৬৫ বছরে এমএ পাশ

স্নাতক পাশ করার ৪৫ বছর পর ৬৫ বছরের এক বর্ষীয়ান ছাত্রী এমএ পাশ করে অধ্যবসায় আর ইচ্ছা শক্তির নজির গড়েছেন। এই ঘটনাটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়ার বালি এলাকার।
ওই ছাত্রীর বাবার বাড়ি বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া জেলা উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট মহকুমায়।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলতি বছর এমএ পাশ করেছেন প্রবীণ এই ছাত্রীর নাম পূর্ণিমা বিশ্বাস। এই খবরে এখন হইচই পড়ে গিয়েছে হাওড়ার বালি এবং বসিরহাটের ধলতিথা তার জন্মভিটেয় গ্রামে।
পূর্ণিমা বিশ্বাসের স্বামী রাজ্য সরকারের একজন কর্মকর্তা। এক ছেলে ও এক মেয়ে দুজনই উচ্চশিক্ষিত, বড় চাকুরীজীবী।
কিন্তু কেন পূর্ণিমা বিশ্বাস এতো দেরীতে এমএ পরীক্ষায় বসলেন, এর উত্তর তিনি জানালেন, ১৯৭২ সালে বসিরহাট কলেজ থেকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের স্নাতক পাশ করেন। সে বছর এমএ ভর্তি হওয়ার সময় বিয়ের ঠিক হয়ে যায় এবং হাওড়ার বালির বাসিন্দা দিলীপ বিশ্বাসের সঙ্গে পরিণয়ে আবদ্ধ হন। আট ভাই-বোনের বিশাল সংসারের জন্য সে সময় তাকে বিয়েতে রাজি হতে হয়েছিল। এরপর বিবাহিত জীবন সন্তান-তাদের লেখাপড়া; স্বামীর অসুস্থতা কিংবা নিজের অসুস্থতায় বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও এমএ পরীক্ষায় বসতে পারেননি।
২০১৫ সালে ভারতের উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্তভাবে এমএ পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করান। কিন্তু সেবার হঠাৎ স্বামী দিলীপ বিশ্বাসের হার্ট অ্যাটাক হয়। স্বামীর সুস্থতার জন্য সে বছর আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। এমন কি ২০১৬ সালেও রেজিস্ট্রেশন করার পর নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পূর্ণিমা বিশ্বাস। তাই সেবারও হয়নি স্বপ্নের এমএ পরীক্ষা দেওয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এবছর সব কিছুই যেন মিলে যায় তার, পরীক্ষায় বসেন পূর্ণিমা বিশ্বাস এবং ভাল মার্কস নিয়ে পাশ করেন।
কদিন আগে মার্কশিট এবং সার্টিফিকেট হাতে পেয়েছেন ৬৫ বছরের পূর্ণিমা বিশ্বাস।
বিশ্বাস পরিবারের সদস্য প্রেমা চন্দ জানান, এই মুহূর্তে শুধু আমাদের পরিবারের নয়, গোটা রাজ্যের কাছে একটা দৃষ্টান্ত হতে পারেন পূর্ণিমা বিশ্বাস। অধ্যবসায় থাকলে মানুষ সবই পারে। বার্ধক্য ছুঁয়েও গভীর রাত পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। সংসার সামলেও পরীক্ষায় বসেছেন।
Comments