ফায়ার সার্ভিস বাঁচাল গরুর জীবন
পদ্মার চোরাবালিতে ডুবতে থাকা একটি গরুকে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজনের চেষ্টায় উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে রাজশাহী শহরের কামারপাড়া এলাকার বাসিন্দারা বিপদগ্রস্ত গাভীটিকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।
চোরাবালিতে গরুটিকে প্রথম যারা দেখতে পান তাদের মধ্যে স্থানীয় একজন বাসিন্দা আব্দুল ওয়াদুদ জানান, “সাহায্যের জন্য গরুটি আর্তস্বরে ডাকছিল, উঠে আসের জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিল। কিন্তু যতই চেষ্টা করছিল মনে হচ্ছিল সে ততই ডুবে যাচ্ছিল।”
তিনিসহ কয়েকজন মিলে গরুটিকে টেনে তুলতে প্রায় ঘণ্টাখানেক চেষ্টা চালান। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ান জাতের গরুটিকে কিছুতেই তুলতে না পেরে সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ফায়ার সার্ভিস ডাকা হয়।
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফরহাদ হোসেন জানান, খবর পেয়েই ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন উদ্ধারকারী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। স্থানীয়দের সাথে মিলে ল্যাডার, পোল ও রোপ দিয়ে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিপদগ্রস্ত গরুটিকে তারা টেনে তুলতে সক্ষম হন। এই উদ্ধার অভিযান চাক্ষুষ করতে ততক্ষণে নদীর পাড়ে প্রচুর লোকজনের ভিড় জমে যায়।
উদ্ধারকারীদের যেন বালুতে নামতে না হয় সে কারণে গরুটির চারপাশে প্রথমে বাঁশ ও ল্যাডার রাখা হয়। এর পর পেটের নিচে ল্যাডার দিয়ে এর সাথে গরুটিকে হোস পাইপ ও রশি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। পরে রশি ও হোস পাইপ ধরে গরুটিকে অক্ষত অবস্থায় টেনে তোলা হয়।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক চৌধুরী সারোয়ার জাহান জানান, নদীর ধারের ভেজা বালুতে চোরাবালি তৈরি হতে পারে। বালু ও পানির সম্পৃক্ত এই মিশ্রণ ভারী কোনো বস্তুর ওজন নিতে পারে না।
তিনি আরও জানান, “মানুষ বা অন্য কোনো প্রাণী যখন চোরাবালি থেকে নিজে নিজেই বের হওয়ার চেষ্টা করে তখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। বের হওয়ার জন্য তারা বালুর ওপর চাপ দেয় ও আরও ডুবতে থাকে। এরকম পরিস্থিতিতে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করা বুদ্ধিমানের কাজ।”
Comments