টাইম ম্যাগাজিনের চোখে ২০১৭ সালের সেরা ১০ গান
বিদায়ী বছরটিকে অনেককেই স্মরণ করতে হবে সংগীতের জন্যে। কেননা, এ বছরেই সৃষ্টি হয়েছে সংগীত ইতিহাসের এক নতুন রেকর্ড। সেই রেকর্ডে রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিমের মেলবন্ধন। এছাড়াও, বিশ্বসংগীতে নতুনেরও বিজয় কেতন উড়েছে এ বছরে। টাইম ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে ২০১৭ সালের সেরা ১০টি গানের তালিকা তুলে ধরা হলো ডেইলি স্টারের পাঠকদের জন্যে।
কেলসি ব্যালেরিনি’র ‘লিজেন্ডস’
১০. কেলসি ব্যালেরিনি, ‘লিজেন্ডস’
যুক্তরাষ্ট্রের উঠতি সংগীতশিল্পীদের একজন কেলসি ব্যালেরিনি। টেনেসিতে ১৯৯৩ সালে জন্ম নেওয়া ব্যালেরিনির প্রথম অ্যালবাম ‘দ্য ফার্স্ট টাইম’ প্রকাশিত হয় ২০১৫ সালে। এরপর, তাঁর দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘আনঅ্যাপোলোজেটিক্যালি’ প্রকাশ পায় চলতি বছরে। এই অ্যালবামেরই একটি গান ‘লিজেন্ডস’। স্মৃতি-জাগানিয়া কথাগুলো ধীর সুরে ব্যালেরিনি তুলে ধরেছেন তাঁর দরদ-মাখা কণ্ঠে। তাই যুক্তরাষ্ট্রের বাইরেও এখন তিনি একজন উঠতি তারকা।
জে-জেড-এর ‘স্টোরি অব ও. জে.’
৯. জে-জেড, ‘স্টোরি অব ও. জে.’
জে-জেড এর খ্যাতি রয়েছে সর্বকালের অন্যতম সেরা সংগীতশিল্পী হিসেবে। একুশ বার গ্র্যামি পুরস্কার পাওয়া এই শিল্পীর ১০ কোটি কপি গানের রেকর্ড বিক্রি হয়েছে। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সেরা ধনী হিপ-হপ শিল্পীদের মধ্যে দ্বিতীয়। অথচ, ১৯৬৯ সালে নিউইয়র্কে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীকে ১৯৯৫ সালে গাড়িতে করে পথে পথে নিজের গানের সিডি বিক্রি করতে হয়েছিলো। চলতি বছরের মাঝামাঝিতে প্রকাশিত ‘৪:৪৪’ অ্যালবামের একটি গান ‘স্টোরি অব ও. জে.’।
সেলেনা গোমেজ-এর ‘ব্যাড লায়ার’
৮. সেলেনা গোমেজ, ‘ব্যাড লায়ার’
পপ শিল্পী হিসেবে সেলেনা গোমেজ অগ্রগণ্য। সেই খ্যাতির স্বাক্ষর তিনি রাখলেন তাঁর ‘ব্যাড লায়ার’ গানটিতেও। ১৯৯২ সালে জন্ম নেওয়া সেলেনা শিশুশিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন গেল দশকের শুরুর দিকেই। ‘ডিজনি’ প্রজন্মের এই শিল্পীর মিষ্টি কণ্ঠে গাওয়া ‘ব্যাড লায়ার’ চলতি বছরের মাঝামাঝি মুক্তি পায় তাঁরই ইউটিউব চ্যানেলে। এরপর, শ্রোতা-সমালোচক সবারই কাছে প্রিয় হয়ে উঠে এই গানটি।
কার্ডি বি-র ‘বোড্যাক ইয়েলো’
৭. কার্ডি বি, ‘বোড্যাক ইয়েলো’
বলা অপেক্ষা রাখে না যে, কার্ডি বি চলতি বছরে একজন গুরুত্বপূর্ণ সংগীতশিল্পী। গত ফেব্রুয়ারিতে আটলান্টিক রেকর্ডস-এর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তিনি প্রকাশ করেন ‘বোড্যাক ইয়েলো’। এরপর, বিলবোর্ডের ১০০টি হট গানের তালিকার শীর্ষে উঠে আসে তাঁর নাম। গানটিকে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ‘দ্য রেপ অ্যান্থেম অব দ্য সামার’ তকমা দিয়েছে। গানের কথায় নারীর ক্ষমতায়ণের বিষয়টি প্রতিধ্বনিত হয়েছে।
পর্তুগাল. দ্য ম্যান-এর ফিল ইট স্টিল
৬. পর্তুগাল. দ্য ম্যান, ‘ফিল ইট স্টিল’
‘পর্তুগাল. দ্য ম্যান’ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কার একটি রক ব্যান্ড। এ বছর ‘ফিল ইট স্টিল’ গানটি সংগীতজগতে তাদেরকে জনপ্রিয়তার এক নতুন উচ্চতায় এনে দিয়েছে। আত্মপ্রত্যয়ের ভেতর দিয়ে দ্রোহের গান ‘ফিল ইট স্টিল’। একে আমেরিকার অন্যতম সেরা বিকল্পধারার গান হিসেবেও সম্মান দেওয়া হচ্ছে।
