আজ পবিত্র আশুরা

আজ (১ অক্টোবর) পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মুসলিম বিশ্বে ত্যাগ ও শোকের প্রতীকের পাশাপাশি বিশেষ পবিত্র দিবস হিসেবে দিনটি পালন করা হয়। বাংলাদেশেও আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে।
প্রায় ১ হাজার ৩৩৫ বছর আগে এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেইন (রা.) কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন।
১০ মহরম হজরত ইমাম হোসেইন (রা.) এবং তাঁর পরিবার ও অনুসারীরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনা স্মরণ করে বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটি পালন করে থাকে। শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম ইসলামের মহান আদর্শকে সমুন্নত রাখতে তাঁদের এই আত্মত্যাগ মানবতার ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।
কারবালার এই শোকাবহ ঘটনা ও পবিত্র আশুরার শাশ্বত বাণী সকলকে অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং সত্য ও সুন্দরের পথে চলতে প্রেরণা যোগায়।
এছাড়াও, ১০ মহররম আশুরার দিন মহান আল্লাহতায়ালা পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং আবার এদিন কেয়ামত ঘটাবেন। এর বাইরে এদিন হজরত ইব্রাহিম (আ.) নমরুদের অগ্নিকুন্ড থেকে রক্ষা পেয়েছেন, হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পান। এ রকম অসংখ্য ঘটনায় তাৎপর্যমন্ডিত এ দিনটি মুসলিম সম্প্রদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যের সাথে পালন করে থাকে।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি পবিত্র আশুরার শিক্ষা সকলের জীবনে প্রতিফলন ঘটানোর আহবান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে সকল অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে জাতীয় জীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আশুরার মহান শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
আজ সরকারি ছুটি। আশুরা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। প্রতি বছরের মতো এবারও শিয়া সম্প্রদায় কারবালার শোকাবহ ঘটনার স্মরণে পুরান ঢাকার হুসেনি দালান ইমামবাড়া থেকে তাজিয়া মিছিল বের করবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন আজ হোসেনি দালান পরিদর্শন করেন।
পবিত্র মহররম উপলক্ষে টাঙ্গাইলের গড়পাড়া ইমাম বাড়িতে ১০ দিনের ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এবারো হিজরী সালের প্রথম মাস মহররমের চন্দ্রোদয়ের দিন থেকে ইমাম বাড়ি প্রাঙ্গণে কারবালার শোককে স্মরণ করে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আয়োজন করা হয়েছে মিলাদ, ফাতেহা, নেয়াজ, মার্সিয়া-মাতম। চন্দ্রোদয়ের দিন সন্ধ্যায় বেজে উঠে ইমাম বাড়ির দামামা। কারবালার যুদ্ধের স্মরণে প্রায় শতবর্ষ যাবৎ সংরক্ষিত রয়েছে এ বিশাল ডঙ্কা। বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন, বাংলাদেশ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেলও এই দিনের তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।
Comments