ভারতে সৌন্দর্যের খরা কাটালেন মানুসি ছিল্লর

Manushi Chillar
১৮ নভেম্বর ২০১৭, চিনের সান্যা সিটিতে ভারতের মানুষী ছিল্লর জয় করে নেন এবারের ‘মিস ওয়ার্ল্ড’-এর মুকুট। ছবি: এএফপি

‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতায় দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে খরায় ভুগছিলো ভারত। সর্বশেষ ২০০০ সালে প্রিয়াংকা চোপড়া ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ শিরোপা ঘরে এনে সারা পৃথিবীকে মনে করিয়ে দিয়েছিলেন ভারত সৌন্দর্যেরই দেশ। চলতি বছর মানুসি ছিল্লরের মাথায় যখন বিশ্বের সেরা সুন্দরীর মুকুট উঠলো তখন ‘বেওয়াচ’-খ্যাত অভিনেত্রী টুইট করে জানালেন, “… আমাদের উত্তরসূরি মিলল”।

১৯৯৭ সালের ১৪ মে ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে জন্মগ্রহণকারী মানুসি ছিল্লরের জন্যে এ বছরটি বেশ সাফল্যমণ্ডিত। গত ২৫ জুন তিনি অর্জন করেন ‘ফেমিনা মিস ইন্ডিয়া’ খেতাব। সেসময় তিনি ‘মিস ফটোগ্রাফিক’ পুরস্কারও জিতেন। এরপর, তিনি ভারতের হয়ে দাঁড়ান সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার বিশ্বমঞ্চে। সেখানেও সাফল্যের সোনালি মুকুট ধরা দেয় তাঁর হাতেই।

গতকাল (১৮ নভেম্বর) চীনের সান্যা সিটিতে মানুষীর মাথায় বিশ্ব সুন্দরীর মুকুট পরিয়ে দেন গতবারের সেরা সুন্দরী পুয়ের্তো রিকোর স্টিফেনি ডেল ভ্যালে। এছাড়াও, সেই প্রতিযোগিতায় মানুসি সেমিফাইনালিস্টও হন টপ মডেল, পিপল’স চয়েজ এবং মাল্টিমিডিয়া বিভাগে। তিনি সহ-বিজয়ী হন ‘বিউটি উইথ অ্যা পারপাস’ প্রতিযোগিতায়।

হরিয়ানার সরকারি ভগত ফুল সিং মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মানুসির ‘বিউটি উইথ অ্যা পারপাস’ প্রকল্পের নাম ‘প্রজেক্ট শক্তি’। এর মাধ্যমে তিনি নারীদের শারীরিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করেন। তিনি বিশটির মতো গ্রাম ঘুরে পাঁচ হাজারের বেশি নারীকে স্বাস্থ্যবিষয়ক সেবা দিয়েছেন।

চিকিৎসক বাবা মিত্র বসু ছিল্লর এবং চিকিৎসক মা নীলম ছিল্লরকে দেখে মানুসিরও ইচ্ছে হয় একজন চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করার। সে কাজ তিনি করে যাচ্ছেন ‘প্রজেক্ট শক্তি’-র মাধ্যমে। এখানেই থেমে নেই মানুসির প্রচেষ্টা। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তিনি গড়ে তুলছেন নিজেকে। পড়াশুনার পাশাপাশি শিখেছেন শাস্ত্রীয় নৃত্য কুচিপুড়ী। ভর্তি হয়েছেন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামায়। পড়াশোনা, নাচ, নাটক, পরিবার, বন্ধুবান্ধব, সমাজসেবা ইত্যাদিতে মানুষী সাজিয়ে নেন নিজের সময়। এর সঙ্গে এবার যুক্ত হলো নতুন দায়িত্ব।

এশিয়ার মধ্যে ভারতই প্রথম মিস ওয়ার্ল্ডের খেতাব জয় করেছিলো ১৯৬৬ সালে। সেবছর বার ডাক্তারির ছাত্রী রীতা ফারিয়া ভারত তথা এশিয়ার ইতিহাসে প্রথম মিস ওয়ার্ল্ড হয়েছিলেন। ঠিক অর্ধ শতাব্দী পর সেই একই খেতাব নিয়ে এলেন আরেক ডাক্তারি ছাত্রী— মানুষী ছিল্লর।

১৯৬৬ সালের পর এক দীর্ঘ খরা ছিলো ভারতের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায়। ১৯৯৪ সালে সে খরা কাটান ঐশ্বরিয়া রাই। তারপর ১৯৯৭ এ খেতাব পান ডায়না হেডেন, দুবছর পর যুক্তামুখী এবং ২০০০ সালে প্রিয়াংকা চোপড়া। ১৯৯৪ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতায় সুস্মিতা সেন মিস ইউনিভার্সের শিরোপা নিয়ে এসেছিলেন ভারতে। ২০০০ সালে সেই শিরোপা আবার আসে লারা দত্তের হাত ধরে।

মানুসি ছিল্লরের এমন সফলতায় দেশটির রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর কাছে থেকে যেমন এসেছে শুভেচ্ছা বাণী তেমনি বলিউডে বইছে আনন্দের দখিনা বাতাস।

Comments

The Daily Star  | English

Iran says not seeking nuclear weapons but will assert 'legitimate rights'

Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu said Israel had agreed to Trump's ceasefire proposal

2d ago