সৌম্যের ঝড়ের পরও পারল না বাংলাদেশ

১৯৬ রান তাড়ায় ঝড়ো শুরু করেছিল বাংলাদেশ। অনেকদিন পর সৌম্য সরকার ফিরেছিলেন চেনা ছন্দে। চার-ছয়ের তান্ডবে মাতিয়েও রেখেছিলেন টাইগার সমর্থকদের। ৩১ বলে ৪৭ রান করে তিনি আউট হতেই আর কেউ টেনে নিতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে পরাজয়ের ব্যবধানই কমিয়েছেন অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিন। ২০ ওভারে ১৭৫ রান করতে পারল সাকিবের দল। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হারল ২০ রানে।
ব্লমফন্টেনের পিচে ছিল প্রচুর রান। টস জিতে আগে ব্যাট পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকা বড় রানই করেছিল। তবে শুরুর দিকে ব্যাটে ঝড় এবং পরে স্ট্রাইক রোটেট করে তা ধরে রাখতে পারলে তাড়া করাও সম্ভব ছিল। যদিও এত রান তাড়া তো দূরে থাক, আগে ব্যাট করেও টি-টোয়েন্টিতে কখনো ১৯০ রান করতে পারেনি বাংলাদেশ।
বিশাল রান তাড়ায় চার ওভারের আগেই ৪০ পেরিয়ে যান দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েস। মূলত ব্যাটে ঝড় তুলেন সৌম্যই। তাদের ৪৩ রানের জুটি ভাঙে ইমরুলের আউটে। ১১ বলে ১০ রান করে ফিরে যান তিনি। আরেক প্রান্তে সৌম্যকে পাওয়া গিয়েছিলো ছন্দময় ভঙ্গিতে। স্পিনারদের বলে বেরিয়ে এসে ছয় মারছিলেন, পেসারদের বল চোখ জুড়ানো কাভার ড্রাইভে পাঠাচ্ছিলেন সীমানার বাইরে। তার খেলা পুল শটগুলোও লাগছিল ব্যাটের মাঝখানে।
দারুণ খেলতে থাকা সৌম্য পাননি টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ফিফটি। এর আগে সর্বোচ্চ ছিল ৪৮ রান। এদিন থামলেন ৩১ বলে ৪৭ করে। তার আগেই অবশ্য ফিরে গেছেন অধিনায়ক সাকিব। এক ওভারে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ভিলিয়ার্সের হাতে তুলে দিয়েছেন ক্যাচ। ট্রেডমার্ক ছক্কায় শুরু করা মুশফিকুর রহিমও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। একেবারেই হতাশ করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে ম্যাচের বাইরে চলে যায় বাংলাদেশ। তবে সাব্বির রহমান থাকায় টিকে ছিলো আশাও। দুই ছক্কা মেরে ফের নড়েচড়ে বসারও ব্যবস্থা করেছিলেন সমর্থকদের। আউট হয়েছেন একেবারেই লুজ শট খেলে। হ্যান্ড্রিকসের অনেক বাইরের বল তুলে দিয়েছেন আকাশে।
১২৪ রানে ছয় উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশ ১৭৫ পর্যন্ত যেতে পেরেছে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের কারণে। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের শেষ ওভারটিতে দারুণ বল করেছিলেন। ব্যাট হাতেও রাখলেন প্রতিশ্রুতি। ২৭ বলে ৩৯ রান করে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন। তাতে কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে। তবে তার ব্যাটিং জানান দিয়েছে মিডল অর্ডারে কেউ একজন টিকে থাকলে ফলটা ভিন্ন হতেই পারত।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেওয়ার মাজেজা বুঝতে বেশি সময় নেননি প্রোটিয়া টপ অর্ডার। হাশিম আমলাকে বোল্ড করে মেহেদী হাসান মিরাজ প্রথম সাফল্য এনে দিয়েছিলেন। তবে এরপরই তাণ্ডব শুরু করেন কুইন্টেন ডি কক ও এবিডি ভিলিয়ার্স। ওভার প্রতি প্রায় ১০ করে রান তুল আগাতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। চার পেসার নিয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। তবে রুবেল হোসেন ছাড়া বাকিরা করলেন এলোমেলো বোলিং। তেতে উঠে পেসের ঝাঁজ দেখিয়েছেন রুবেল। স্পিনে সাকিব, মিরাজও রেখেছেন ভূমিকা। তবু প্রায় দুইশ রানের কাছেই গিয়ে থামে প্রোটিয়ারা। স্বাগতিকদের ১৯৫ রানের পুঁজিতে কুইন্টেন ডি ককের অবদান ৪৪ বলে ৫৯, ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাট থেকে এসেছে ২৭ বলে ৪৯ রানের ইনিংস। ঝড়ো ব্যাটিংয়ের কারণে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন ভিলিয়ার্স।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৯৫/৪ (ডি কক ৫৯, ডি ভিলিয়ার্স ৪৯; মিরাজ ২/৩১, সাকিব ১/২৮, রুবেল ১/৩৪)
বাংলাদেশ: ১৭৫/৯ (সৌম্য ৪৭, সাইফ ৩৯*; প্যাটারসন ২/২৯, হেনড্রিক্স ২/৪২, ফ্রাইলিংক ২/৩৩)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: এবিডি ভিলিয়ার্স
Comments