চার দিনেই হারিয়ে গেলো নদী

নদীটি উধাও হয়ে যাওয়ার পেছনে বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে দায়ী করা হচ্ছে। ছবি: ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন

‘পুকুর চুরি’র কথা আমাদের দেশে বেশ পরিচিত। কিন্তু ‘নদী চুরি’? এমন ঘটনাও ঘটে বটে! আর এটি ঘটেছে কানাডার উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে। দেশটির একটি হিমবাহের বরফগলা পানি এক নদী থেকে অন্য নদীতে সরে যাওয়ায় মাত্র চার দিনের মধ্যে একটি নদী মরে গেছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নে নদী মরে যাওয়ার এই ঘটনাকে বিজ্ঞানীরা ‘নদী চুরি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

এখন স্লিমস রিভারের এমন দশা হয়েছে যে একে দেখে আর বোঝার উপায় নেই একসময় এখানে একটি নদী ছিল। ইউকনের কাসকাওলস হিমবাহের বরফগলা পানি এখন প্রবাহিত হচ্ছে অ্যালসেক রিভার দিয়ে। ফলে হিমবাহটির পানি বেরিং সাগরে না গিয়ে এখন যাচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরে।

নেচার জিওসায়েন্স জার্নালে এক নিবন্ধে বলা হয়, গত বছর মে মাসের ২৬ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে নদী মারা যাওয়ার ঘটনাটি ঘটে। হিমবাহটির শেষপ্রান্তে ১০০ ফুটের মতো একটি গিরিখাদ রয়েছে। এখান থেকেই বরফগলা পানি প্রবাহিত হয়।

বিজ্ঞানীরা ২০১৩ সালে কাসকাওলস হিমবাহের শেষ প্রান্তে গিয়েছিলেন। তখন স্লিমস ছিল ‘গতিশীল, শীতল ও গভীর’। পায়ে হেঁটে পাড়ি দেওয়ার জন্য নদীটি তখনো বেশ বিপদজনক ছিল। তাঁরা গতবছর সেখানে গিয়ে দেখেন ধীরে ধীরে অগভীর হয়ে যাচ্ছে স্লিমস। আর ফুসে উঠছে অ্যালসেক।

স্লিমস রিভার সম্পর্কে এক গবেষক বলেন, “সে জায়গাটিতে গিয়ে আমরা খুবই অবাক হয়েছি। আসলে এখন নদীটিতে কোনও পানি নেই। আমরা অনায়াসে এর বুক চিরে হেঁটে যেতে পারি। আমাদের জামা ভিজে যাওয়ার কোনও ভয় নেই এতে। এখন এটাকে আর একটি নদী বলা যায় না। যেন সর্পিলাকৃতির একটি জলাশয় মাত্র।”

তিনি আরও বলেন, “এ কথা বলা যাবে না যে, বৃষ্টিপাতের পরিবর্তনের ফলে স্লিমস রিভারে পানি নেই। কেননা, এই নদীটি বরফগলা পানিতে পরিপুষ্ট ছিল। স্লিমসের পানি গিয়ে পড়ছে অ্যালসেকে। আর সে কারণেই জলশূন্য স্লিমস।”

উল্লেখ্য, কাসকাওলস হিমবাহটির আয়তন পঁচিশ হাজার বর্গকিলোমিটারেরও বেশি। এর সম্মুখের অংশটি ১৮৯৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সরে গেছে।

Click here to read the English version of this news

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

2h ago