উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ

ডর্টমুন্ড কোচের হুঙ্কার, ‘রিয়ালের শিরোপা জয় দেখতে আসিনি’

ছবি: এএফপি

মৌসুমের শুরুতে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের এই পর্যন্ত আসার কথা ভেবেছিলেন কজন! নানা প্রতিকূল লড়াইয়ে জয়ী হয়ে জার্মান ক্লাবটি জায়গা করা নিয়েছে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে। শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে রিয়াল মাদ্রিদকে ফেভারিট মানছেন তাদের কোচ এদিন তেরজিচ। তবে নিজেদেরকেও খাটো করে দেখছেন না তিনি। প্রতিপক্ষকে হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, স্রেফ অংশগ্রহণ করতে নয়, শিরোপা জেতার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে তার শিষ্যরা।

ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরের ফাইনালে ডর্টমুন্ড মুখোমুখি হবে স্প্যানিশ পরাশক্তি রিয়ালের। শনিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত একটায় শুরু হবে ম্যাচ। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসের সফলতম ক্লাব রিয়াল পাচ্ছে রেকর্ড ১৫তম শিরোপার হাতছানি। তাছাড়া, গত ১০ বছরে পাঁচবার তারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এই প্রতিযোগিতায়। অন্যদিকে, তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে স্থান পাওয়া ডর্টমুন্ড একবারই শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল ১৯৯৭ সালে।

ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে তেরজিচ বলেছেন, রিয়াল ফেভারিট হলেও পরোয়া করছেন না তারা, 'আমরা সর্বোচ্চ মানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত। যদি রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ১০ ম্যাচ খেলতাম, তাহলে কাজটা কঠিন হতো। ৩৪ ম্যাচ খেললে সেটা অসম্ভব। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে যদি এক ম্যাচে নামিয়ে আনেন, তাহলে যে কোনো কিছুই হতে পারে। এটা পরিষ্কার যে, তারা ফেভারিটের ভূমিকায় থাকবে। তবে আমরা তাদের পরোয়া করি না। অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ বা পিএসজির বিপক্ষেও আমরা ফেভারিট ছিলাম না।'

ঐতিহ্য, পরিসংখ্যান, শক্তি— যে কোনো বিচারেই পিছিয়ে থেকে ফাইনালে নামবে তেরজিচের দল। তাদের নামের সঙ্গে সেঁটে আছে আন্ডারডগ তকমা। কিন্তু এক ম্যাচের ফাইনালে যে কোনো কিছুই ঘটতে পারে। আর তা করে দেখানোর সামর্থ্য যে পুরোপুরি রয়েছে, সেই প্রমাণ ইয়েলো সাবমেরিনরা রেখেছে মৌসুমজুড়ে। জার্মান বুন্ডেসলিগায় পঞ্চম হলেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ ও সেমিফাইনালে পিএসজিকে বিদায় করেছে দলটি। এর আগে গ্রুপ পর্বে মৃত্যুকূপে পড়লেও উতরে যায় ডর্টমুন্ড। পিএসজি, এসি মিলান ও নিউক্যাসল ইউনাইটেডকে নিয়ে গড়া গ্রুপে তারা ছিল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।

ফাইনালে পৌঁছেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলছেন না ৪১ বছর বয়সী জার্মান কোচ। নিজেদের লক্ষ্য সম্পর্কে পরিষ্কার তিনি। তবে সেটা হুমকির মতোই শুনিয়েছে, 'ফাইনাল কেউ স্রেফ খেলার জন্য খেলে না, ফাইনাল জেতার জন্য খেলতে হয় এবং এটাই আমাদের পরিষ্কার লক্ষ্য। আমরা এখানে রিয়ালের শিরোপা জয় দেখতে আসিনি। যথেষ্ট সাহসী হতে পারলে আমাদেরও সুযোগ থাকছে।'

ফাইনালে রিয়ালকে হারাতে দলের দুর্ভেদ্য রক্ষণভাগের দৃঢ় সেনানীদের ওপর বাড়তি আস্থা রাখছেন তেরজিচ, 'এই প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত আমরাই সবচেয়ে বেশি ম্যাচে গোল হজম করিনি। গোলপোস্ট থেকে প্রতিপক্ষকে যতটা সম্ভব দূরে রাখতে হবে। গত সেপ্টেম্বরে (চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এবারের মৌসুমে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পিএসজির বিপক্ষে) যখন আমরা গোল হজম করেছিলাম, তখনও আমরা এই অবস্থায় ছিলাম না। তবে এখন আমরা পুরো ভিন্ন একটি দল এবং দেখিয়েছি যে, শিরোপার জন্য লড়তে আমরা তৈরি।'

শেষবার ডর্টমুন্ড চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে উঠেছিল ১১ বছর আগে। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল তারা। একই ভেন্যুতে এবার আরেকটি ফাইনালে উপস্থিত ডর্টমুন্ড। চারবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগজয়ী কোচ কার্লো আনচেলত্তির দল রিয়ালকে হারাতে পারবে তারা? উত্তর জানা যাবে কয়েক ঘণ্টা পরই।

Comments

The Daily Star  | English

Pathways to the downfall of a regime

The erosion in the credibility of the Sheikh Hasina regime did not begin in July 2024.

7h ago