তিস্তা চুক্তি

মমতাকে ইতিবাচক ভূমিকা নেওয়ার অনুরোধ করলেন ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের
কলকাতায় বাংলাদেশ বিজয় উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে বাংলাদেশ সরকারের সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ছবি: স্টার

“বাংলাদেশের উত্তর জনপদের মানুষ কষ্টের মধ্যে তাকিয়ে আছেন। পানি আমাদের জন্য একটা সমস্যা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে যে আশ্বাস দিয়েছেন, আমরা আশা করবো তিস্তা-ফেনী নদীসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে আমরা বাস্তব সম্মত, যৌক্তিক, ন্যায় সঙ্গত একটা সমাধানে পৌঁছতে পারবো। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে আমরা খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখি, বাঙালি হিসাবে আমাদের মধ্যে আত্মার একটা বন্ধনও আছে। সেদিক থেকে আমরা আশা করবো, প্রত্যাশা করবো ভারত সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে আমাদের দিদি মমতা ব্যানার্জির ইতিবাচক সাড়া পাবো।”

১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে কলকাতায় বাংলাদেশ বিজয় উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে বাংলাদেশ সরকারের সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমন মন্তব্য করেন।

এদিন এই অনুষ্ঠানে বর্ষীয়ান মন্ত্রী ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পঞ্চায়েত বিষয়ক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সাংবাদিক আবেদ খান, কলকাতার বাংলাদেশ উপদূতাবাসের ডেপুটি হাইকমিশনার তৌফিক হাসান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের একদম শেষে এসে পৌঁছান ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী।

অতিথির আসনে ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের নারী ও মহিলা বিষয়ক মন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ  ও কলকাতার গণ্যমান্য অতিথিবর্গ।

ওবায়দুল কাদের মুক্তিযুদ্ধ, জাতির জনকের ৭ মার্চের ভাষণ এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে অনুষ্ঠানে দীর্ঘ বক্তব্য রাখেন।

ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক আগের যে কোনও দিনের তুলনায় অনেক দৃঢ় ও মজবুত অবস্থানে আছে বলেও তিনি তার বক্তব্যে ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে ৫৮ বছরের গ্লানি সরে গিয়েছে।

তিনি বলেন, তিস্তা, ফেনীসহ অভিন্ন নদীর পানির হিস্যার বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার মধ্যদিয়ে সমস্যা সমাধান করতে হবে। বাংলাদেশ সফরের সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির তিস্তা চুক্তির বিষয়ে যে আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন সেই আস্থার ওপর ভরসা আছে বাংলাদেশের।

এই সময় তিনি বলেন, উত্তর জনপদের মানুষ কষ্টের মধ্যে তাকিয়ে আছে। পানি আমাদের জন্য একটা সমস্যা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে যে আশ্বাস দিয়েছেন, আমরা আশা করবো তিস্তা-ফেনী নদী সহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনে আমরা বাস্তব সম্মত, যৌক্তিক, ন্যায় সঙ্গত একটা সমাধানে পৌঁছতে পারবো।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির তাকে আমরা খুব শ্রদ্ধার চোখে দেখি, বাঙালি হিসেবে আমাদের মধ্যে আত্মার একটা বন্ধন আছে। সেদিক থেকে আমরা আশা করবো, প্রত্যাশা করবো ভারত সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে পজেটিভলি তিনিও আমাদের দিদি মমতা ব্যানার্জি তার আমরা ইতিবাচক সাড়া পাবো।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে তিনি ভারত সফর করবেন। সেই সময় ভারতের অন্য রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গেও আসবেন এবং মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে অমীমাংসিত সমস্যা নিয়ে কথা বলবেন।

ওয়ায়েদুল কাদের আরও বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার সরকারের মতো সংখ্যালঘুবান্ধব কোনও সরকার আর হয়নি। তবে কিছুকিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনাও ঘটেছে যেমন রংপুর-নাছিরনগর ইত্যাদি। তার ভাষায়, দুর্বৃত্তদের কোনো দল নেই। তারা কেন্দ্রীয় কোনো নির্দেশের অপেক্ষা করে না। একটা স্বার্থান্বেষী মহল সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে ভিটেমাটি থেকে উৎখাত করতে চায়-তাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর।

মঞ্চে উঠার আগে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান এই নেতা। জিয়া অরফানেজ ও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় দুদকের খালেদা জিয়ার যাবজ্জীবন সাজা চাওয়ার প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আদালতের বিষয় আমাদের কিছু করার নেই। দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগের ভিত্তিতে বেগম জিয়া বিচারকার্য চলছে। এগুলো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ফখরুদ্দিনে সময়ে মামলাগুলি রুজু হয়েছিল। বেগম জিয়া বারবার সময় নিয়েছেন। ১৫০ বার সময় চেয়েছেন। সাড়ে আট মাসের বেশি বিলম্বিত করেছেন। বিচারবিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন, যখন কোনো রায় আওয়ামী লিগের বিপক্ষে যাবে তখন স্বাধীন। সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করেনি, এই রায় সরকার দেয়নি। আদালত দিয়েছে।

অভিনেত্রী শমী কায়সার ও রোকেয়া প্রাচীর উপস্থাপনায় আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ ও এসডি রুবেল অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago