‘বেবি’ শাবানার গল্পে ‘নাম শাবানা’

Naam-Shabana
‘নাম শাবানা’ চলচ্চিত্রের একটি দৃশ্য

আইএমডিবি রেটিং: ৬.৮/১০

অভিনয়: অক্ষয় কুমার, তাপশ্রী পান্নু, মনোজ বাজপাই

পরিচালক: শিভাম নাইর

মুক্তির তারিখ: ৩১ মার্চ

সময়কাল: ১৪৮ মিনিট

রিভিউ: `কয়ি মিল গেয়া’ সিনেমার সিক্যুয়াল যেমন ছিল ‘কৃষ’, তেমনি অক্ষয় কুমারের ‘বেবি’ সিনেমার সিক্যুয়াল ‘নাম শাবানা’। নামে মিল না থাকলেও মূলত ‘বেবি’ সিনেমার শাবানা চরিত্রটির গল্প বলা হয়েছে এখানে। দুটি সিনেমার মধ্যে পার্থক্য হলো, ‘বেবি’ নায়ক প্রধান আর ‘নাম শাবানা’ নায়িকা প্রধান।

অ্যাকশন-ভিত্তিক এই সিনেমার গল্প নিয়ে খুব বেশি কিছু বলার সুযোগ নেই। একজন সাধারণ মেয়ে তাঁর জীবন থেকে লড়াকু হতে শেখে এবং সেই লড়াকু মেয়েটিই ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের হয়ে কাজ করে। মূলত এটাই ঘটনা।

কিন্তু সিনেমার একটা জায়গাতে খটকা লেগেছে আর তা হল শাবানা (তাপশ্রী পান্নু) তখন একজন আন্তর্জাতিক অস্ত্রব্যবসায়ীকে মারতে যান যখন অন্যসব এজেন্টদের সেই অস্ত্রব্যবসায়ীর হাতে একের পর এক মরতে হয়। দশ বছর যাবত যাঁকে ধরতে বা মারতে পারেনি কোন এজেন্ট সেই ব্যাক্তিকে শাবানা যেভাবে মারল তা ঠিক মেলাতে পারলাম না। শাবানার বীরত্ব দেখাতে গিয়ে ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স এর সব এজেন্টকেই ছোট করে দেখিয়ে ফেলেছেন এই সিনেমার গল্পকার।

সিনেমার শুরুতেই শাবানার লড়াকু স্বভাব দেখানো হয়েছে। এক ব্যাক্তি ফোনে কথা বলা অবস্থায় পথ চলতে গিয়ে শাবানাকে ধাক্কা দেয় এবং দুঃখিত বলে চলে যেতে থাকে। কিন্তু তা তিনি মানতে নারাজ। সে লোকটার পিছু পিছু গিয়ে তাঁকে লাথি মেরে ফেলে দেন এবং দুঃখিত বলে ফিরে আসেন শাবানা। এই ব্যাপারটা খুবই বাজে লেগেছিল। কারণ, পরিচালক ধাক্কা দেয়া লোকটিকে যেভাবে দেখিয়েছেন সেখানে স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছিল যে, লোকটি ঠিক ইচ্ছা করে ধাক্কা দেয়নি। যাই হোক, এটা শাবানার মর্জি (মূলত গল্পকারের মর্জি)।

ঘটনাক্রমে এটাও জানা যায়, শাবানার মায়ের ওপর শারীরিক নির্যাতন করত তাঁর বাবা। একদিন যখন শাবানার বাবা অমানুষিকভাবে পেটাচ্ছিলেন তাঁর মাকে, তখন মাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই খুন করে ফেলেন বাবাকে। ফলশ্রুতিতে তাঁকে জেলও খাটতে হয়।

একদিন শাবানা তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে ডিনার করে মোটরসাইকেলে ফেরার পথে কয়েকজন ছেলে গাড়ি নিয়ে তাঁদের পিছু পিছু আসেন এবং টিজ করতে থাকেন। এটি সহ্য করতে না পেরে তিনি একাই চারজনের সঙ্গে লড়াই করতে এগিয়ে যান (সিনেমার মূল চরিত্র বলে কথা)। কিন্তু গল্পকারের মর্জি ছিল একজন মুষ্টিযোদ্ধা হবার পরও শাবানা সেখানে কার্যত তাঁর জেদটা প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। মাঝখান থেকে তাঁকে বাচাতে এগিয়ে এসে জীবন দিতে হলো তাঁর (গোবেচারা) প্রেমিককে (আহ্ গল্পকার, তুমি এতো নিষ্ঠুর!)।

ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্সের একজন অফিসার (মনোজ বাজপাই) শাবানাকে জানায় তাঁর প্রেমিকের হত্যাকারীদের মেরে ফেলদতে সবধরনের সহায়তা করবেন তিনি। কিন্তু বিনিময়ে চুক্তি করতে হবে যে এরপর অফিসার ভদ্রলোক যেভাবে চাইবেন সেভাবেই এজেন্ট হিসাবে কাজ করে যাবেন শাবানা। এই প্রস্তাবে শাবানা রাজী হয়ে যান। এরপর, ইন্টেলিজেন্সের পরোক্ষ সহযোগিতায় একের পর এক তাঁর প্রেমিকের হত্যাকারীদের শেষ করে ফেলেন তিনি।

নিজের প্রতিশোধ নেওয়া শেষ হলে এবার শাবানার দায়িত্ব হয় ইন্টেলিজেন্সের হয়ে কাজ করার। ইন্টেলিজেন্সের হয়ে তাঁর কাজ কী ছিল তা শুরুতেই বলে ফেলেছি তাই আর না বললেও বোধকরি আপনাদের বুঝতে অসুবিধা হবে না।

শাবানার প্রেমিক হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার একটি পর্যায়ে একবার দেখা গিয়েছিল অক্ষয় কুমারের চেহারা। মূলত ইন্টেলিজেন্সের হয়ে যখন শাবানা কাজ শুরু করেন তখনই অক্ষয়ের ভূমিকা দৃশ্যপটে আসে। কিন্তু, তা শাবানার ব্যাকআপের জন্য। সেটাও সিনেমার প্রায় শেষের দিকে।

সব মিলিয়ে সিনেমাটিকে খারাপ বলা চলে না। কিন্তু গল্পটা বেশ দুর্বল মনে হয়েছে। সিনেমার ভুলগুলো ধরতে গেলে প্রায় প্রতিটি দৃশ্য থেকেই কিছু না কিছু ভুল বের হবে। তবুও নারী কেন্দ্রিক এমন একটি সিনেমা নির্মাণের জন্য বাহবা পেতেই পারেন শিভাম নাইর। শুভ কামনা রইল নাম শাবানার জন্য।

Comments

The Daily Star  | English

Rampal fouling 2 Sundarbans rivers

The Rampal power plant began operation in late 2022 without an effluent treatment plant and has since been discharging untreated waste into the Pasur and Maidara rivers next to the Sundarbans.

4h ago