শিশির ও বাজে ফিল্ডিংকে দায় দিলেন লিটন

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে দুই উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ। ২০৫ রানের বড় পুঁজি দিয়েও ম্যাচ রক্ষা করতে পারেনি টাইগাররা। আমিরাতের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের প্রথম হারের ইতিহাস। এই হারের দায় শিশির ও বাজে ফিল্ডিংকে দিয়েছেন অধিনায়ক লিটন দাস।
শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার শেষ ওভারে আমিরাতের জয় জন্য প্রয়োজন ছিল ১২ রানের। তখন দলটির হাতে ছিল ৩ উইকেট। অনভিজ্ঞ তানজিম সাকিব স্নায়ুচাপ ধরে রাখতে পারেননি। নাটকীয় শেষ ওভারে সেই সমীকরণ মিলিয়ে ফেলে আমিরাত।
ম্যাচ শেষে অধিনায়ক লিটন বলেন, 'পরাজয় সবসময়ই কঠিন। তবে এই উইকেটে আমরা ভালো ব্যাট করেছি। উইকেট বেশ ভালো ছিল। তবে যখন ওরা ব্যাট করে, তখন শিশিরের সুবিধা পেয়েছে। আমরা ফিল্ডিংয়ে কিছুটা ভুল করেছি, সঙ্গে মিডল ওভারে বোলিংয়েও ঘাটতি ছিল। এমন ছোট মাঠে এবং শিশির যেখানে ফ্যাক্টর, সেখানে বোলারদের আরও হিসেব করে পরিকল্পনা করতে হয়।'
লিটন স্বীকার করেন যে নিজের পারফরম্যান্সও সন্তোষজনক ছিল না। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বোলারদের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম্যান্স পাননি বলেও উল্লেখ করেন, '(নাহিদ) রানা যেভাবে আগের ওভারে বল করেছে, তার থেকে আমরা আরও ভালো কিছু আশা করেছিলাম। কারও কারও ভালো দিন যায়, খারাপ দিনও আসে। আমরা বসে আলোচনা করব এবং ঘুরে দাঁড়াব। আমি নিজেও জানি আজকের ব্যাটিং আমার মান অনুযায়ী হয়নি, তবে আমি সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব।'
ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় যখন ইউএই অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিমের ৪২ বলে ৮২ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে, যেখানে ছিল ৯টি চার ও ৫টি ছক্কা। তবে তিনি আউট হওয়ার সময়ও জয়ের জন্য ৫৮ রান প্রয়োজন ছিল। তখন মনে হয়েছিল বাংলাদেশ ম্যাচে ফিরতে পারে, কিন্তু ইউএই'র নিচের সারির ব্যাটাররা দেখিয়েছেন আত্মবিশ্বাস ও স্থিরতা।
সাত নম্বরের পর থেকে প্রতিটি ইউএই ব্যাটার অন্তত একবার করে ছক্কা মেরেছেন। উত্তেজনাপূর্ণ শেষ ওভারে শান্তভাবে ব্যাট করেছেন ধ্রুব পরাশর। জয়ের মুহূর্ত আসে হায়দার আলি একটি ফ্রি হিটে চার মেরে জয়ের রান তুলে নিলে। এর আগে তাওহীদ হৃদয়ের একটি মিসফিল্ড ও দেরিতে থ্রো দেওয়ায় হায়দার ও মতিউল্লাহ খান দু' রান সম্পূর্ণ করতে সক্ষম হন, যা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়।
ম্যাচ জয়ের নায়ক ওয়াসিম বলেন, 'আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বাংলাদেশকে হারিয়ে দারুণ লাগছে। আমি সবাইকে বিশ্বাস দিচ্ছিলাম, এই রান তাড়া সম্ভব কারণ আমরা এই কন্ডিশন চিনি।'
আগামীকালের সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচ নিয়ে আশাবাদী ওয়াসিম বলেন, 'আমরা আমাদের শক্তি নিয়েই খেলব এবং আশা করছি সিরিজ ২-১ করতে পারব।'
এই হারে তৃতীয় ম্যাচটি এখন সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে পরিণত হয়েছে, অথচ এই ম্যাচটি আয়োজনের সিদ্ধান্তই এসেছে গতকাল। অন্যথায় সিরিজ সমতা নিয়েই শেষ করতে পারতো স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের সামনে এখন শুধুই ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই, আর আরব আমিরাত চায় ইতিহাস গড়ে সিরিজ জয় করতে।
Comments