জীবনে কত কিছুই হয়: সাকিব

সাবেক কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের অভিযোগ, এর আগে বিতর্কে জড়িয়ে দায়িত্ব হারানো। ‘কূটনৈতিক’ সাকিব সব প্রশ্নই এড়িয়েছেন শান্ত মেজাজে।
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

২০১১ সালে তেতো অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অধিনায়কত্ব হারিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। ছয় বছর পর একে একে ফিরে পেয়েছে টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট দলের দায়িত্ব। তবে আগের কোন কিছুই নাকি তার মনে নেই। নতুন পাওয়া দায়িত্ব পালন করতে চান নিষ্ঠার সঙ্গে।

২০০৯ থেকে ২০১১। দুই বছর সব ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান। ২০১১ সালে নানা বিতর্কের মধ্যে তাকে অব্যাহতি দিয়ে মুশফিকুর রহিমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ছয় বছর পর সেই মুশফিকুর রহিমের কাছ থেকে ফের ফিরে পেয়েছেন টেস্ট অধিনায়কত্ব। মাশরাফি মর্তুজার অবসরে টি-টোয়েন্টি দলের দায়িত্ব দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই শুরু করেছিলেন। এবার দুই ফরম্যাটে টাইগারদের নেতা তিনি।

টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়ার একদিন পর মুখোমুখি হলেন গণমাধ্যমের। বিপিএলে তার দল ঢাকা ডায়নামাইটস এখন ফাইনালে। ওই ফাইনালের প্রস্তুতির  হালচাল  ছাপিয়ে গেল তার টেস্ট অধিনায়কত্ব পাওয়ায়। সাবেক কোচ চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের অভিযোগ, এর আগে বিতর্কে জড়িয়ে দায়িত্ব হারানো। ‘কূটনৈতিক’ সাকিব সব প্রশ্নই এড়িয়েছেন শান্ত মেজাজে।

আবার টেস্ট অধিনায়ক হয়ে কেমন লাগছে? 

সাকিব: নতুন দায়িত্ব। টেস্টে গত কিছুদিন আমরা ভালোই করেছি। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জিতলাম, অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের সঙ্গে জিতলাম এখানে। এই জায়গা থেকে কতটা ভালো করা যায়, সেই চেষ্টাই থাকবে।

প্রথম দফা থেকে কতটা বদলাবে?

সাকিব:বলা মুশকিল কতটা পরিবর্তন আসবে। তবে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।

আগের বারের অভিজ্ঞতা?

সাকিব:আমার তো ওটাই মনে নাই, কি হয়েছিল?

ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল..

সাকিব: ঠিক আছে, জীবনে কত কিছুই হয়…

এবারের চ্যালেঞ্জ…

সাকিব:জানি না তো, এখন আপাতত বিপিএল চ্যালেঞ্জ নিয়ে আছি। বিপিএল শেষ হোক, জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু হলে দেখা যাবে কি কি চ্যালেঞ্জ আছে। যখন পরিকল্পনা করা হবে, তখন বোঝা যাবে।

সামনে বাইরে সিরিজ বেশি…

সাকিব: প্রতিটি টুর্নামেন্ট বা সিরিজই কঠিন। সেটা দেশে হোক বা বাইরে। হয়ত দেশে একটু স্বস্তি বোধ করি আমরা। বিদেশে যেহেতু সাফল্য নেই, সেহেতু আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যায়। একই সঙ্গে এটাও সুযোগ ভালো কিছু করার। কোনো না কোনো কিছু তো কেউ না কেউ শুরু করবে। যদি শুরু হয়, তাহলে খারাপ কী! যদিও কাজটা কঠিন। কিন্তু আমাদের যে দল আছে, আমরা যেভাবে খেলছি, অনেক কিছু করা সম্ভব।

২০১১ আর ২০১৭ পার্থক্য?

সাকিব:সেটা আপনারা ভালো বলতে পারবেন.

৬ মাসের ছুটি চেয়েছিলেন। এখন? 

সাকিব: দেখা যাক, কি হয়।

হাথুরুসিহে অনেক কথা বলে গেছেন।

সাকিব: না। একেকজনের ব্যক্তিগত কথা। এটা নিয়ে মন্তব্য করা উচিত হবে না।

টেস্টে আপনার ডেপুটি করা হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে...

