এবার সিলেটের রোমাঞ্চকর জয়

সিলেটকে এদিনও দারুণ শুচনা এনে দেন দুই ওপেনার। ছবি: ফিরোজ আহমেদ

শেষ ওভারে দরকার ছিল ১০ রান। হাতে পাঁচ উইকেট। ডোয়াইন ব্রাভোর করা প্রথম বলে শুভাগত হোম বোল্ড। পরের বলে নেমেই নুরুল হাসান সোহানের ছক্কা।  পরের দুই বলে আরও দুই রান। পঞ্চম বলে এগিয়ে সোহান থার্ড ম্যান দিয়ে বল গলিয়ে দিলেন বাউন্ডারির দিকে। এক বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারালো সিলেট সিক্সার্স।  

অথচ এক সময় মনে হচ্ছে আরেকটা অনায়াস জয় পেতে যাচ্ছে স্বাগতিকরা। আগেরদিন যেখানে শেষ করেছিলেন সেখান থেকেই যেন শুরু করেছিলেন সিলেটের দুই ওপেনার। এবারও টার্গেট ছিল নাগালের মধ্যে।  তা আরও মামুলি হয়ে গেল উপুল থারাঙ্গা আর আন্দ্রে ফ্লেচারের ঝড়ো শুরুতে। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারেই এল ৫৯ রান। তবে ইনিংসের শেষ দিকে রশিদ খানের ঘূর্নিতে ম্যাচ জমে উঠে। টুইটুম্বুর গ্যালারি তখন উত্তেজনায় ঠাসা।

আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া ফ্লেচার এদিনও ছিলেন ছন্দে। ৫ চার ও দুই ছক্কায় ২৯ বলে ৩৬ রান করে টাইমিংয়ে গড়বড়। আন্দ্রে ফ্লেচার যখন ফিরে যাচ্ছেন স্কোরবোর্ডে নবম ওভারেই উঠে গেছে ৭৩ রান।  ম্যাচ তখন অনেকটাই স্বাগতিকদের পকেটে। পরে ওয়ানডাউনে নামা সাব্বির রহমান ৩ রান করে রশিদ খানকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে হন এলবিডব্লিও। যদিও বল ট্রাকিংয়ে দেখা গেছে সাব্বিরের পায়ে লাগলেও বলটি স্টাম্প মিস করত। ব্যাক টু ব্যাক ফিফটি পেয়ে আরেকবার দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়ার উপলক্ষ তৈরি ছিল থারাঙ্গার সামনে। কিন্তু বদলি ফিল্ডার রকিবুলের দারুণ এক থ্রোতে থারাঙ্গা রানআউটের পরই দৃশ্যপটে রশিদ খান। প্রথম দুই ওভারে ছিলেন সাদামাটা। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে মারলেন একের পর এক গুগলি। তাতে আউট হতে হতেও বেঁচেছেন সিলেটের ব্যাটসম্যানরা। নিজের তৃতীয় ওভার থেকে দিয়েছেন মাত্র ২ রান। একটা সময় একপেশে হয়ে পড়া ম্যাচে তখন বেশ প্রাণ ফিরেছে। পরের ওভারেই স্যামুয়েলসকে দুই চার মেরে চাপটা সরিয়ে দেন নাসির। পরের ওভারে ফিরে দারুণ এক ডেলিভারিতে নাসিরকে স্টাম্পিং করেন রশিদ। ম্যাচে তখন দোলাচলে। সেই দোলাচল চলল শেষ ওভার পর্যন্ত।

এর আগে ফের টস জিতে আঁটোসাটো বোলিং করেন নাসির হোসেন। উইকেটে বল গ্রিপ করায় জ্বলে উঠেন তাইজুল ইসলাম। মারলন স্যামুয়েলসের ফিফটির পরও  ১৪৫  রানের বেশি করতে পারেনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নাসির হোসেনের টস ভাগ্যটা বেশ। সিলেটের পিচে পরে ব্যাট করা দলই বেশি জেতে, টস জেতাটা তাই অনেক বড় টার্নিং পয়েন্ট। তবে আগের দিনের মতো এদিন শুরুতেই সাফল্য পাননি। পঞ্চম ওভারে গিয়ে ভাঙে কুমিল্লার ওপেনিং জুটি। নাসিরের বল স্টাম্পে টেনে নিয়ে ১১ রান করে ফিরে যান ইমরুল। শুরুতে চার-ছয় মেরে ঝড় তুলার ইঙ্গিত দিয়েও বেশিক্ষণ টেকেননি লিটন দাস। তাইজুলের বলে তেঁড়েফুঁড়ে বেরিয়ে আসতে গিয়ে হয়েছেন স্ট্যাম্পিং। সেটা ছিল ওই ওভারের শেষ বল। পরের ওভারে এসে প্রথম বলেই বাটলারকে আউট করে তাইজুল জাগিয়েছিলেন হ্যাট্রিকের সম্ভবনা। ইংলিশ ব্যাটসম্যান সোজা বল তুলে দেন লং অফে।

বেশ খানিকটা বিপদে পড়া কুমিল্লাকে এরপর পথ দেখিয়েছেন সিলেটের ছেলে অলক কাপালী। দুই ছক্কার ১৯ বলে ২৬ রান করে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে সান্তকির বলে কাটা পড়েন অলক। কুমিল্লা বাকিটা এগিয়েছে স্যামুয়েলসের ব্যাটে। প্লাঙ্কেটের বলে নাসিরের হাতে আউট হওয়ার আগে ৪৭ বলে ৬০ রান করেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স: ১৪৫ (ইমরুল ১২, লিটন ২১, বাটলার ২, অলক ২৬, নবী  ৫, ব্রাভো ১১, সাইফুদ্দিন ১; তাইজুল ২/২২, সান্তকি ২/৩০, নাসির ১/১৮)

সিলেট সিক্সার্স:১৪৮/৬ (থারাঙ্গা ৫১  , ফ্লেচার ৩৬ ; রশিদ ১/১৮) 

Comments

The Daily Star  | English

Sinner dethrones Alcaraz to capture maiden Wimbledon crown

Jannik Sinner downed Carlos Alcaraz 4-6, 6-4, 6-4, 6-4 on Sunday to win his first Wimbledon title, gaining sweet revenge for his painful defeat in the French Open final.

5h ago