মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ না বলার ব্যাখ্যা দিলেন পোপ
মিয়ানমারে সফরের সময় দেশটির বাস্তুচ্যুত সংখ্যালঘু মুসলিমদের ‘রোহিঙ্গা’ না বলার একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। তিন দিনের সফর শেষে শনিবার রোমের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার পর পোপ তার বিশেষ উড়োজাহাজ পাপাল প্লেনে সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনার পথ রুদ্ধ না করে মিয়ানমারের বেসামরিক ও সামরিক নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি তার অবস্থান ব্যক্ত করতে চেয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, মিয়ানমারের নেতৃবৃন্দের কাছে তিনি পরিষ্কারভাবে তার বার্তা পৌঁছাতে পেরেছেন।
শনিবার পোপ উড়োজাহাজে বসে সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকগুলোতে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অধিকারের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানে ছিলেন। শুক্রবার ঢাকায় এরকম কয়েকজন শরণার্থীর সাথে দেখা করার আবেগঘন মুহূর্তে তিনি চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি বলেও তিনি সাংবাদিকদের জানান।
পোপ বলেন, “মূল বক্তব্যটা পৌঁছে দেওয়াকেই আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। নিজের অবস্থান ব্যক্ত করে অন্যপক্ষের প্রতিক্রিয়াও শুনতে হবে।”
“আমি জানতাম আনুষ্ঠানিক বক্তব্যের সময় ওই শব্দটা উচ্চারণ করলে তারা আমাদের মুখের ওপর আলোচনার দ্বার রুদ্ধ করে দিত। প্রকাশ্যের বক্তৃতার সময় আমি পরিস্থিতির বর্ণনা করেছি, বলেছি কেউ নাগরিকত্বের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে পারে না। আমি এসব বলে একটা পরিবেশ তৈরি করেছি যেন ব্যক্তিগত বৈঠকগুলোতে এ সম্পর্কে আলোচনা গভীরে নিয়ে যাওয়া যায়।”
মিয়ানমার সফরে গিয়ে পোপ ফ্রান্সিস প্রকাশ্য ভাষণে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করা থেকে বিরত ছিলেন। স্থানীয় রোমান ক্যাথলিক চার্চের নেতাদের পরামর্শেই তিনি শব্দটি ব্যবহার করেননি। তাদের আশঙ্কা ছিল, এমনটা হলে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু খ্রিষ্টানরাও সেনাবাহিনীর রোষানলের শিকার হতে পারে।
গত সোমবার ইয়াঙ্গুনে পৌঁছানোর পর পরই দেশটির সামরিক কর্মকর্তারা পোপের সাথে সাক্ষাৎ করেন। বেসামরিক নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাতের পরিকল্পনা থাকলেও সামরিক বাহিনীর চাপের কারণে সোমবারই তাদের বৈঠক হয়।
Comments