সাকিব: আমরা বেশ কয়েকজনই আছি, যারা দলের নেতা। এবং যে কোনো সিদ্ধান্তই আমরা একসঙ্গে মিলেই নেই। কেউ অধিনায়ক থাক বা না থাক, সেটা ব্যাপার নয় যখন আমরা মাঠে খেলতে নামি। সবার সাহায্যই দরকার হবে। আর রিয়াদ ভাই তো কয়েক বছর ধরেই বিপিএলে ভালো অধিনায়কত্ব করছে। নেতৃত্বগুণ উনার ভেতর অনেক আগে থেকেই আছে। আমার কাছে মনে হয়, আমার জন্য কাজটি সহজ হবে।

আগের বারের নেতৃত্বের সময় আপনার উপর অনেক নির্ভর করত দল। আর এখন অনেক পারফরমার। কাজটা কি সহজ এখন?

সাকিব: অবশ্যই কাজটা সহজ হবে। এখন বেশির ভাগ ক্রিকেটাররাই প্রায় সবসময় পারফর্ম করছে। ক্রিকেটাররা যখন পারফর্ম করে, অধিনায়কের ওরকম কোনো কাজই থাকবে না। আশা করি সবাই মিলে ভালো করবে। সবাই মিলে ভালো করলেই দল ভালো করবে।

হাথুরুসিংহে বলেছিলেন আপনার ছুটি মানতে পারেননি …আর  বছরে দুটির বেশি লিগ খেলার অনুমতি নেই। এই ব্যাপারে কি বলবেন?

সাকিব: কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হবে। কি ভাবছেন?

সাকিব: ভবিষ্যৎ আমার জন্য অনুমান করা কষ্ট। যেটা সামনে আছে সেটা নিয়েই চিন্তা করতে পারি। কি করলে কি হবে, অত বেশি চিন্তা করার সময় নেই।

আবার অধিনায়ক হবেন এটা প্রত্যাশিত ছিল কিনা?

সাকিব: আমি কোনো কিছু প্রত্যাশা করি না। কিছু ছেড়েও দেই না। আসলে ভালো, না আসলে ঠিক আছে।

জাতীয় দলের নেতৃত্ব কতটা উপভোগ করেন? 

সাকিব: উপভোগের চেয়ে বেশি আমার কাছে মনে হয় এটা দায়িত্ব। দায়িত্বটি অবশ্যই চেষ্টা থাকবে সেরা ভাবে যেন পালন করতে পারি।

ঢাকার অনুশীলনে সাকিব।
বিপিএলের ফাইনাল নিয়ে কি পরিকল্পনা?

সাকিব: দুইটি দলের সঙ্গেই খেলেছিল রংপুরের সঙ্গে দুটি ম্যাচ, কুমিল্লার সঙ্গে তিনটি। সবাই সবার সম্পর্কে এখন জানে। যাদের সঙ্গেই খেলা হোক, আশা করি ভালো একটা ম্যাচ হবে। যেহেতু একটি দলের হয়ে খেলছি, অবশ্যই চেষ্টা থাকবে দল যেন চ্যাম্পিয়ন হয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো, ওই দিনটিতে কে ভালো খেলে। টি-টোয়েন্টিতে একজন-দুজনও খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, ভালো একটা ম্যাচ হোক। সবাই উপভোগ করুক খেলাটা।

ঢাকার স্পিন আক্রমণ কি ফ্যাক্টর?

সাকিব: আমাদের বোলিং আক্রমণ ভালো। তিন মূল স্পিনারের পাশাপাশি রনিও পুরো মৌসুমে ভালো বোলিং করেছে। মোসাদ্দেকও খুব ভালো করছে। সব মিলিয়ে বোলিং আক্রমণ ভালো করছে। ব্যাটিং মাঝেমধ্যে ব্যর্থ হলেও এখন ধারাবাহিক। টুর্নামেন্টের এই সময়টাতে এই ধারাবাহিকতটাই গুরুত্বপূর্ণ। মোমেন্টামও আছে। চেষ্টা থাকবেআরেকটি ফাইনাল জেতার। এখানে অনেক বড় বড় ক্রিকেটার আছেন। তাদের সবার ভেতরই ভালো করার তাড়া থাকে এরকম ম্যাচে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Dhaka stares down the barrel of water

Once widely abundant, the freshwater for Dhaka dwellers continues to deplete at a dramatic rate and may disappear far below the ground.

3h ago