শচীনের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় যুবক গ্রেফতার
“শচীন স্যার, ম্যায় আপকি লাড়কি সারাসে শাদি করনা চাহতা হুঁ। সারা সির্ফ মেরি হ্যায়।”- বাক্যটির অর্থ দাঁড়াবে “শচীন স্যার, আমি আপনার মেয়ে সারাকে বিয়ে করতে চাই। সারা শুধুই আমার।” পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বাসিন্দা বেকার এক যুবক দেবকুমার মাইতি সম্প্রতি মাস্টার ব্লাস্টার শচীন টেন্ডুলকরকে ফোন করে তার একমাত্র মেয়ে সারাকে ঠিক এভাবেই বিয়ে করার প্রস্তাব করে।
শুধু কি তাই! সারাকে ফোন করে প্রেম নিবেদন করার চেষ্টারও ত্রুটি করেনি উন্মত্ত প্রেমিক দেবকুমার। এই ভাবে একের পর এক ফোন গিয়েছে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার থানা এলাকায় শচীন টেন্ডুলকারের বাড়ির ফোনেও।
ফোনে বিরক্ত হয়ে শচীন লিখিতভাবে বান্দ্রা থানায় অভিযোগ করেন ২ জানুয়ারি। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। মোবাইলের লোকেশন টাওয়ার, নম্বর সব কিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর মাঠে নামে মুম্বাই পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় মুম্বাই পুলিশ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের সহযোগিতায় আন্দুলিয়ার নিজের বাড়িতে গ্রেফতার করে দেবকুমারকে। পরদিন রবিবার হলদিয়া আদালতে তুলে তিন দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে মুম্বাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাকে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার ডি এস এন কুমার জানিয়েছেন, মুম্বাই পুলিশ তদন্ত করে জানার চেষ্টা করছে ঠিক কার কাছ থেকে দেবকুমার শচীন টেন্ডুলকার ও তার মেয়ে সারা মোবাইল নম্বর পেলো।
দেবকুমার মানসিক ভারসাম্যহীন বলে তার পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে। ছয় ভাইবোনের সংসারে দেবকুমার তৃতীয় সন্তান। দেবকুমারের ভাই রাজকুমার মাইতি বলে, উচ্চমাধ্যমিক পাশ না করতে পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তার ভাই। এলাকায় সাইনবোর্ড লেখার কাজও করতে দেবকুমার। কিন্তু সম্প্রতি সে সারাদিন নিজের ঘরে বসে থাকতো। ঘরের দেয়াল জুড়ে শচীন আর তার মেয়ের নাম লেখা..। এমন কি ডায়রির পাতায় পাতায় প্রেমপত্র লেখা রয়েছে সারাকে নিয়ে।
ঘরের দরজা কিংবা মোটরসাইকেলের হেডলাইটে বড় হরফে সারার নাম লেখা দেখে অনেকে কৌতূহলী হয়ে দেবকুমারে সঙ্গে কথা বলতে চাইতেন। কিন্তু কারো কোনও কথার উত্তর না দিয়ে চলে যেতো দেবকুমার।
রবিবার আদালতে দাঁড়িয়ে দেবকুমার সাংবাদিকদের জানান, সারাকে মুম্বাইয়ের স্টেডিয়ামে খেলা চলার সময় একঝলক দেখেই প্রেম হয়ে যায়। এরপর সারার ফোন নম্বরের জন্য অনেক চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত তার এক পরিচিত ছেলে সারার মোবাইল নম্বর ম্যানেজ করে দেন এবং শচীন টেন্ডুলকরের মোবাইল নম্বর, বাড়ির ফোন নম্বরও পান। সব মিলিয়ে ২০-২৫ বার টেলিফোনে সারাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন বলেও স্বীকার করেন দেবকুমার মাইতি।
Comments