রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বিলম্বের জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করছে মিয়ানমার
আন্তর্জাতিক সহায়তা পেতে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ইচ্ছাকৃত বিলম্ব ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে মিয়ানমার। গত কয়েক দশকে দফায় দফায় মোট ৮ লাখ রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুকে উচ্ছেদ করে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার পর দেশটির পক্ষ থেকে প্রহসনমূলক এই মন্তব্য করা হল।
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সাং সু চি’র মুখপাত্র জাও তায় বলেছেন, ১৯৯০ সালের রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন চুক্তির আওতায় যেকোনো সময় শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার চুক্তির শর্ত মানছে না। জাও তায় স্টেট কাউন্সেলরের দপ্তর সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকেরও দায়িত্ব পালন করছেন।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ক্যাম্প বানানোর নামে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক দাতাদের কাছ থেকে অনুদান সংগ্রহ করছে।
“এখন পর্যন্ত তারা (বাংলাদেশ) ৪০০ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে। আমাদের ভয় হচ্ছে অর্থ পাওয়ার পর তারা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে বিলম্ব করতে পারে।” বুধবার মিয়ানমারের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদপত্র গ্লোবাল নিউ লাইট পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত নিবন্ধে সু চি’র মুখপাত্রের এই বক্তব্য ছাপা হয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরুর বিলম্বের জন্য মঙ্গলবারও বাংলাদেশের ওপর দোষ চাপিয়েছেন জাও তায়। সেদিন তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা শুরু করতে প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু অন্য পাশ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। এটাই আসল ঘটনা।”
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির হামলার পর নির্বিচারে রোহিঙ্গা নিধন ও তাদের গ্রামগুলোতে আগুন দেওয়া শুরু করে মিয়ানমার। প্রাণে বাঁচতে তখন থেকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়টির ছয় লাখের বেশি মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
নিপীড়ন নিয়ে দীর্ঘ দিন নীরব থাকার পর শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেন দেশটির নেতা অং সাং সু চি। রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগের কারণ সম্পর্কে অবগত নন, এমন কথাও বলেছিলেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ বাসভূমে ফেরাতে বাংলাদেশ সরকারও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ লক্ষ্যে গত সপ্তাহে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডো সফর করেন। তবে অচলাবস্থা কাটাতে দৃশ্যত এখনো কোনো অগ্রগতি অর্জিত হয়নি।
Comments