বিডিআর বিদ্রোহ: ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল
পিলখানায় অধুনালুপ্ত বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদরদপ্তরে ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে নিম্ন আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা করে ১৫২ জনের মধ্যে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
রায়ে আদালত আটজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির দণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়াও, চারজন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে একজন মারা গেছেন।
রায়ে হাইকোর্ট ১৪৬ জন আসামির যাবজ্জীবন বহাল রেখেছেন, ১৯৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা এবং ৪১ জনকে খালাস দিয়েছেন।
মোট অভিযুক্তদের মধ্যে ২৮ জন নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে কোন আপিল করেননি। এছাড়াও, ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি চলাকালে তিনজনের মৃত্যু হয়।
বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ আজ (২৭ নভেম্বর) বিকেলে এ রায় দেন। বেঞ্চের অপর বিচারপতিরা হলেন মো. আবু জাফর সিদ্দিকী এবং মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।
বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় ঘোষণায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহ ছিল সেসময়কার ৪৮দিন বয়সী সরকারের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এটি দেশের গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের জন্য ছিল হুমকি।
বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, আইনের শাসন অমান্য করে, বিডিআর জাওয়ানেরা ইতিহাসের জঘন্যতম অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সশস্ত্র বাহিনীর ৫৭ জন মেধাবী কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করেন। এটি ছিল রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা নষ্টের চক্রান্ত।
তিনি বলেন বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য ছিল, “নবনির্বাচিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারকে অস্থিতিশীল করা”, “দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করা” ও “জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ক্ষতিগ্রস্ত করা”।
উল্লেখ্য, নিম্ন আদালত ১৫০ বিডিআর সদস্য এবং দুজন বেসামরিক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। এরপর, হাইকোর্টে বিডিআর বিদ্রোহ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয় ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে।
আরো পড়ুন:
Comments