বিজয় দিবস উপলক্ষে ৩ দিনে গদখালীতে ২ কোটি টাকার ফুল বিক্রি

যশোরে ফুলের বাজার
যশোরের গদখালীতে রাস্তার পাশে ফুলের বাজার। ছবি: স্টার

বিজয় দিবস উপলক্ষে গত তিন দিনে যশোরের গদখালীতে দুই কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। গত কয়েক বছরের ক্ষতি পুষিয়ে এবারে লাভের আশা করছেন ফুল চাষিরা।

বাজারে এ সময় সব ফুলের দাম বেশি। মূলত অতিবৃষ্টির কারণে মাঠে ফুল চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে গদখালীর বিস্তীর্ণ এলাকায় ফুলের চাষ হচ্ছে।

প্রতি ভোরে এখানে ফুলের হাট বসে। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন ফুল কিনতে।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আসা পাইকাররা এখান থেকে নিয়ে যান নানা ধরনের ফুল।

বিশেষ করে বিজয় দিবসের আগের তিন দিন ছিল ফুলের সবচেয়ে বড় হাট।

বর্তমানে বাজারে প্রতিটি রজনীগন্ধা ১০ টাকা, গোলাপ ১২ থেকে ১৫ টাকা, মানভেদে প্রতিটি জারবেরা ১০ টাকা থেকে ১৭ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতিটি দুই থেকে তিন টাকা ও গাঁদা প্রতি হাজার সাড়ে ৪০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, তবে বিজয় দিবস উপলক্ষে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে গাঁদা ফুল। এবার গাঁদা প্রতি হাজার সর্বোচ্চ ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত বছরগুলোয় চাষিরা এই ফুলের দাম পেয়েছিলেন সাড়ে ৩০০ টাকা। মাস খানেক আগ থেকে প্রতিটি ফুল দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।

যশোর ফুল উৎপাদন ও বিপণন সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি আব্দুর রহিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশে নানা উৎসবে বিক্রি হওয়া ফুলের ৭৫ শতাংশ যায় যশোর থেকে।'

তিনি জানান, গত তিন দিনে এখানে দুই কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে।

'পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে চলতি মৌসুমের চার মাসে গদখালী থেকে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে,' বলে আশা করেন তিনি।

সাধারণত বিজয় দিবস, বসন্ত উৎসব, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও নববর্ষে দেশে ফুলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে।

গদখালীর চাষিরা এই দিনগুলোকে কেন্দ্র করে ফুল চাষ করেন। গদখালীতে ফুলের পাইকারি বাজার ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত থাকে।

যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের দুই পাশে ফুল বিক্রেতারা সাজিয়ে রাখেন নানা জাতের ফুলের স্টল।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির তথ্য বলছে, যশোরে প্রায় ছয় হাজার পরিবার ফুল চাষে জড়িত। তারা এক হাজার হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ১১ ধরনের ফুল চাষ করেন। প্রতি বছর ৪০০ কোটি টাকার ফুল চাষ হয়।

দেশের মোট চাহিদার ৭০ শতাংশই যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, পানিসারা, নাভারন, নির্বাসখোলা ও হাড়িয়ার ফুল চাষিরা সরবরাহ করেন।

গদখালীর পটুয়াপাড়া গ্রামের বাবলুর রহমান দুই বিঘা জমিতে গোলাপ চাষ করেছেন। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বছর অসময়ে বৃষ্টি হয়েছে। বাড়তি পরিচর্যা করছি। দাম ভালো পেলে লাভ হবে।'

কৃষক রুবেল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেড় বিঘা জমিতে রঙিন গ্ল্যাডিওলাস চাষ করেছি। বৃষ্টিতে অনেক গাছ মরে গেছে। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে দেড় লাখ টাকা। দাম ভালো না হলে লোকসান হবে।'

ফুল চাষি আবদুর রহিম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ফুলের খেতে সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। এখন দরকার সেচ। বাজার ভালো থাকলে অনেক লাভ হবে।'

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গ্রীষ্মের তাপ-খরা ও বর্ষায় প্রবল বৃষ্টিতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন আবহাওয়া অনুকূলে। কৃষকরা মাঠ রক্ষণাবেক্ষণে ব্যস্ত। আবহাওয়া ও বাজার অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে কয়েক শ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।'

Comments

The Daily Star  | English
International Crimes Tribunal 2 formed

Govt issues gazette notification allowing ICT to try political parties

The new provisions, published in the Bangladesh Gazette, introduce key definitions and enforcement measures that could reshape judicial proceedings under the tribunals

3h ago