মেসি-দি মারিয়ার নৈপুণ্যে বড় জয়ে প্রস্তুতি সারল আর্জেন্টিনা

ছবি: এএফপি

২০২২ কাতার বিশ্বকাপের আগে নিজেদের শেষ ম্যাচে প্রত্যাশামাফিক দাপুটে পারফরম্যান্স উপহার দিল আর্জেন্টিনা। প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের জালে চারবার বল পাঠানো আলবিসেলেস্তেরা দ্বিতীয়ার্ধে গোল করল আরও একটি। শক্তিতে পিছিয়ে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে উড়িয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি সারলেন লিওনেল মেসি-আনহেল দি মারিয়ারা।

বুধবার আবুধাবির মোহাম্মদ বিন জায়েদ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৫-০ গোলের বড় জয় পেয়েছে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। তাদের পক্ষে জোড়া গোল করেন দি মারিয়া। একবার করে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন হুলিয়ান আলভারেজ, অধিনায়ক মেসি ও হোয়াকিন কোরেয়া।

এবারের বিশ্বকাপে দুইবারের আর্জেন্টিনার গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচের আর এক সপ্তাহও বাকি নেই। আগামী মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকাল চারটায় তারা মুখোমুখি হবে সৌদি আরবের। এর আগে অনুমিত হলেও আরব আমিরাতের বিপক্ষে গোল উৎসব নিশ্চিতভাবেই উজ্জীবিত করবে তাদের। এই জয়ে টানা অপরাজিত থাকার যাত্রাকে ৩৬ ম্যাচে উন্নীত করল আর্জেন্টিনা। ইতালির টানা ৩৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড স্পর্শের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেল তারা।

বরাবরের মতো বল দখলে প্রাধান্য দেখায় আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৬০ শতাংশ সময়ে বল নিজেদের পায়ে রাখে স্কালোনির দল। তারা প্রতিপক্ষের গোলমুখে ১৫টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে সাতটি। অন্যদিকে, আরব আমিরাতের নেওয়া নয়টি শটের তিনটি ছিল লক্ষ্যে।

এই ম্যাচে সব মিলিয়ে ১৭ জন খেলোয়াড়কে মাঠে নামান আর্জেন্টাইন কোচ। বলার অপেক্ষা রাখে না যে উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বকাপের আগে তাদেরকে পরখ করে দেখা। বিরতির পর আর নামেননি দি মারিয়া। নিয়মিত একাদশের স্ট্রাইকার লাউতারো মার্তিনেজ অবশ্য বেঞ্চেই থাকেন। আর পুরো ফিট না হওয়ায় বেঞ্চেও ছিলেন না পাওলো দিবালা ও ক্রিস্তিয়ান রোমেরো।

মেসি ও দি মারিয়ার সঙ্গে আক্রমণভাগে সুযোগ পাওয়া ম্যানচেস্টার সিটির তরুণ স্ট্রাইকার আলভারেজ ম্যাচের ১৭তম মিনিটে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন। তার গোল অবদান রাখেন দুই অভিজ্ঞ তারকাই। পাল্টা আক্রমণে মাঝমাঠ থেকে ডানদিকে মেসির উদ্দেশ্যে বল বাড়ান দি মারিয়া। মেসি ডি-বক্সের মধ্যে খুঁজে নেন আলভারেজকে। গোলরক্ষকের পায়ে লেগে আলভারেজের শট পৌঁছায় জালে।

আট মিনিটের মধ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন দুর্দান্ত পারফর্ম করা জুভেন্তাসের উইঙ্গার দি মারিয়া। বামপ্রান্ত থেকে মার্কোস আকুনিয়ার ক্রসে বাঁ পায়ের চোখ ধাঁধানো ভলিতে আরব আমিরাতের গোলরক্ষক খালিদ ঈসাকে পরাস্ত করেন তিনি। ৩৬তম মিনিটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলের দেখা পান দি মারিয়া। আলেক্সিস মাক আলিস্তার ডি-বক্সের ভেতরে পাস দেন তাকে। এরপর এক ডিফেন্ডার ও গোলরক্ষক কাটিয়ে এবং আরেক ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ সামলে নিশানা ভেদ করেন দি মারিয়া।

প্রথমার্ধের শেষদিকে স্কোরলাইন ৪-০ করেন রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি'অর জয়ী মেসি। দি মারিয়ার সঙ্গে বল দেওয়া-নেওয়া করে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন পিএসজির এই ফরোয়ার্ড। এরপর ডানদিকে কোণাকুণি দৌড়ে ডান পায়ের জোরালো শটে কাঁপান জাল। জাতীয় দলের জার্সিতে ১৬৫ ম্যাচে এটি তার রেকর্ড ৯১ নম্বর গোল। এর মধ্যে চলতি বছর মাত্র সাত ম্যাচ খেলেই জালের দেখা পেলেন ১১বার।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের ৬০তম মিনিটে গোল আদায় করে নেন বদলি নামা হোয়াকিন। মাঝমাঠে রদ্রিগো দে পল পায়ের কারুকাজ দেখিয়ে রক্ষণচেরা পাসে খুঁজে নেন তাকে। প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে তার শট ঈসাকে ফাঁকি দিয়ে জড়ায় জালে। ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত আর্জেন্টিনা। তবে ফ্রি-কিকসহ মেসির একাধিক প্রচেষ্টা অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।

বিরতির পর ব্যবধান কমানোর বেশ কিছু সুযোগ স্বাগতিকদের সামনে এলেও তারা সেসব লুফে নিতে পারেনি। হারিব আল-মাজমির দূরপাল্লার বুলেট গতির শট বাধা পায় গোলবারে। ব্রাজিলে জন্ম নেওয়া ফরোয়ার্ড কাইয়োকে হতে হয় হতাশ। একবার ফাঁকায় থাকলেও আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজের দুর্দান্ত সেভে তিনি গোল পাননি। আরেকবার সতীর্থের ক্রসে ছোট ডি-বক্সের ভেতরে তার আলতো টোকা অল্পের জন্য হয় লক্ষ্যভ্রষ্ট।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago