ক্যাচ মিস আর মিস ফিল্ডিংয়ের ম্যাচে জিতল সিলেট

একের পর এক ক্যাচ মিস, সঙ্গে মিস ফিল্ডিং। দুই দলই যেন প্রতিযোগিতায় মেতেছিল কে কতো মিস করতে পারে। সেখানে তুলনামূলক চিত্রে কিছুটা কম মিস করেছে সিলেট সিক্সার্স। দিন শেষে তাই বিজয়ী দলের নামও সিলেট। বৃথা যায় সাকিব আল হাসানের ঝড়ো ফিফটি। 

শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে সিলেট সিক্সার্স। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৪ রান করে বরিশাল। জবাবে ৬ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

বিপিএলে এটা তৃতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। ২০২০ সালে ঢাকা প্লাটুনের বিপক্ষে ২০৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করে খুলনা টাইগার্সের জয়টি এ আসরে সর্বোচ্চ। তবে এ সবই সম্ভব হয়েছে ফিল্ডারদের বাজে ফিল্ডিংয়ে। দুই দল সহজ ক্যাচই ছেড়েছে ৭টি। পাশাপাশি মিস ফিল্ডিংয়ে ভুরিভুরি রান দিয়েছে তারা।

অথচ বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে এদিন বরিশালকে বড় পুঁজিই এনে দিয়েছিলেন অভিজ্ঞ তারকা সাকিব। তিনিও জীবন পেয়েছিলেন দুটি। কিন্তু তার দলের ফিল্ডাররা প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের দিতে থাকেন একের পর এক জীবন। ফিফটি তুলে নেওয়া তৌহিদ হৃদয়কে শুরুতেই ফেরাতে পারতো তারা। শূন্যে তোলা বল ধরতে পারেননি হায়দার আলী।

ফিফটির কাছাকাছি এসে আউট হওয়া শান্ত পেয়েছেন দুটি জীবন। প্রথমে ব্যক্তিগত ২৬ রানে সৈয়দ খালেদ আহমেদ ফেলে দেন তার ক্যাচ। এরপর ৩২ রানে মিস করেন ইফতেখার আহমেদ। জীবন পেয়েছেন ফিফটির কাছে যাওয়া আরেক ব্যাটার জাকির হাসানও। ব্যক্তিগত ১৩ রানে তার ক্যাচ ফেলে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ। 

তবে লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই দলকে বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন কলিন আকেরমান। মেহেদী হাসান মিরাজের করা ইনিংসের দ্বিতীয় বলে দুই নিতে চেয়েছিলেন এ ডাচ অলরাউন্ডার। দুটি হতে পারতো সহজেই। কিন্তু দ্বিতীয় রান নেওয়ার সময় আয়েশি ঢঙ্গে দৌড়েছেন। এমনকি পিচে ব্যাট ফেলতেও করেন দেরি। ফলে রানআউটের স্বীকার হয়ে ফিরতে হয় সাজঘরে।

তবে তিন নম্বরে নেমে আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে প্রাথমিক চাপ সামলে নেন তৌহিদ হৃদয়। দ্বিতীয় উইকেটে ১০১ রানের জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দুই ব্যাটারই এগিয়ে যাচ্ছিলেন ফিফটির পথে। তবে ভুল বোঝাবুঝির কারণে রানআউটের ফাঁদে পড়েন শান্ত। ৪০ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৮ রান করেন তিনি।

তবে বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। জাকিরের সঙ্গে ৩৪ রানের জুটি গড়ে আউট হন করিম জানাতের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়ে। ৩৪ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কায় খেলেন ৫৫ রানের ইনিংস।

জাকির ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী। মাত্র ১৮ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় খেলেন ৪৩ রানের ইনিংস। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৩৮ রানের জুটি গড়ে চতুরঙ্গর বলে আউট হন তিনি। এরপর বাকি কাজ থিসারা পেরেরাকে নিয়ে শেষ করেন মুশফিক। ১১ বলে ২৩ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। ৯ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কায় হার না মানা ২০ রানের ক্যামিও খেলেন থিসারা। 

এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করে বরিশাল। দুই ওপেনার চতুরঙ্গ ডি সিলভা ও এনামুল হক বিজয় গড়েন ৬৭ রানের জুটি। এরপর অবশ্য দ্রুতই এ দুই সেটা ব্যাটারকে ফেরায় সিলেট। এনামুলকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মাশরাফি। আর চতুরঙ্গকে ফেরান ইমাদ ওয়াসিম।

এরপর বড় কোনো জুটি না হলেও এক প্রান্তে ঝড় তুলে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন সাকিব। ২৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করা এ অলরাউন্ডার শেষ পর্যন্ত মাশরাফির বলে আউট হওয়ার আগে খেলেন ৬৭ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। ৩২ বলের ইনিংসটি সাজান ৭টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে।

তবে এদিন দুটি সহজ জীবন পেয়েছেন সাকিব। পাক পেসার মোহাম্মদ আমিরের বলে ব্যক্তিগত ৩২ রানে ফাইন লেগে তার ক্যাচ ছাড়েন স্বদেশী ইমাদ ওয়াসিম। এরপর ব্যক্তিগত ৬৬ রানে ফের তার ক্যাচ ছাড়েন আকবর আলী। এবারও দুর্ভাগা বোলার আমির। তবে মাশরাফির করা পরের ওভারেই সাকিবের ক্যাচ নিয়েছেন সেই আমির। 

২৫ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৬ রান করেন চতুরঙ্গ। ২১ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ২৯ রান করেন এনামুল। শেষদিকে দুটি ছক্কায় ১৭ রানের ক্যামিও খেলেন করিম জানাত। সিলেটের পক্ষে ৪৮ রানের খরচায় ৩টি উইকেট নেন মাশরাফি।

Comments

The Daily Star  | English

JnU students begin mass hunger strike

Approximately 5,000 current and former students have joined the protest

3h ago