নতুন করে ৪০টি রোহিঙ্গা গ্রামে আগুন দেওয়া হয়েছে
(স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি তুলনা করতে ছবির মাঝের বারটিকে বামে অথবা ডানে টানুন)
স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে মিয়ানমারে নতুন করে ৪০টি রোহিঙ্গা গ্রামে আগুন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে গত ২৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে ধ্বংস করা রোহিঙ্গা গ্রামের সংখ্যা বেড়ে ৩৫৪ হয়েছে বলে আজ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে রোহিঙ্গাদের এমন অন্তত ৪০টি গ্রাম চিহ্নিত করেছে যেগুলো আংশিক বা পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। গত আগস্টের শেষ সপ্তাহে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর থেকে দেশটির সেনাবাহিনী নির্বিচারে নিজ দেশের এই জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রাণে বাঁচতে তখন থেকে ছয় লাখ ৫৫ হাজারের বেশি মানুষ সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী উত্তর রাখাইনে রোহিঙ্গা গ্রামগুলোতে নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ, গণহারে গ্রেফতার, অগ্নিসংযোগ করছে। বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের বর্ণনায় এমন নৃশংস নিপীড়নের চিত্র উঠে এসেছে। এইআচডব্লিউ বলছে, রোহিঙ্গাদের ওপর এই জাতিগত নিধন মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।
দুই মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে গত ২৩ নভেম্বর মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (মৌ) স্বাক্ষরিত হয়। স্যাটেলাইটের ছবিতে মৌ স্বাক্ষরের সপ্তাহেও উত্তর রাখাইনে কয়েক ডজন স্থাপনা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
এইচআরডব্লিউ’র এশিয়া ডিরেক্টর ব্র্যাড এডামস বলেছেন, নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশের সাথে সমঝোতা হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই রোহিঙ্গা গ্রামে আগুন দেওয়া প্রমাণ করে যে মিয়ানমারের প্রতিশ্রুতি ভেলকিবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী যে কথাটা অস্বীকার করে আসছে, স্যাটেলাইটের ছবি ঠিক সেটাই প্রমাণ করে। রোহিঙ্গাদের গ্রামগুলো এখনও ধ্বংস করা হচ্ছে। দেশে ফেরা রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিয়ে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেগুলো বিশ্বাসযোগ্য নয়।
Comments