সাভারে সাংবাদিকের ওপর কেমিকেল নিক্ষেপ, এলাকা ছাড়ার হুমকি
ঢাকার সাভারে অফিস শেষে বাসায় ফেরার পথে দৈনিক যুগান্তরের ক্রাইম রিপোর্টার ইকবাল হাসান ফরিদের ওপর মরিচের গুড়ো সাদৃশ্য এক প্রকার ঝাঁঝালো পাউডার (কেমিকেল) ছিটিয়ে আহত করেছে দূর্বৃত্তরা।
গতকাল শুক্রবার আনুমানিক রাত পৌনে ১২টার দিকে সাভারের কলমা এলাকায় ফরিদের বাড়ির ২০ গজ দূরত্বে এ ঘটনা ঘটে।
হামলাকারীরা এসময় সাভারের স্থানীয় দু'জন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে তাদের নির্দেশনার কথা জানিয়ে ইকবাল হাসান ফরিদকে সপরিবারে এক মাসের মধ্যে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয়। সাভার এলাকা ছেড়ে না গেলে সপরিবারে হত্যার হুমকিও দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ঘটনার পর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ফরিদকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সাংবাদিক ইকবাল হাসান ফরিদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'রাতে অফিস শেষে রাজধানী ঢাকা থেকে সাভারের বাসায় ফিরছিলাম। আনুমানিক পৌনে ১২টার দিকে বাসার কাছে অন্ধকার গলিতে পৌঁছালে পেছন থেকে একজন নাম ধরে ডাক দেয়। ডাক শুনে দাঁড়ানোর পর মাস্ক পরা দুই যুবক স্থানীয় দুই জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আমাকে আগামী এক মাসের মধ্যে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তা না হলে সপরিবারে আমাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয় তারা। এক পর্যায়ে পেছন থেকে একজন মরিচের গুড়ার মতো এক প্রকার ঝাঁঝালো পাউডার (কেমিকেল) আমার মাথায় ও চোখেমুখে ছিটিয়ে দিয়ে আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে চলে যায়। ঝাঁঝালো পাউডারটি ছিটিয়ে দেওয়ার পর চোখেমুখে ও শরীরে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া শুরু হলে তাৎক্ষণিকভাবে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'আশ্চর্যের বিষয় হলো হামলাকারীরা সাভারের যেই দু'জন জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে আমাকে হুমকি দিয়েছে তাদের কারো সাথে আমার পরিচয়টুকুও নেই।'
মূল ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে স্থানীয় দু'জন জনপ্রতিনিধির নাম ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
'আমি এ বিষয়ে থানায় মামলা করবো। পুলিশ ওই দুই জনকে শনাক্ত করলেই মূল ঘটনা বেরিয়ে আসবে,' ফরিদ বলেন।
এদিকে এনাম মেডিকেলের ইমার্জেন্সিতে দায়িত্বরত চিকিৎসক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ফরিদের শরীরে মরিচের গুড়া সাদৃশ্য কেমিক্যাল জাতীয় কিছু ছোড়া হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি হাসপাতালে অসুস্থ সাংবাদিককে দেখতে আসেন সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহজামান। ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
Comments