প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের এক আসরে ৫০০ ছক্কা
টি-টোয়েন্টির সর্দারির যুগে ছক্কা যেন হয়ে গেছে সহজলভ্য কোন পণ্য। ব্যাট-বলের খেলায় ওই ব্যাটের দিকে পাল্লা ভারি তো ওইসব ছক্কা-চারের ফুলঝুরি প্রদর্শনের জন্যেই! ভারত বিশ্বকাপে অনেক একপেশে ম্যাচের ফলে রান সংখ্যায় রেকর্ডবুক উলট-পালট হয়নি ঠিক। কিন্তু ছক্কার জয়জয়কার ঘটছে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে ঠিকই।
সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডে এবারের আসর আগেই ছাড়িয়ে গেছে বাকি সব আসরকে। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোন আসরে ৫০০ ছক্কাও দেখে ফেলেছে ক্রিকেটবিশ্ব। আট ম্যাচ বাকি থাকতেই, ২০২৩ বিশ্বকাপে ছক্কা সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ৫০০।
বুধবার পুনেতে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই ৫০০ ছক্কার মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলে ভারত বিশ্বকাপ। এর আগের সর্বোচ্চ ছয়টি আসরেই ৪০টির বেশি ম্যাচ হয়েছিল। তবে এবারের আসর ৪০তম ম্যাচে এসেই আগের সব আসরকে ছাড়িয়ে গেছে৷ গ্রুপ পর্বের ৪০তম ম্যাচ শেষে মোট ছক্কার সংখ্যা ৫১৪।
এর আগে সবচেয়ে বেশি ছয়ের মার দেখা গিয়েছিল ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সে আসরে ৪৮ ম্যাচে মোট ছক্কা হয়েছিল ৪৬৩টি। সেবারই প্রথম কোন আসরে ৪০০টির বেশি ছক্কার মার দেখেছিলেন দর্শকেরা। ২০০৭ বিশ্বকাপ ছিল ওই আসরের আগে সবচেয়ে বেশি ছয় প্রদর্শনকারী আসর। ক্যারিবিয়ানে আয়োজিত সে বিশ্বকাপে ৫১ ম্যাচে ৩৭৩ বার ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন ব্যাটাররা।
টি-টোয়েন্টির যুগের বিশ্বকাপ হয়েও ছক্কার হিসেবে পিছিয়ে ছিল ২০১৯ সালের আসর। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে ৪৫ ম্যাচে মোট ছক্কা হয়নি ৩৫৭টির বেশি। বাকি আসরগুলোতে অবশ্য তিনশর বেশিই ছক্কা দেখা যায়নি। ২০০৩ সালে ম্যাচ হয়েছিল ৫২টি, কিন্তু ছক্কা সংখ্যা ২৬৬ এর উপরে যায়নি। তবে ২০১১ সালের বিশ্বকাপে এর চেয়েও কম ছক্কার মার পড়েছিল বোলারদের উপর। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশে আয়োজিত সে আসরে ৪৯ ম্যাচে ছক্কা হয়েছিল ২৫৮টি।
১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপে ১৫৩ ছক্কা এসেছিল ৪২ ম্যাচে। এর আগের কোন আসরেই এর চেয়ে বেশি ছক্কা হয়নি। যত সময় পিছিয়ে যাওয়া হবে, তত ছক্কার মান যে কমবে তা তো বুঝতেই পারছেন। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের পর থেকেই ছক্কার সংখ্যা বাড়তে শুরু করে প্রত্যেক আসরে। ২০০৩ সালের ছক্কা সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায় ২০০৭ বিশ্বকাপ। কিন্তু ২০১১ বিশ্বকাপ সে হিসেবে পিছিয়ে পড়লেও রানের ফোয়ারা ছোটানো ২০১৫ বিশ্বকাপ নতুন করে লিখতে থাকে ছক্কার রেকর্ড। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে আবার ছক্কার গ্রাফ নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। ২০২৩ এ এসে উঠছে, উঠছেই শুধু!
কে জানে, কোথায় গিয়ে ঠেকে এই ছক্কার স্রোত। তবে যেখানেই থামুক ছক্কা সংখ্যা, টুর্নামেন্টের আট ম্যাচ বাকি থাকতেই তো প্রথমবারের মতো পাঁচশর বেশি ছক্কা সারা।
Comments