রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অভিনীত ‘ডাকঘর’ দেখে মুগ্ধ কলকাতা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য অনুষদের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জনপ্রিয় ‘ডাকঘর’ নাটকটি মঞ্চস্থ হলো কলকাতার আইসিসিআর (ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন) ভবনের সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে।
পাঁচদিনের নাট্য উৎসবের তৃতীয়দিন ছিল গত ১৩ জানুয়ারি। রাতের এই আয়োজনে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের অভিনয় দেখতে প্রেক্ষাগৃহে তিল ধারণেরও জায়গা ছিলো না।
ভারত সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং হেপেনিংস যৌথভাবে ‘রবীন্দ্র উৎসব-২০১৮’ শিরোনামের এই আন্তর্জাতিক নাট্য উৎসবের আয়োজন করেছে।
বাংলাদেশের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও এই নাট্য উৎসবে সার্কভুক্ত শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের নামকরা দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারাও অংশ নিয়েছেন।
আইসিসিআর-এর সত্যজিৎ রায় অডিটোরিয়ামে নাটকটি মঞ্চস্থ হওয়ার পর কথা হয় নাটকের নির্দেশক তথা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ফারুক হোসেইনের সঙ্গে।
কলকাতাকে নাটক, সিনেমা, বইপড়া তথা সাহিত্য-সংস্কৃতিমনষ্কদের শহর হিসেবে উল্লেখ করে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, “এই শহরের দর্শকরা বরাবরই বোদ্ধা। তাঁদের সাড়া পেয়ে আমি অভিভূত হয়েছি।”
এছাড়াও শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তানের মতো দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এবং শিক্ষকদের সঙ্গেও মিলনের এই সুযোগটি ছিল অনেক পাওয়া- যোগ করলেন ফারুক হোসেন।
প্রায় ৭৫ মিনিটের ‘ডাকঘর’ নাটকের অভিনয়ে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য অনুষদের অমিত রায়, আয়েশা আকতার সমাপ্তি, মহম্মদ তাসহাদুল ইসলাম তারিক, আশিষ কুমার, পিঙ্কি বিশ্বাস, রুহুল আমিন, মহম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম, মুকুল আলি এবং এস এম রউফ সঞ্জয় রক্সি। নাটকের সংগীতে ছিলেন মহম্মদ আব্দুস সালাম এবং ড. মহম্মদ আমিরুজ্জামান। এছাড়াও, আলোক বিন্যাসে ছিলেন মহম্মদ আলি জাবির, মণ্ডল মহম্মদ সাইফুল এবং কস্টিউমে ছিলেন কাজী সুষমিন আফসানা।
নাটকের অন্যতম অভিনেত্রী আয়েশা আকতার সমাপ্তি, পিঙ্কি বিশ্বাস রুহুল আমিন, মহম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম ও মুকুল আলি জানালেন, জীবনের প্রথম দেশের বাইরে তবুও বাঙালি দর্শকদের সামনে নাটকের অভিনয় করতে পেরে তাদের ভালো লেগেছে। এভাবে দুই বাংলার মধ্যে আরো বেশি নাট্য উৎসবের আয়োজন করারও দাবি জানান তাঁরা।
এদিকে, নাটক দেখে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের প্রধান ড. সোমনাথ সিনহাও মুগ্ধ হয়েছেন। বললেন, শব্দ, সংগীত এবং অভিনয়ের একটি যুগপৎ পরিবেশন দেখে খুব ভালো লাগলো।
প্রসঙ্গত, এই নাট্য উৎসবে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনায় ‘মাওলানা জালাল উদ্দিন এম বালখি’ নাটক, শ্রীলঙ্কার কল্যাণীয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য অনুষদের পড়ুয়াদের অংশ গ্রহণে নৃত্যনাট্য ‘রিদ্দি’ এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অংশ গ্রহণে ‘শারদ উৎসব’ নাটক মঞ্চস্থ হয়।
গত ১১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই উৎসব চলবে আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত।
Comments