মৈত্রী এক্সপ্রেস: কিলোমিটার প্রতি ভাড়া বাড়তে পারে আড়াই টাকা!

সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন দেওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ এর কলকাতা-ঢাকা দুটি প্রান্তিক স্টেশনে শুল্ক-অভিবাসন পরিষেবা নিশ্চিত করে ভারত-বাংলাদেশের রেল কর্তৃপক্ষ। এবার দুই দেশের রেল প্রশাসন এই রুটের যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে কলকাতা-খুলনা রুটের নতুন ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’-এ যাত্রী ভাড়া বাড়ছে না।
Maitree Express
মৈত্রী এক্সপ্রেস। ফাইল ছবি

সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ট্রেন দেওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ এর কলকাতা-ঢাকা দুটি প্রান্তিক স্টেশনে শুল্ক-অভিবাসন পরিষেবা নিশ্চিত করে ভারত-বাংলাদেশের রেল কর্তৃপক্ষ। এবার দুই দেশের রেল প্রশাসন এই রুটের যাত্রী ভাড়া বাড়ানোর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে কলকাতা-খুলনা রুটের নতুন ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’-এ যাত্রী ভাড়া বাড়ছে না।

নতুন ভাড়া কার্যকর হলে ঢাকা-কলকাতার যাত্রীদের আগের ভাড়ার চেয়ে কিলোমিটার প্রতি এসি কেবিন এবং এসি চেয়ারের জন্যে যথাক্রমে দুই টাকা ৬৬ পয়সা এবং দুই টাকা ৩০ পয়সা বেশি দিতে হবে। ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ভারতীয় রেলের দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে পূর্ব রেলের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা রবি মহাপাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে ভাড়া বাড়ানোর চিঠি পাননি বলে জানিয়েছেন দ্য ডেইলি স্টারকে।

ওই কর্মকর্তার কথায়, “এমন খবর আমি দুই দেশের গণমাধ্যম থেকেই জানতে পেরেছি। আমাদের হাতে কোন সরকারি চিঠি এসে পৌঁছায়নি।”

তিনি আরো বলেন, ভাড়া বাড়ানোর যে কথা চলছে সেটি মৈত্রীর জন্যই হতে পারে। কলকাতা-খুলনা রুটের ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’-এর ভাড়া বাড়ানোর কোনও পরিকল্পনা নেই।

এই মুহূর্তে কলকাতা-খুলনার ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’-এর দুটি শ্রেণির একটি এসি (প্রথম শ্রেণি)-র ভাড়া ১৫ মার্কিন ডলার বা ১ হাজার ২০০ টাকা এবং এসি (চেয়ার) এর ভাড়া ১০ ডলার বা ৮০০ টাকা। অন্যদিকে, ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’-এর বর্তমান ভাড়া এসি কেবিন দুই হাজার ৩৮৬ টাকা এবং এসি চেয়ার এক হাজার ৬৩২ টাকা।

ভারতের রেল সূত্র বলছে, আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে কলকাতা-ঢাকা-কলকাতা রুটের ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ এ ভাড়া বেড়ে দাঁড়াবে এসি কেবিন তিন হাজার ৪০০ টাকা এবং এসি (চেয়ার) দুই হাজার ৫০০ টাকা। ভাড়া বৃদ্ধির আনুপাতিক হিসাব করলে এই বৃদ্ধির হার পঞ্চাশ শতাংশের কাছাকাছি। তবে এ ভাড়ার মধ্যেই যাত্রীদের ভ্রমণ কর এবং ভ্যাট ধরে নেওয়া থাকবে। এই ভাড়ার বাইরে কোনও টাকা দিতে হবে না যাত্রীদের।

ভারতীয় রেল সূত্র আরো নিশ্চিত করেছে যে, ভাড়া বাড়ার প্রস্তাবটি মূলত বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। তাদের যুক্তি, বাংলাদেশের রেলপথের মধ্যে সবচেয়ে লাভবান পথ হিসেবে কলকাতা-ঢাকা-কলকাতা রুটকে ধরে নিয়েছে। সপ্তাহের ছয় দিন দুই প্রান্ত থেকে এই পরিষেবা দিচ্ছে দুই দেশের রেল। গত দুই-আড়াই বছর ধরে ঢাকা থেকে কলকাতামুখী মৈত্রীর ৪৫৬টি আসন বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এই চাহিদা আগামীতে আরো বাড়বে। কেননা, এই রুটে ভ্রমণের সময় কমে গিয়েছে চার ঘণ্টা। মাত্র আট ঘণ্টায় কলকাতায় পৌঁছাতে পারেন ঢাকার যাত্রীরা।

কিছুদিন আগে পুরো ট্রেন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়। ঢাকা থেকেই যাত্রীরা শুল্ক ও অভিবাসন করে ট্রেন উঠছেন আর কলকাতায় নেমে আবার শুল্ক-অভিবাসনের কাজ করে নিজের গন্তব্যে পৌঁছতে পারছেন। এই সুযোগ-সুবিধা পাওয়ায় যাত্রীরা মৈত্রী-মুখী হবেন। তা ছাড়া, টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্য বেড়ে যাওয়া একটি অন্যতম কারণ বলেও বাংলাদেশের রেল মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে। সব কিছু বিবেচনা করে ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয়ও ভাড়া বাড়ার প্রস্তাবে সায় দিয়েছে বলে সূত্র থেকে নিশ্চিত করা হয়।

কলকাতা-ঢাকার মধ্যে মোট রেলপথ ৩৭৫ কিলোমিটারের মধ্যে কলকাতা থেকে গেদে সীমান্ত পর্যন্ত ভারতীয় অংশে রয়েছে ১১৪ কিলোমিটার পথ এবং সীমান্তের ওপারের বাংলাদেশের দর্শনা থেকে ঢাকা ক্যান্টনম্যান্ট স্টেশন পর্যন্ত পথ ২৬১ কিলোমিটার।

Comments

The Daily Star  | English

Abu sayed’s death in police firing: Cops’ FIR runs counter to known facts

Video footage shows police shooting at Begum Rokeya University student Abu Sayed, who posed no physical threat to the law enforcers, during the quota reform protest near the campus on July 16. He died soon afterwards.

6h ago