আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা
আমরণ অনশনে থাকা নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এমপিওভুক্তির জন্য সুনির্দিষ্ট সময়সীমা চেয়েছেন তারা।
আমরণ অনশনের তৃতীয় দিনে আজ পৌনে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনকারীদের সাথে দেখা করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এমপিওভুক্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় নিজে থেকে তালিকাভুক্তির কাজ করতে পারে না। এর জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে।
আজ সকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সাথে দেখা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া শুরুর ব্যাপারে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এসময় তিনি শিক্ষকদের কাছে সময় চেয়ে ধৈর্য ধরার অনুরোধ করেন।
এর জবাবে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে আন্দোলনকারীদের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবি শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এমপিওভুক্তির দাবিতে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গত আট দিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় গত রবিবার থেকে তারা আমরণ অনশন শুরু করেন। আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ১৬ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আমরণ অনশনে নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা
বেসরকারি যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকারের দেওয়া বেতন পান সেসব প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত বলা হয়। এই পদ্ধতিতে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের মূল বেতনের ১০০ ভাগ সরকার প্রদান করে। মূল বেতন ছাড়াও নাম মাত্র পরিমাণে হলেও তারা অন্যান্য ভাতা পান।
বিদ্যমান নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে প্রথমে এমপিওভুক্ত করা হয়। এর পর সেসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের সরকারি বেতনক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
আন্দোলনকারীরা জানান, দেশে বর্তমানে নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা পাঁচ হাজার ২৪২টি। এসব প্রতিষ্ঠানে এক দশকেরও বেশি সময় থেকে বিনা বেতনে পাঠদান করছেন এমন শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার।
ছয় বছর বন্ধ থাকার পর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সর্বশেষ ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এক হাজার ৬২৪টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজকে এমপিও ভুক্ত করে। “তহবিল সংকট” দেখিয়ে তখন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে আর এমপিও ভুক্ত করা হয়নি। বাদ পড়া শিক্ষকরা তখন থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছেন।
বর্তমানে এমপিওভুক্ত উচ্চ বিদ্যালয়, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৬ হাজার ৩৪০টি। এসব প্রতিষ্ঠানে চার লাখের বেশি শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন।
Comments