গিরিজা দেবীর মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান ভারতের সঙ্গীতমহল

প্রয়াত উপমহাদেশের প্রথিতযশা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতজ্ঞ গিরিজা দেবী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। মধ্যকলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার রাত পৌনে ৯টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মাস ছয়েক আগে ঢাকায় শেষ বারের মতো সঙ্গীতানুষ্ঠানে তার শাস্ত্রীয় কণ্ঠ শুনেছিলেন বাংলাদেশের মানুষ। ২৬ ও ২৯ তারিখ জয়পুর ও পুনেতে সঙ্গীত পরিবেশন করার কথা ছিল এই শিল্পীর।
বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন ঠুংরি, কাজরি ও দাদরা সঙ্গীতের এই রানী। এরই মধ্যে পরপর দুই দফায় হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল তাঁর। সেই ধকল সামালে পারেননি গিরিজা দেবী- দ্য ডেইলি স্টারকে এমনটাই জানালেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গিরিজা দেবীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ছাড়াও সঙ্গীত জগতের বিখ্যাত ব্যক্তিরা।
মঙ্গলবার রাতে কলকাতার পিস হেভেন মরচুয়ারিতে রাখা হয়েছিল প্রয়াত শিল্পীর দেহ। বুধবার সকালে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ সঙ্গীত রিসার্চ একাডেমির প্রাঙ্গণে। দুপুর পর্যন্ত সেখানে থাকার পর ফের পিস হেভেন-এ নিয়ে যাওয়া হবে। ২৬ অক্টেবর বৃহস্পতিবার সকালের ফ্লাইটে তার দেহ নিয়ে যাওয়া হবে বারানসির নিজের গ্রামের বাড়ি, ১৯২৯ সালে ৮ মে যেখানে জন্মেছিলেন গিরিজা দেবী। ওই গ্রামেই তার শেষকৃত্যানুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।
গিরিজা দেবীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে গিয়ে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী বলেছেন, গিরিজার দেবীর মৃত্যুতে ঠুংরি সংসারে অন্ধকার ঘনীভূত হল।
ওস্তাদ রশিদ খান মনে করেন, এই শিল্পীর মতো গুণী শিল্পী আর ছিলেন না। মায়ের মতো স্নেহ করতেন তাকে।
সঙ্গীত শিল্পী হৈমন্তী শুক্লা বলেন, গিরিজা দেবীর মৃত্যু আমাদের সঙ্গীতমহলে বড় ক্ষতি। যা পূরণ হবেই না।
তবলা শিল্পী বিক্রমের ঘোষের কথায়, গিরিজা দেবী আমার বাবাকে ভাই বলতেন। সেই হিসেবে তিনি আমার পিসিমা। সঙ্গীত শিল্পী ছাড়াও তিনি আমার পিসামাও ছিলেন।
ধ্রুপদী সঙ্গীতের অবদানের জন্য ২০১৬ সালে গিরিজা দেবী পেয়েছিলেন ভারত সরকারের পদ্মশ্রী সম্মান। পদ্মবিভূষণ, পদ্মভূষণ ছাড়াও ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার গিরিজা দেবীকে ‘সঙ্গীত মহাসম্মান’ দিয়ে সম্মানিত করেছিল।
Comments