কিং ক্রুল-এর ‘বিস্কুট টাউন’
৫. কিং ক্রুল, ‘বিস্কুট টাউন’
এ বছরের সেরা প্রাপ্তির মধ্যে রয়েছে অ্যানিগমাটিক ব্রিটিশ গায়ক কিং ক্রুলের গান। ১৯৯৪ সালে লন্ডনে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর গানগুলোকে কোন নির্দিষ্ট পরিভাষায় বাঁধা যায় না। তবে বলা যায়, তাঁর গানগুলো জ্যাজ ও আরএন্ডবি ঘরনার মাঝামাঝি। গত অক্টোবরে মুক্তি পাওয়া কিং এর তৃতীয় অ্যালবাম ‘দ্য উজ’-এর একটি গান ‘বিস্কুট টাউন’। এতে রয়েছে অবিন্যস্ত জ্যাজের সুর। কিন্তু, কিং এর ভরাট কণ্ঠে তা ধরা দিয়েছে এক ভিন্ন জাদু হিসেবে। গানটিতে ‘হতাশায় ডুবে যাওয়া’-র যে বেদনা রয়েছে তা যেন ব্লুস সংগীত পরিবেশনার ক্ষেত্রে এক নতুন পথের সন্ধান দিয়েছে।
ফ্র্যাঙ্ক ওশান-এর ‘চ্যানেল’
৪. ফ্র্যাঙ্ক ওশান, ‘চ্যানেল’
১৯৮৭ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় জন্ম নেওয়া ফ্র্যাঙ্ক ওশান শুধুমাত্র একজন সংগীতশিল্পীই নন, তিনি একজন দার্শনিকও। তিনি গানের মাধ্যমে তাঁর দর্শনের বানী প্রচার করেন। ভৌতিক গল্পের লেখক হিসেবে ওশান তাঁর ক্যারিয়ার শুরু করলেও ২০১০ সালের দিকে তিনি হিপ হপ সংগীতদল ‘ওড ফিউচার’-এর সদস্য হন। ধীরে ধীরে তিনি একজন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তাঁর পিয়ানো-ভিত্তিক ‘চ্যানেল’ গানটিতে রয়েছে কথা ও সুরের চমৎকার মেলবন্ধন।
লুই ফঁসি ও ড্যাডি ইয়াংকি ‘দেসপাসিতো’
৩. লুই ফঁসি ও ড্যাডি ইয়াংকি, ‘দেসপাসিতো’
চলতি বছরে বিশ্ববাসী নেচেছে এক লাতিন গানের তালে। সেই গানটি হলো ‘দেসপাসিতো’। এটি এমন একটি ভিডিও গান যা ইউটিউবে ভিউয়ারের হিসাবে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙ্গে দেয়। গত জানুয়ারিতে ভিডিওটি ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়ার পর এটি পেয়েছে ৪০০ কোটির বেশি ভিউ। এই স্প্যানিশ গানটি তৈরি করেছেন পুয়ের্তো রিকোর দুই খ্যাতিমান শিল্পী লুই ফঁসি এবং ড্যাডি ইয়াংকি। পরে গানটি গেয়েছিলেন মিউজিক ক্রেজ জাস্টিন বিবার। স্প্যানিশ সুর ও আফ্রিকান নাচের ভঙ্গিমা মিলে এই ভিডিও গানটি হয়েছে বিশ্বসংগীতের ইতিহাসে এক অনবদ্য সৃষ্টি।
সেন্ট ভিনসেন্ট-এর ‘নিউইয়র্ক’
২. সেন্ট ভিনসেন্ট, ‘নিউইয়র্ক’
বিকল্পধারার রক সংগীতের জন্যে খ্যাতি রয়েছে সেন্ট ভিনসেন্টের। তাঁর ‘মাসএডুকেশন’ অ্যালবামের একটি গান ‘নিউইয়র্ক’। এই গানটিকে ভিনসেন্টের সেরা শিল্পকর্ম বলা যেতে পারে। গানটিতে অনেক স্পট ভাষায় অনেক শক্ত কথা বলেছেন ১৯৮২ সালে ওকলাহোমায় জন্ম নেওয়া ইন্ডি ধারার এই সংগীতশিল্পী। তাঁর অম্লমধুর সাধারণ স্মৃতিকথাটি একটি অসাধারণ শোকগাঁথা হয়ে উঠেছে পিয়ানোর প্রাণমাতানো সুরে। ‘নিউইয়র্ক’ গানটিকে শহরটির একটি সেরা রোমান্টিক গান হিসেবেও উল্লেখ করা যেতে পারে।
দুয়া লিপা-এর ‘নিউ রুলস’
১. দুয়া লিপা, ‘নিউ রুলস’
১৯৯৫ সালে লন্ডনে জন্ম নেওয়া কসোভোর আলবেনীয় বংশোদ্ভূত দুয়া লিপার সংগীত ক্যারিয়ার শুরু হয় তাঁর ১৪ বছর বয়সে। সাতটি একক গান নিয়ে তাঁর প্রথম স্টুডিও অ্যালবামটি গত জুনে প্রকাশিত হওয়ার পর এর একটি গান ‘বি দ্য ওয়ান’ যুক্তরাজ্যের সেরা একক দশটি গানের তালিকায় স্থান পায়। আর সেই অ্যালবামের ‘নিউ রুলস’ পায় দেশটির ‘নাম্বার ওয়ান সিঙ্গেল’-এর খ্যাতি। লিপার নিজস্ব স্টাইলই এনে দিয়েছে নাম-যশের সোনালী মুকুট।
Comments