কর্মক্ষেত্রে ১২৪২ জন শ্রমিক মারা গেছে ২০১৭ সালে
কর্মক্ষেত্রে মোট ১২৪২ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন ২০১৭ সালে। আহত হয়েছেন আরও ৩৭১ জন। বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশনের (ওশি) এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অনিরাপদ কর্মক্ষেত্রে হতাহতদের নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। ১৫টি সংবাদপত্র ও মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই তারা এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এটি উপস্থাপন করেন ওশি ফাউন্ডেশনের চারপারসন সাকি রেজওয়ান।
এ বছর কর্মক্ষেত্রে নিহতদের মধ্যে ২৭০ জন প্রাতিষ্ঠানিক খাতে ও ৯৭২ জন অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করতেন। সেক্টরভিত্তিক তথ্য অনুযায়ী ২০১৭ সালে পরিবহন খাতে সর্বোচ্চ ৪৮৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আর নির্মাণ খাতে মারা গেছেন ১৭৯ জন, পোশাক শিল্পে ৫২ জন, কৃষি শ্রমিক ৯৯ জন, স্টিল মিল ও রি-রোলিং মিলের ৮ জন ও ১০৩ জন দিনমজুর নিহত হয়েছেন। এছাড়াও ২২ জন গৃহকর্মী, ১৮ জন শিপব্রেকিং শিল্পে কর্মরত শ্রমিক ও ২৮ জন মৎস্যজীবী পেশাগত দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যান্য সেক্টরে নিহত ২২১ জন। গত বছর অনিরাপদ কর্মক্ষেত্রে নিহত হয়েছিলেন মোট ১২৪০ জন।
প্রতিবেদনে কর্মস্থলে হতাহতের উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে কর্মস্থলে যাওয়া আসার পথে দুর্ঘটনা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া, অগ্নিকাণ্ড, ভবন বা স্থাপনা থেকে পড়ে যাওয়, বজ্রপাত, বয়লার ও সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, গৃহশ্রমিকদের ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতন ও ধাতব বস্তুর আঘাতের কথা বলা হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নয়নে বেশ কয়েকটি সুপারিশের কথা উল্লেখ করেছে ওশি। সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে, শ্রম আইন ও শ্রম বিধিমালার আলোকে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধানের কার্যকর প্রয়োগের লক্ষ্যে নজরদারি বাড়ানো, বয়লার পরিদর্শকের সংখ্যা বৃদ্ধি করা এবং বয়লার পরিদর্শন দপ্তরকে অধিদপ্তরে রূপান্তর করা, পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য পৃথক হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের পরিবার ও আহত শ্রমিকদের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান।
ওশি ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারপারসন ড. এসএম মোর্শেদ, পরিচালক মাছুম-উল-আলম, সহকারী পরিচালক আলম হোসেন, প্রজেক্ট ম্যানেজার আরিফা আল আলম ও আহত শ্রমিকদের মধ্যে কয়েকজন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
Comments