শান্তিনিকেতনে শুরু হল ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা

শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা এখন হাজার হাজার পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। বীরভূমের বোলপুর মহকুমায় অবস্থিত কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্র আবহেই এই মেলা বসেছে এবার।
shantiniketan poush mela
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নিজ হাতে গড়া বিশ্বভারতীতে পৌষ উৎসব। ছবি: স্টার

শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা এখন হাজার হাজার পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত। বীরভূমের বোলপুর মহকুমায় অবস্থিত কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বভারতীতে রবীন্দ্র আবহেই এই মেলা বসেছে এবার।

ইতিহাস বলছে, ১৮৪৩ সালের ২১ ডিসেম্বর অর্থাৎ ১২৫০ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ২০ জন অনুগামীকে নিয়ে রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশের থেকে ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন। এটিই শান্তিনিকেতনের পৌষ উৎসবের মূল ভিত্তি।

১৮৯১ সালের ২১ ডিসেম্বর অর্থাৎ ১২৯৮ বঙ্গাব্দের ৭ পৌষ শান্তিনিকেতনে একটি ব্রাহ্মমন্দির স্থাপিত হয়। ১৮৯৪ সালে ব্রাহ্মমন্দিরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্মরণে মন্দিরের উল্টোদিকের মাঠে একটি ছোটো মেলা আয়োজন করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে শান্তিনিকেতনের সেই পৌষমেলা শুধুমাত্র বীরভূম জেলার নয়, অন্যান্য অঞ্চলের পর্যটকদেরও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে।

বিশ্বভারতীর উপাচার্য স্বপন কুমার দত্ত জানিয়েছেন, এবার মেলার ১৩০তম আয়োজন। প্রতিবছর তিন দিন হলেও এবছর আয়োজক বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তা বাড়িয়ে ছয় দিন করেছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থার এবার জোরদার করা হয়েছে। মেলার বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা।

বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্রের বহু ছাত্রছাত্রী-গবেষক পৌষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। এদিন সকালে বৈতালিকের মধ্যদিয়ে মেলার প্রধান আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। ছাতিমতলায় বিশেষ উপাসনাও অনুষ্ঠানের অন্যতম অংশ ছিল।

ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলায় বাংলা লোকসংগীত বিশেষ করে বাউল গানের আয়োজন থাকবে এবার। এছাড়া লোকসংগীতের সঙ্গে লোকনৃত্য ও লোকক্রীড়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। শুধু তাই নয়, শান্তিনিকেতনের এই মেলা হলেও পশ্চিমবঙ্গের সব অঞ্চলের সাংস্কৃতিক নিদর্শনের একটি প্রদর্শনীও চলবে পৌষ মেলায়। শান্তিনিকেতনে অর্থাৎ বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রীরা নাচ, গান ও নাটকের আয়োজন করেছেন এবার। এছাড়া আগামী পাঁচ দিন জুড়েই হরেক রকম অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে আয়োজকরা।

বছরের অন্য সময়ে শান্তিনিকেতনে গড়ে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পর্যটক আসেন। কিন্তু শুধুমাত্র পৌষ মেলার সময়টিতে এই সংখ্যাটি বেড়ে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে পর্যন্ত উন্নীত হয়। সরকারিভাবে এখানে ৭৫টি আবাসিক হোটেলে পর্যটকরা থাকতে পারেন। কিন্তু এছাড়াও শহরের প্রচুর সংখ্যক বেসরকারি আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থা থাকায় পর্যটকরা এই আয়োজনে অংশ নিতে ভিড় জমান। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

Comments

The Daily Star  | English
Onion price  Tk204 per kg | Onion prices surge in Dhaka after India’s export ban extension

Onion prices surge for supply squeeze after India’s export ban extension

Retailers were selling the homegrown variety of onion at Tk 200 a kg at Karwan Bazar today, compared with Tk 130 on Thursday

4h ago