নতুন আইনে, নতুন চেহারায় ৫৭ ধারা

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে আইন প্রণয়নের সাথে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে ৫৭ ধারার ওই বিষয়বস্তুগুলোই একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নতুন প্রস্তাবিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৭’ তে রাখা হচ্ছে। নতুন আইনে একই ধরনের অপরাধের কথা উল্লেখ থাকলেও সাজার মাত্রা কম রাখা হচ্ছে।
Section 57

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারা বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে আইন প্রণয়নের সাথে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে ৫৭ ধারার ওই বিষয়বস্তুগুলোই একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নতুন প্রস্তাবিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৭’ তে রাখা হচ্ছে। নতুন আইনে একই ধরনের অপরাধের কথা উল্লেখ থাকলেও সাজার মাত্রা কম রাখা হচ্ছে।

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে গতকাল আইন মন্ত্রণালয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের পর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সাংবাদিকদের বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাসহ অন্যান্য বিতর্কিত বিধানগুলো বাদ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, প্রস্তাবিত আইনটি অনুমোদনের জন্য এখন মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে। আইসিটি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬ ৫৭ ও ৬৬ ধারা লোপ করার জন্যও এতে প্রস্তাব থাকবে।

৫৭ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অথবা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এধরনের তথ্যাদির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে উসকানি প্রদান করা হয়, তাহলে এ কাজ অপরাধ বলে গণ্য হবে। এই আইনে অজামিনযোগ্য ধারার পাশাপাশি সর্বনিম্ন ৭ বছর ও সর্বোচ্চ ১৪ বছর কারাদণ্ডসহ সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রয়েছে।

অপরাধের অস্পষ্ট সংজ্ঞা, জামিন অযোগ্য ধারা ও অপপ্রয়োগের সুযোগ রাখায় আইনটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্ক রয়েছে। বিরুদ্ধ মত দমনের কাজে ৫৭ ধারাকে হাতিয়ার করা হচ্ছে বলেও বিভিন্ন সময় অভিযোগ উঠেছে। সেই সাথে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলাতেও বিতর্কিত এই ধারার অপ্রয়োগ দেখা গেছে। ধারাটির অপপ্রয়োগ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এ ধরনের মামলা নেওয়ার আগে পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমতি নিতে দেশের সব থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেও বিভিন্ন ধারায় ৫৭ ধারার অনুরূপ অপরাধের কথা উল্লেখ রাখা হয়েছে। তবে নতুন আইনে প্রথম বার অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় বা ততোধিকবার একই অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

5h ago