রাজ্যে বিজেপির উত্থানে স্পষ্ট ইঙ্গিত

পশ্চিমবঙ্গে ৭ পৌরসভায় প্রথম তৃণমূল, দ্বিতীয় বিজেপি

trinamul
নির্বাচনে জয়ের খবরে এভাবে তৃণমূলের রাজনৈতিক রঙ “সবুজ” আবির শরীরে মেখে সমর্থকরা উচ্ছাস প্রকাশ করতে রাস্তায় নেমে পড়েন। ছবিটি নদীয়া জেলার কুপার্স ক্যাম্প পৌরসভা এলাকা থেকে তোলা। ছবি: স্টার

প্রথমের সঙ্গে দ্বিতীয়ের ব্যবধান যথেষ্ট হলেও তৃণমূলের পরেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পৌরসভায় নির্বাচনে দ্বিতীয়স্থানে উঠে এসেছে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রাজ্যের নলহাটি, ধুপগুড়ি, কুপার্স ক্যাম্প, দুর্গাপুর, পাঁশকুড়া, বুনিয়াদপুর ছাড়াও হলিদয়া পৌরসভার নিরঙ্কুশ দখল নিয়েছে মমতা ব্যানার্জির দল তৃণমূল কংগ্রেস।

তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, প্রায় সবগুলো পৌরসভাতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধী প্রার্থীদের মধ্যে কংগ্রেস, সিপিএম-কে পেছনে ফেলে ভোট পাওয়ার নিরিখে দ্বিতীয়স্থানে রয়েছেন বিজেপির প্রার্থীরাই।

আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে পৌরসভায় এমন ফলাফল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে আশাবাদী করে তুলছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস মনে করে, বিজয়ী প্রার্থীদের চেয়ে কোনও কোনও ওয়ার্ডে ৮০ শতাংশ কম ভোট পেয়েছে বিজেপির প্রার্থীরা। তাই এই ভোটের অংক নিয়ে আগামী পঞ্চায়েত কেন যেকোনো নির্বাচনে বিজেপির ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখা উচিত নয়।

হলদিয়া, দুর্গাপুর এবং কুপার্স ক্যাম্পে পৌরসভার সবগুলো আসনে তৃণমূল জয় পেয়ে রাজ্যে রেকর্ড গড়েছে এবার। সেখানে বিরোধীরা কোনও আসনে তৃণমূলের সামনে দাঁড়াতে পারেনি।

২০১০ সালের আগে পূর্ব-মেদিনীপুরসহ দক্ষিণবঙ্গ সিপিএমের ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল। কিন্তু ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ওই লাল দুর্গ তৃণমূলের সবুজ হয়ে গিয়েছে।

আজকের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, ধুপগুড়ি পৌরসভার ১৬ ওয়ার্ডের মধ্যে ১২টি তৃণমূল পেয়েছে। নলহাটি পৌরসভার ১৬-তে ১২, দুর্গাপুরে ৪৩টিতেই তৃণমূলের পতাকা উড়ছে, হলদিয়ায় ২৯টি আসনেই তৃণমূল জয় পেয়েছে, কুপার্স ক্যাম্পেও ১২টির সবকটিতেই তৃণমূল এবং বুনিয়াদপুরের ১৪ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৩টিতেই মমতার দলের জয় হয়েছে।

বুনিয়াদপুর ছাড়া বাকি ছয়টি পৌরসভা এর আগে তৃণমূলের হাতেই ছিল। নতুন পৌরসভা গঠন হওয়ার পর এবার বুনিয়াদপুরও গেল রাজ্যের শাসক দলের হাতে।

“সাতে সাত - তৃণমূলের বাজিমাত” – রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ও পরিষদীয় দল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় পৌরসভা নিরঙ্কুশ জয়ের পর এইভাবে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “তৃণমূলের পর রাজ্যে দ্বিতীয়স্থানে উঠে গেল বিজেপি এমন বলাটা ঠিক নয়। কারণ ফার্স্ট বয় ৯৯ নম্বর পেয়েছে আর কেউ মাত্র দশ নম্বর পেল। তাতেই তার শক্তি দ্বিতীয় হয় না। রাজ্যের মানুষ বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক শক্তি হিসেবেই দেখেন।”

বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, “তৃণমূলেরই মুখের কথা যে রাজ্যের বিজেপি তাদের ‘এক নম্বর শত্রু’। বিজেপি যদি শক্তিশালী নাই হতো তবে ‘এক নম্বর শত্রু’ হয় কি করে। রাজ্যের মানুষ মমতা ব্যানার্জির প্রতি আস্থা হারিয়েছেন। আস্তে আস্তে তারা বিজেপির দিকে আসছেন। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিজেপি অনেক বেশি ভাল ফল করবে।”

যদিও এই ভোটে তৃতীয়স্থানে থাকা রাজনৈতিক জোট বামফ্রন্ট নেতা সুজন চক্রবর্তী মনে করেন রাজ্যে তো ভোটই হয়নি। হয়েছে লুট। তাই এই ভোটের হিসাব নিয়ে বামফ্রন্ট মোটেই চিন্তিত নন। রাজ্যের মানুষ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে তৃণমূল ক্ষমতাচ্যুত হবে।”

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

7h ago