আইসিসি ট্রফি বিজয়ের এই দিনে

সেদিনের সাফল্যই তৈরি করেছে সাকিব-তামিম-মাশরাফিদের

ছবি: আনিসুর রহমান

১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিল। কুয়ালালামপুরের কিলাত কিলাব মাঠে আইসিসি ট্রফির ফাইনালে কেনিয়ার মুখোমুখি বাংলাদেশ। শেষ বলের রোমাঞ্চকর এক অধ্যায় শেষে জয়। জেগে উঠে পুরো বাংলাদেশ। পুরো দেশে বয়সে যায় আনন্দের বন্যা। ক্রিকেট খুঁজে পায় নতুন দিগন্ত। সেই সাফল্যের হাত ধরে ধাপে ধাপে এখন অনেকটাই পরিণত দল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।

এখন বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন সাকিব আল হাসানের মতো বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের মতো ব্যাটার। এক সময় দাপটের সঙ্গে খেলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে সেদিন যদি ক্রিকেটে এমন জোয়ার সৃষ্টি না হতো, তা হলে হয়তো এতো বড় তারকা হয়ে ওঠা হতো না এই সকল খেলোয়াড়দের। হয়তোবা ক্রিকেটের দিকেই আকর্ষিত হতেন না তারা!

বাংলাদেশিরা তাই আলাদা করে ফ্রেমে বাঁধিয়ে রেখেছেন আইসিসি ট্রফি জয়ের সেই স্মৃতিগুলোকে। জয়ের জন্য চাই ১ বলে ১ রান। কোনোমতে ব্যাটে লাগিয়ে স্বপ্নপূরণ! পরে জানা যায় ব্যাটেই লাগেনি বল, প্যাডে লেগে আসে কাঙ্ক্ষিত রানটি। কিন্তু তাতে কি আসে যায়, এখনও বাংলাদেশিরা বিশ্বাস রানটা হাসিবুল হাসান শান্তরই।

২৬ বছর পর এসেও সেই দিনের টাটকা স্মৃতি ফের তুলে আনলেন তৎকালীন অধিনায়ক আকরাম খান, 'প্রায় ২৬ বছর হয়ে গেল আইসিসি ট্রফিটা, এতো বড় সাফল্য। এখন এতো বড় বড় খেলোয়াড় বাংলাদেশ দলে খেলছে, সাকিব, তামিম, মুশফিক, তারপর মাশরাফি যখন খেলত, আশরাফুল ছিল, মোস্তাফিজ। খুব ভালো লাগে সত্যি বলতে। ওইদিন আইসিসি ট্রফিতে যদি আমরা কোয়ালিফাই না করতাম, ওরা হয়তো খেলত, কিন্তু এই পর্যায়ে এমন পারফরম্যান্স করার সুযোগটা পেত না। এরজন্য আমাদের খুব ভালো লাগে, যে শুরুটা আমাদের হাত দিয়ে হয়েছে।'

তখন ক্রিকেট খেলার জন্য নিজেদের কোনো মাঠ ছিল না আকরামদের। ঢাকা স্টেডিয়ামে (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম) ছয় মাসের জন্য খেলতে দেওয়া হতো তাদের। ছিল না অনুশীলন করার মতো কোনো জায়গা। অন্যান্য সুবিধা তো অনেক দূরের বিষয়। অথচ তাই নিয়েই ক্রিকেটকে নতুন দিগন্তে তুলেছিলেন আকরাম-বুলবুলরা।

'ক্রিকেটটা তখন এই পর্যায়ে ছিল এখন যেমন হকি, টেনিস, ব্যাডমিন্টন রয়েছে এই পর্যায়ে। তখন আমাদের কোনো কাঠামোই ছিল না। আমাদের না কোনো মাঠ ছিল, না কোনো অনুশীলনের জায়গা। ছয় মাসের জন্য বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম পেতাম খেলার জন্য। সেখান থেকে আজকে কিন্তু যে জায়গায় চলে এসেছে। এতোটা মাঠ, এতো ইনডোর, এতো সুবিধা, এতো ভালো প্লেয়ার। সবকিছু চিন্তা করলে খুবই ভালো লাগে,' বলেন আকরাম।

হাজারো ব্যর্থতা শেষে সেই জয় আমূল বদলে দেয় বাংলাদেশকে। ওয়ানডে স্ট্যাটাস পেয়ে যায় বাংলাদেশ। সে ধারায় (১৯৯৯ সালের) বিশ্বকাপে দারুণ পারফরম্যান্স। পাকিস্তানকে হারানোর পর টেস্ট স্ট্যাটাসও পেয়ে যায় টাইগাররা। এখনও ওয়ানডে ক্রিকেটে একরকম পরাশক্তিই বাংলাদেশ। অন্য দুই সংস্করণেও এগিয়েছে টাইগাররা। কিন্তু সেদিন যদি অন্য কিছু হতো, তাহলে হয়তো এখনও সংগ্রাম করতে হতো দেশের ক্রিকেটকে।

Comments

The Daily Star  | English

Pilots faked flying records

CAAB inquiry finds, regulator yet to take action

10h ago