নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে সেমির লড়াইয়ে টিকে রইল ইংল্যান্ড

England

নিউজিল্যান্ড জয় পেলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যেত তাদের। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের সামনে সুযোগ ছিল শেষ চারের লড়াইয়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখার। সেই কাজটা ভালোমতোই করল জস বাটলারের দল, কেইন উইলিয়ামসনদের হারে ফের জটিল সমীকরণ দেখা দিল এক নম্বর গ্রুপে। নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া তিন দলই থাকলো সেমির দৌড়ে।  

মঙ্গলবার ব্রিসবেনের গ্যাবায় সুপার টুয়েলভের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ২০ রানে হারিয়েছে ইংল্যান্ড।  আগে ব্যাট করে ছয় উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের ১৭৯ রানের জবাবে ১৫৯ পর্যন্ত যেতে পেরেছে কিউইরা। ব্যাট হাতে দারুণ খেলে ইংলিশ নায়ক অধিনায়ক জস বাটলার  (৪৭ বলে ৭৩) হয়েছেন ম্যাচ সেরা।  তার সঙ্গে ওপেন করতে নেমে আলেক্স হেলস করেন ৪০ বলে ৫২। জবাবে গ্লেন ফিলিপসের ৩৬ বলে ৬২ রানের ঝড়ের পরও সমীকরণ মেলাতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। 

ইংল্যান্ডের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় কিউইরা। দলীয় আট রানেই উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ডেভন কনওয়ে। নয় বলে মাত্র তিন রান আসে তার ব্যাট থেকে। ফিন অ্যালেনও আজ স্বভাবসুলভ ঝড় তুলতে পারেননি, মাত্র ১৬ রান করে স্যাম কারানকে উইকেট দিয়ে ফেরেন তিনি।

দলীয় ২৮ রানেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। এরপর মাত্র ৫৯ বলে ৯১ রানের জুটি গড়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন গ্লেন ফিলিপস ও উইলিয়ামসন। অধিনায়ক দেখে শুনে খেললেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ফিলিপস ছিলেন মারকুটে মেজাজেই। তাকে দ্রুত ফেরানোর সুযোগ পেয়েছিল ইংল্যান্ড, কিন্তু কাভারে মঈন আলি ফেলে দেন সহজ ক্যাচ।

সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি ফিলিপস, আদিল রশিদের ১৪তম ওভারেই দুই রান নিয়ে ফিফটির দেখা পেয়ে যান এই বিধ্বংসী ব্যাটার। পরের ওভারেই অবশ্য ছন্দপতন ঘটে ব্ল্যাক ক্যাপসদের, রশিদকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪০ বলে ৪০ রান করা উইলিয়ামসন। নিউজিল্যান্ডের আশার প্রতীক হয়ে তখনও ক্রিজে ছিলেন ফিলিপস।

পরের ওভারে আবারও উইকেট হারায় কিউইরা। মার্ক উড ফেরান ছয় রান করা জিমি নিশামকে। ১৭তম ওভারে ফিরে যান ড্যারিল মিচেলও। খেলা শেষ হতে যখন আর মাত্র ১৫ বল বাকি তখন কারান ফেরান ফিলিপসকে। তার বিদায়ে নিভে যায় নিউজিল্যান্ডের জয়ের বাতি। ১৯তম ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে তবু ক্ষীণ আশা জাগিয়ে রেখেছিলেন স্যান্টনার।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২৬ রান দরকার ছিল উইলিয়ামসনদের। তবে সোধি ও স্যান্টনার পাঁচ রানের বেশি নিতে না পারলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড। তাদের পক্ষে দুটি করে উইকেট শিকার করেন কারান ও ক্রিস ওকস।  

টসে জিতে ব্যাট হাতে ইংল্যান্ডকে দারুণ সূচনা এনে দেন বাটলার-হেলস। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ারপ্লেতেই ৪৮ রান আদায় করে নেন তারা। অবশ্য শুরুতেই উদ্বোধনী জুটি ভাঙার একটা সুযোগ পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এক্সট্রা কাভারে দারুণ ডাইভে বাটলারের ক্যাচ লুফে নেন কেইন উইলিয়ামসন। কিন্তু বিধি বাম, টিভি রিপ্লেতে দেখা যায় বল মাটি ছুঁয়েছে। ব্যক্তিগত ৮ রানে জীবন পান ইংল্যান্ড দলপতি।

জীবন পেয়ে সুযোগ কাজে লাগান বাটলার। হেলস ও তার ছন্দময় ব্যাটিংয়ে এগিয়ে যেতে থাকে ইংলিশদের দলীয় সংগ্রহ। একাদশ ওভারে মাইকেল স্যান্টনারকে চার মেরে ব্যক্তিগত অর্ধশতক পূর্ণ করেন হেলস। তবে পরের বলেই ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। ৮১ রানে প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।

১৩তম ওভারে ৪০ রানে ব্যাট করা অবস্থায় আবারও জীবন পান বাটলার। ডিপ স্কোয়ার লেগে ড্যারিল মিচেলের হাত ফসকে যায় বল। জীবন পেয়ে আবারও তা কাজে লাগান তিনি, ফার্গুসনকে সেই ওভারের শেষ দুই বলে মারেন আরও দুটি চার। তবে পরের ওভারের প্রথম বলেই মঈন আলিকে আউট করে কিইউদের দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন ইস সোধি।

তৃতীয় উইকেটে লিয়াম লিভিংস্টোনকে নিয়ে মাত্র ২৭ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন বাটলার। সেই জুটি ভাঙে ১৮তম ওভারে লিভিংস্টোন সরাসরি বোল্ড হয়ে গেলে। ফার্গুসনকে স্কুপ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ১৪ বলে ২০ রান করেন তিনি। এরপর বেন স্টোকদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরে যান বাটলারও।

শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকান স্যাম কারান। ফার্গুসনের নো বলের কল্যাণে ফ্রি হিট পেয়েও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন স্টোকস। ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান ইংলিশ টেস্ট অধিনায়ক। শেষ বলে ডেভিড মালান তিন রান নিলে ইংল্যান্ড পায় ১৭৯ রানের পুঁজি। বল হাতে দুই উইকেট শিকার করেন কিউই পেসার ফার্গুসন। স্যান্টনার, সাউদি ও সোধি নেন একটি করে উইকেট।

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

7h ago