ভাইকিংসকে উড়িয়ে দুইয়ে উঠে এল খুলনা

ভাইকিংস বোলারদের পিটিয়ে ১০ বল আগেই খেল খতম করে দেন টাইটান্স ব্যাটসম্যানরা। পাঁচ উইকেটে তিন নম্বর জয় তুলে খুলনা উঠে এসেছে টেবিলের দুই নম্বরে।
Mahmudullah
৪৮ রানের ইনিংস খেলার পথে মাহমুদউল্লাহ। ছবিঃ ফিরোজ আহমেদ

শেষ ৫ ওভারে দরকার ছিল ৪৪ রান। টানটান উত্তাপ ছড়ানোর মঞ্চ তখন প্রস্তুত। তবে সে সুযোগ দিলেন না মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, আরিফুল হক আর কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। ভাইকিংস বোলারদের পিটিয়ে  ১০ বল আগেই খেল খতম করে দেন টাইটান্স ব্যাটসম্যানরা।

শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে  পাঁচ উইকেটে তিন নম্বর জয় তুলে খুলনা উঠে এসেছে টেবিলের দুই নম্বরে। ছয় ম্যাচে চার নম্বর হারে তলানিতেই চিটাগাং ভাইকিংস। খুলনার বিপক্ষে দুই দেখায় দুটিতেই ধরাশায়ী হলো তারা। 

খুলনাকে জয়ের কাছে নিয়ে যায় পঞ্চম উইকেট জুটি। ৭৯ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর আরিফুল-মাহমুদউল্লাহ জুটিতে আসে ৭০ রান। ২৪ বলে ৩৪ রান করে আরিফুল যখন ফিরছেন, খুলনার নিতে হবে ১৬ বল থেকে কেবল ১২ রান। বাকি কাজ সেরে ফেরা মাহমুদউল্লাহ  রিয়াদ অপরাজিত থেকেছেন ৩৫ বলে ৪৮ রান করে। আরিফুল আউটের পর দুই বল পেয়েই ১০ রান নিয়ে হাসতে হাসতে মাঠ ছেড়েছেন  কার্লোস ব্র্যাথওয়েট।

১৬০ রান তাড়ায় শুরুতে সুবিধা করতে পারেননি মাইকেল কিলিঙ্গার। সানজামুলের বলে দিয়েছেন সহজ ক্যাচ। তবে ওই সানজামুলকেই পরের ওভারে পিটিয়ে ছাতু বানিয়েছেন রাইলি রুশো। এক ওভার থেকেই নিয়েছেন ১৭ রান। রুশোর তান্ডবে ৫ ওভারেই ৫১ রান খুলনার বোর্ডে।রুশোকে থামিয়েছেন প্রথমবার নামা অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার আল-আমিন। তবে তার আগেই ২৬ বলে ৪৯ করে কাজটা অনেক সহজ করে দিয়ে যান এই প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। শুরুর ওই তান্ডবেই ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি। 

ওপেনিংয়ে ভালো না করায় নিচে নামানো হয় নাজমুল হোসেন শান্তকে। সেখানেও পারেননি এই তরুন। এবার ৯ রান করে ফিরেছেন তিনি। ওয়ানডাউন সুযোগ পাওয়া যে ডিজার্ভ করেন না, ধীমান ঘোষ প্রমাণ করেছেন আবার। তবে তাতে কোন সমস্যা হয়নি টাইটান্সের। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ আর আরিফুল মিলে দলকে রেখেছিলেন জয়ের পথেই।  

এর আগে একাদশে অনেকগুলো বদল নিয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল চিটাগাং ভাইকিংস। এমনকি ছিলেন না অধিনায়ক মিসবাহও। মন্থর ব্যাটিংয়ে সমালোচিত হয়ে নিজে থেকেই সরে গেছেন কিনা জানা যায়নি। তবে তাতে অবশ্য ফল মিলেছে। সব ম্যাচে শুরুতে ঝড় তোলা লুক রঙ্কি এবার ব্যর্থ হওয়ার পরও ১৬০ করতে পেরেছিল ভাইকিংসরা। ওই স্কোর পাইয়ে দেওয়ায় সবচেয়ে বড় অবদান এনামুল হক বিজয়ের। ম্যাচ শেষে অবশ্য তার ইনিংস চাপা পড়েছে টাইটান্স ঝড়ে।

এবার ভাইকিংসদের ব্যাটিং অর্ডারে উপরের দিকে সুযোগ মিলছিল না বিজয়ের। এই ম্যাচে খোলনলচে পালটে নামায় ওয়ানডাউনে নামতে পেরেছিলেন তিনি। তাতে শতভাগ সফল হয়েছেন। আউট হওয়ার আগে ৪৭ বলে করেন ৬২ রান। মেরেছেন ৫ চার আর তিনখানা ছক্কা।  দ্বিতীয় উইকেটে বিজয়ের সঙ্গে ৯৫ রানের জুটিতে ছিলেন সৌম্য সরকার। নড়বড়ে সৌম্য বারকয়েক ক্যাচ দিয়ে এবারও  কুপোকাত ত্রিশের ঘরে। এই দুজন ফেরার পর কোন রান না করেই ফেরেন সিকান্দার রাজা। খানিকটা পথ হারানো টাইটান্সদের স্বস্তি আসে নাজিবুল্লাহ জাদরান ও স্টিয়েন ফন সিয়েলের ব্যাটে। শেষ দিকে নেমে তাদের দুটি ছোট্ট ঝড় ভাইকিংসদের নিয়ে যায় দেড়শর ওপারে। ওই রান যে এতটাই মামুলি হবে তখনো হয়ত ভাবেনি চিটাগাং। 

খুলনার হয়ে এদিনও বল হাতে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন আবু জায়েদ রাহি। চার ওভার বল করে ২৫ রানে পেয়েছেন তিন উইকেট।তবে তার বলেই পড়েছেন তিনটি ক্যাচ। এর দুটো ধরলেও পাঁচ উইকেট হয়ে যেত রাহির। তবে ওই তিন উইকেটসহ ১০ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত তিনিই সর্বোচ্চ উইকেট পাওয়া বোলার। মাঝারি মানের দল নিয়েও রাহির মতো টেবিলের উপরের দিকে আছে তাদের দলও। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চিটাগাং ভাইকিংস:১৬০/৫  (রঙ্কি ৩, সৌম্য ৩২, বিজয় ৬২, জাদরান ২৪, সিকান্দার ০, ফন সিয়াল ২৪*, জর্ডান ১*; রাহি ৩/২৫, মাহমুদউল্লাহ ১/২২, শফিউল ০/৪১ অ্যাবট ০/৩৩)

খুলনা টাইটান্স:১৬৪/৫ (কিলিঙ্গার ১, রুশো ৪৯, ধীমান ৪, মাহমুদউল্লাহ ৪৮*, শান্ত ৯, আরিফুল ৩৪,ব্র্যাথওয়েট ১০*  ; সানজামুল ১/৩৩, সিকান্দার ১/২০, তানভির ১/২৯)

টস: খুলনা টাইটান্স

ফল: খুলনা টাইটান্স ৫ উইকেটে জয়ী। 

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রাইলি রুশো 

Comments

The Daily Star  | English

Protesters stage sit-in near Bangabhaban demanding president's resignation

They want Shahabuddin to step down because of his contradictory remarks about Hasina's resignation

40m ago