'পারিনি নাকি চাইনি?' বিপিএল নিয়ে বিসিবির সমালোচনায় সাকিব

২০১২ সালে চালু হয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। কিন্তু প্রায় এক যুগ পরে এসেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক এই টি-টোয়েন্টি আসর পায়নি শক্ত ভিত। নেই কোনো নির্দিষ্ট আর্থিক কাঠামো। ক্রিকেটীয় প্রযুক্তি থেকে শুরু করে খেলোয়াড়দের বেতন-ভাতা সংক্রান্ত জটিলতায় বারবার ওঠে প্রশ্ন। বিপিএলের মান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আয়োজক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কড়া সমালোচনা করলেন সাকিব আল হাসান। জাতীয় দলের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের দৃষ্টিতে, 'একটা যা-তা অবস্থা' চলছে।
গালফ অয়েলের শুভেচ্ছা দূত বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার সাকিব। বুধবার একদিনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহীর প্রতীকী দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সেখানে সংশ্লিষ্ট নানা প্রশ্নের পাশাপাশি বিপিএল নিয়ে মুখ খুলতে হয় তাকে।
আগামী শুক্রবার মাঠে গড়াচ্ছে বিপিএলের নবম আসর। কিন্তু এবারও প্রতিযোগিতাটি শুরুর আগেই সঙ্গী হয়েছে ঘাটতি। ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) ছাড়াই চালু হচ্ছে ব্যাট-বলের লড়াই। এসব অবশ্য নতুন কিছু নয়। শুরু থেকেই বিপিএলের সঙ্গী নানা অব্যবস্থাপনা, পেশাদারিত্বের অভাব। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আয়ের কোনো নিশ্চিত রাস্তা নেই। ফলে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের লড়াইয়ে বিপিএল পড়ে গেছে অনেক পিছনে। অথচ জন্মলগ্নে ভারতের আইপিএলের সমমানের আসর আয়োজনই ছিল বিসিবির লক্ষ্য।
এতদিন পেরিয়ে গেলেও বিপিএলের কোনো ভালো অবস্থানে না যাওয়ার প্রসঙ্গে সাকিব গণমাধ্যমকে বলেন, 'পারিনি নাকি চাইনি?... জানি না, বলাটা কষ্টকর। চাইলে না পারার কোনো কারণ আমি দেখি না। আমার মনে হয়, আমরা সৎ মনে কখনও চাইনি কিছু করতে এখন পর্যন্ত। বাজেট নেই কারণ আমরা বাজেট তৈরি করতে পারিনি। যদি তৈরি করতে পারতাম, মান অর্জন করতে পারতাম, অবশ্যই এই বাজেটটা অনেক বড় হওয়ার কথা ছিল।'
বাংলাদেশের চেয়ে ক্রিকেটের বাজার অনেক ছোট, এমন দেশগুলোতেও ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ উল্লেখযোগ্য জায়গায় পৌঁছেছে। কিন্তু বিপিএলকে আকর্ষণীয় করতে না পারার পিছনে বিসিবির ব্যর্থতা দেখেন তিনি, 'গ্রামের এমন কোনো প্রত্যন্ত অঞ্চল দেখবেন না যেখানে ক্রিকেট খেলা হচ্ছে না। এমন তো না যে এটার জনপ্রিয়তা নেই। ১৬-২০ কোটি মানুষের একটা দেশে এত পছন্দের একটা খেলা, এটার বাজারটা থাকবে না, এটা খুবই দুঃখজনক। মানে আমি অন্তত বিশ্বাস করি না। সেই জায়গা থেকে আমার ধারণা, এটা মার্কেটিংয়ের জায়গা থেকে বড় একটি ব্যর্থতা যে কারণে আমরা সেই রকম একটা বাজার তৈরি করতে পারিনি। সদিচ্ছা থাকলে কোনো কিছু থেমে থাকার কারণ দেখি না। আমি তো কোনো কারণই দেখি না ডিআরএস না থাকার, তিন মাস আগে ড্রাফট বা অকশন না হওয়ার, দলগুলো দুই মাস আগে ঠিক হবে না এবং খেলোয়াড়দের পাওয়া যাবে না।'
বাংলাদেশের শীর্ষ তারকার মতে, বিপিএলের চেয়ে বরং ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) আয়োজন ভালোভাবে হয়, 'এখন এক খেলোয়াড় একদিন আসবে, দুইদিন পর চলে যাবে। কে কখন আসবে কখন যাবে কেউ জানে না। জার্সি পায়নি খেলোয়াড়রা। আমি আপনাদের সংবাদেই দেখেছি। একটা যা-তা অবস্থা। এর থেকে আমাদের ডিপিএল আরও ভালোভাবে হয় কারণ তারা আগে থেকেই দলটা গোছাতে পারে। আরও আগে থেকে জানে যে দলটা কী হচ্ছে এবং তারা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।'
Comments