েন ৩৪ রানের জুটি।

ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার অষ্টম ওভারেই খোলস ভেঙে বেরিয়ে আসে অস্ট্রেলিয়া, মার্শের কল্যাণে সেই ওভারে আসে ১৫ রান। সঙ্গীকে দেখে আগ্রাসী হয়ে ওঠেন ফিঞ্চও, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার পরের ওভারের প্রথম বলেই হাঁকান ছক্কা।

তবে মোমেন্টাম ধরে রাখতে পারেনি ক্যাঙ্গারুরা। সেই ওভারেই ১৮ রান করা মার্শকে ফেরান ধনাঞ্জয়া। তার বিদায়ে উইকেটে আসেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। অনেক দিন বাদে দেখা মিলল এই আক্রমণাত্মক ব্যাটারের বিধ্বংসী রূপের। নিজের খেলা দ্বিতীয় বলের ধনাঞ্জয়াকে মারেন চার।

পরের ওভারে আরও ভয়ংকর হয়ে ওঠেন অজি অলরাউন্ডার, হাসারাঙ্গার সেই ওভার থেকে দুই ছক্কা-এক চারে একাই নেন ১৭ রান। এদিকে অপর প্রান্তে খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না ফিঞ্চ। থিকসানার পরের ওভারের সবগুলো বল মোকাবিলা করলেও একটি রানও নিতে পারেননি অজি কাপ্তান।

১২তম ওভারেও লাহিরু কুমারা ধরে রাখেন রানের লাগাম। মাত্র দুই রান দেন সেই ওভারে। চামিকা করুনারত্নের পরের ওভারের প্রথম বলেই মিড উইকেটে সংগ্রাম করতে থাকা ফিঞ্চের ক্যাচ ফেলে দেন কেএনএ বান্দারা। তবে দ্বিতীয় বলেই নিজের ভুল শোধরান এই বদলি ফিল্ডার, দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে বিদায় করেন ম্যাক্সওয়েলকে।

এরপরই ব্যাটিংয়ে এসে খেলার দৃশ্যপট পাল্টে দেন স্টয়নিস। তখনও ৪৬ বলে ৬৯ রান দরকার অজিদের। তবে স্টয়নিসের সামনে তা যেন ছিল নগন্য। প্রথম বল থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালান এই অলরাউন্ডার। শানাকাকে টানা দুই চারে শুরু, এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।

স্টয়নিসের দুই ছক্কায় হাসারাঙ্গার ১৫তম ওভার থেকে ১৯ রান পায় অস্ট্রেলিয়া। পরের ওভারেও তিন ছক্কা হাঁকিয়ে এই ধারা বজায় রাখেন অজি অলরাউন্ডার। ওভারের শেষ ছক্কাটি হাঁকিয়ে মাত্র ১৭ বলে অর্ধশত রানের দেখা পেয়ে যান স্টয়নিস। চলতি বিশ্বকাপের দ্রুততম ফিফটি এটি।

কুমারার পর ওভারেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। ঝড়ো ফিফটির কল্যাণে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতে নেন স্টয়নিস। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে একটি করে উইকেট শিকার করেন থিকসানা, করুনারত্নে ও ধনাঞ্জয়া।

এর আগে টসে জিতে আগে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ওভারেই ফর্মে থাকা কুশাল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে অজিদের প্রথম সাফল্য এনে দেন প্যাট কামিন্স। এরপর ৬৯ রানের জুটি গড়েন পাথুম নিশাঙ্কা ও ধনাঞ্জয়া। তবে শুরু থেকেই ধীরগতিতে রান তুলতে থাকেন তারা।

পাওয়ারপ্লে শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ ছিল ১ উইকেটে ৩৬ রান। ১২তম ওভারে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা অ্যাস্টন অ্যাগার আবারও সাফল্য এনে দেন অস্ট্রেলিয়াকে। ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ২৬ রান করা ধনাঞ্জয়া।

এক ওভার বাদে আবারও ধাক্কা খায় শ্রীলঙ্কা, রান আউট হয়ে ফিরে যান নিশাঙ্কা। বিদায় নেবার আগে ৪৫ বলে মাত্র ৪০ রান করেন এই ওপেনার। লঙ্কানদের শেষ দিকে ঝড় তোলার স্বপ্ন তবু টিকে ছিল ভানুকা রাজাপাকসের ওপর। কিন্তু দলীয় ৯৯ রানে স্টার্কের শিকার হয়ে মাত্র ৭ রানে ফিরে যান তিনি।

পরের ওভারে ফিরে যান অধিনায়ক শানাকাও। ম্যাক্সওয়েলের বলে আউট হওয়ার আগে মাত্র ৩ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক। এরপর আসালাঙ্কা ছাড়া আর লঙ্কানদের হাল ধরতে পারেনি কেউই। 

তার ২৫ বলে ৩৮ রান ও পেসার করুনারত্নের ৭ বলে ১৪ রানের ছোট ক্যামিওতে ১৫০ ছাড়ায় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ। অজি বোলারদের মধ্যে একটি করে উইকেট পেয়েছেন মার্শ ও স্টয়নিস ছাড়া সকলেই।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

48m ago